ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী

মশারা সঙ্গীত চর্চা করছে, এ গান শুনতে চাই না

প্রকাশিত: ১০:২৪, ১ এপ্রিল ২০২০

মশারা সঙ্গীত চর্চা করছে, এ গান শুনতে চাই না

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ করোনা ভাইরাস দুর্যোগের সময় যাতে ডেঙ্গুসহ কোন মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব না হয় সেজন্য সবাইকে আগাম সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কালকে রাতে যখন ঘুমাতে গেলাম, তখন মাঝে মাঝেই দেখলাম যে, মশারা সঙ্গীত চর্চা করছে, মশার গান শুনলাম। মশার গান শুনতে চাই না। কারণ করোনার সময় যদি আবার মশা যোগ হয় বা ডেঙ্গু আসে, সেটা আমাদের জন্য আরও মারাত্মক হয়ে যাবে। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারী বাসভবন গণভবন থেকে ডিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ সারাদেশের মাঠ পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি ও সরকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময়কালে শেখ হাসিনা এমন নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে সংযুক্ত হন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে বিভাগীয় কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। তিনি সঞ্চালনার শুরুতে ঢাকা বিভাগে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় কি কি করণীয় কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে তা প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে উপস্থিত স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলামকেও ডেঙ্গু প্রসঙ্গে আগাম প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দেন। ঢাকা উত্তরের পুনর্নির্বাচিত মেয়র আতিকুল ইসলামের বক্তব্য শেষ হলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে মেয়র সাহেব আছে, আমি সেকারণে বলছি। সেটা হলো- কাল রাতে ঘুমাতে গেলাম, তখন মাঝে মাঝেই দেখলাম যে, মশারা সঙ্গীত চর্চা করছে। মশার গান শুনলাম। মানে গুনগুন করে কানের কাছে গান গাচ্ছিল। অর্থাৎ এই যে মশার প্রাদুর্ভাবটা কিন্তু আস্তে আস্তে শুরু হবে। তারপরে আসবে ডেঙ্গু। এই ব্যাপারেও কিন্তু আমাদের এখন থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। সেদিকে আমি মনে করি, আমাদের প্রত্যেকে, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা তো আছেনই- সেই সঙ্গে যারা এর সঙ্গে জড়িত সকলকেই আমি বলব, এই মশার হাত থেকে আমার দেশের মানুষকে বাঁচানোর জন্য এখন থেকেই যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।’ দেশবাসীকে মশারি টাঙ্গিয়ে ঘুমানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অনেকেই এখন মশারি ব্যবহার করে না। শুধু মশার ওষুধ দেয় বা কয়েল জ্বালায়। মশার ওষুধ ছিটায়। আসলে সেটাও তো নিশ্বাস-প্রশ্বাসে যায়। সেই জন্য প্রত্যেকে যেন মশারি টাঙ্গিয়ে নিজেদের সুরক্ষিত করেন, সেইভাবে চলবেন। কারণ করোনার সঙ্গে যদি আবার মশা যোগ হয় বা ডেঙ্গু আসে, সেটা আমাদের জন্য আরও মারাত্মক হয়ে যাবে।’ মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব যেন না হয় সেই জন্য সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে একান্তভাবে নজর দেয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘শুধু নিজের বাড়িঘর না, যে যে এলাকায় বাস করছেন, রাস্তাঘাট আশপাশে কোথাও যেন পানি বা জলাবদ্ধতা না থাকে, মশার প্রজনন ক্ষেত্র যেন না থাকে, মশা ডিম পাড়ার সুযোগ যেন না পায়, সেদিকটা বিশেষ করে সকলেও দৃষ্টি দেয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’ ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে ভিডিও কনফারেন্সিং শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সংযুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে শুরুতে বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, এবারও বাম্পার চাল উৎপাদন হচ্ছে। দুর্যোগকালীন সময়ে কোন খাদ্যর অভাব হবে না। এরপর স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে বলতে হবে কেন? মশা মারতে হবে। আমি মশার গান শুনতে চাই না।’
×