ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নগরজুড়ে নানামুখী সেবা

প্রকাশিত: ১০:২৮, ৩০ মার্চ ২০২০

  নগরজুড়ে নানামুখী সেবা

রাজন ভট্টাচার্য ॥ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নগরজুড়ে চলছে নানামুখী সেবা কার্যক্রম। সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই জনস্বার্থে সেবার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ছাড়াও সেনাবাহিনী, পুলিশ, সিটি কর্পোরেশন, নিত্যানন্দ ফাউন্ডেশন, খেলাঘর, উদীচী, ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে দিনভর জনসচেতনতা বাড়াতে পাড়া মহল্লায় মাইকিংসহ নিরাপত্তা সামগ্রী, খাবার বিতরণ করতে দেখা গেছে। এদিকে গণপরিবহন বন্ধের চতুর্থ দিনেও রাজধানী সুনসান নীরব। তবে আগের চেয়ে বেড়েছে ব্যক্তিগত কিছু গাড়ি। যাদের নিতান্তই প্রয়োজন তারা গাড়ি করে বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছেন। কিছু মোটরসাইকেল চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে রিক্সা সবচেয়ে বেশি। কোন যানবাহন না পেয়ে অনেকে হেঁটে চলতে দেখা গেছে। সুযোগে রিক্সা ভাড়া হয়েছে দ্বিগুণ-তিনগুণ। তবে কোন সড়কে যানজট নেই, নেই কোলাহল ও দূষণ। বন্ধ সাধারণ সব রকমের দোকানপাট। সীমিত পরিসরে কাঁচাবাজার, ওষুধ ও নিত্যপণ্যের দোকান খোলা থাকতে দেখা গেছে। জনসচেতনতায় মাইকিং ॥ ‘প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হবেন না। যারা বিদেশ থেকে এসেছেন তারা অবশ্যই ১৪ দিন ঘরে থাকুন। এতে আপনি ও আপনার পরিবারের প্রত্যেকের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। বিশেষ প্রয়োজনে বের হলে নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহার করুন। বার বার হাত ধুয়ে নিতে হবে। অন্তত ২০ সেকেন্ড সামান দিয়ে ভাল করে হাত ধোয়ার বিকল্প নেই। ভয় নয়, করোনা রোধে প্রতিকারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। এজন্য কারও সর্দি, কাশি বা জ্বর দেখা দিয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। হাত- মুখে ও নাকে লাগাবেন না। ঘরবাড়িসহ আপনার আশপাশ পরিষ্কার রাখুন। নিজে নিরাপদ থাকুন, অন্যকে নিরাপদ থাকতে সহযোগিতা করুন। জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু-জয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।’ রবিবার সকাল থেকে রাজধানীর মৌচাক, মালিবাগ, মগবাজার, তেজগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে করোনা রোধে জনসচেতনতা বাড়তে এভাবেই পাড়া মহল্লায় মাইকিং করতে দেখা গেছে। অটোরিক্সা করে দিনভর জনসচেতনতামূলক এ কার্যক্রম চালানো হয়। মাইকিং করা ব্যক্তি আশরাফুল খালেদ জানালেন, দলের নির্দেশে এসব প্রচার করতে বলা হয়েছে। এতে মানুষ আরও বেশি সচেতন হবে। আমরা সকলে মিলে করোনা রোধ করতে পারব। তিনি মানুষের স্বার্থে সকল রাজনৈতিক দলকে এভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। এদিকে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে শ্যামপুর, কদমতলীসহ আশপাশের এলাকায় খাদ্য সামগ্রীসহ করোনাভাইরাস রোধে বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করেছেন স্থানীয় এমপি ও জাপা কো-চেয়ারম্যান আবু হোসেন বাবলা। মানবতার সেবায় সেনাবাহিনী ॥ করোনাভাইরাস রোধে রাজধানীজুড়ে চলছে সেনা টহল। নাগরিক নিরাপত্তায় নানা রকম নির্দেশনা লেখা রয়েছে প্রতিটি গাড়িতে ঝোলানো ব্যানারে। যেখানে বেশি মানুষের জটলা দেখা যায় সেখানে সবাইকে বাসায় ফেরার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। আবার যাদের মুখে মাস্ক নেই তাদের মাস্ক ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে। হ্যান্ড মাইকে সবাইকে বিনা কারণে বাসা থেকে বের না হওয়ার অনুরোধও জানাতে দেখা গেছে সেনা সদস্যদের। পুরনো ঢাকার রায়সাহেব বাজারসহ আশপাশের এলাকায় সেনা সদস্যদের পঙ্গু ও অন্ধ মানুষদের কোলে করে রাস্তা পারাপার করে দিতে দেখা গেছে। রাস্তায় সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হেক্সিসল। সাধারণ মানুষকে করোনা রোধে এসব ব্যবহারও শেখাতে দেখা গেছে সেনা সদস্যদের। নিরাপদ দূরত্ব ছাড়াই পণ্য বিক্রিতে টিসিবি ॥ কোন রকম নিরাপদ দূরত্ব বজায় না রেখেই রাজধানীজুড়ে চলছে টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম। রবিবার রাজধানীর মৌচাক, কমলাপুর, মতিঝিল, প্রেসক্লাব, বনানীসহ বিভিন্ন এলাকায় টিসিবির ট্রাক সেল দেখা গেছে। সেখানে স্বাভাবিক লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন লোকজন। করোনা সচেতনতায় নিরাপদ দূরত্বের বালাই দেখা যায়নি। তাছাড়া টিসিবি সংশ্লিষ্টদের থেকেও গা ঘেঁষে না দাঁড়ানোর জন্য কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি ক্রেতাদের। টিসিবি জানিয়েছে, ঢাকায় তাদের ভ্রাম্যমাণ ট্রাক ৫০টি। ঢাকার বাইরে রয়েছে আরও ৩০০টি। তারা প্রতি কেজি চিনি বিক্রি করছে ৫০ টাকা দরে। মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৫০ টাকায়। এছাড়া সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ৮০ টাকা ও পেঁয়াজ ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে সংস্থাটি। জানতে চাইলে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির বলেন, মানুষ যাতে সমাগম করে পণ্য সংগ্রহ না করে সে জন্য তিন ফুট দূরত্বে বৃত্ত করে দেয়া হচ্ছে। এতে স্থানীয় প্রশাসন সহায়তা করছে। আর ঢাকায় পরিবেশকদের বলে দেয়া হয়েছে যে, তারা যেন ক্রেতাদের লাইনে দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করে। এদিকে ঢাকায় বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ শুরু করেছে টিসিবি। মুখপাত্র হুমায়ুন কবির বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক লাখ মাস্ক দেয়ার কথা জানিয়েছে। আমরা আজ তিন হাজার দিয়ে শুরু করেছি। কাল বা পরশু ঢাকার বাইরে মাস্ক বিতরণ শুরু হবে। মানবতার সেবায় গুলশান পুলিশের কার্যক্রম ॥ এদিকে গুলশান বিভাগের ছয় থানায় অসহায় দুস্থদের মধ্যে খাবার ও পানি বিতরণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার বিভিন্ন অলি-গলিতে দিনভর চলে পুলিশের মানবসেবামূলক কার্যক্রম। মূলত পথচারী ও সাধারণ মানুষ এই সহযোগিতা পান। এছাড়া গুলশান ও ভাটারা এলাকায় ওয়াটার ক্যানন দিয়ে জীবাণুনাশক পানি ছিটানো হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। পিকআপ ভ্যানে করে রাস্তায় রাস্তায় জীবাণুনাশক পানি স্প্রে করা হয়। পুলিশের পাশাপাশি বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের কর্মীরাও এ কাজ করতে দেখা গেছে। পুলিশ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সেনাবাহিনী ও র‌্যাব সদস্যদের সমন্বয়ে কনভয় প্যাট্রল টিম পুরো এলাকায় তদারকি করতে দেখা গেছে। পুলিশের গুলশান জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে বিদেশ থেকে আগতদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা নিশ্চিত করা হচ্ছে। বিভিন্ন ফার্মেসি, নিত্যপণ্যের দোকান ও সুপারশপসমূহে বাধ্যতামূলক সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি বিনা প্রয়োজনে অযথা বাইরে চলাচল নিরুৎসাহিতকরণ, করোনা সংক্রমণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্তে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে প্রতিদিন। গুলশান, বনানী, বারিধারা, নিকেতন, নিকুঞ্জ সোসাইটিকে করোনা প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্বুদ্ধকরণের চেষ্টা করা হচ্ছে গুলশান পুলিশের পক্ষ থেকে। পুলিশ দেখে দৌড়ে এলো বস্তির মানুষ ॥ এদিকে খিলগাঁও থানা পুলিশের পক্ষ থেকে বস্তি, পথচারীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করতে দেখা গেছে। সকাল থেকে সংশ্লিষ্ট থানা এলাকার বিভিন্ন অলি-গলিতে এ কার্যক্রম চলে। দুপুরে খিলগাঁও কমিউিনিটি সেন্টার ঘেঁষে থাকা ফুটপাথে বসবাসকারীদের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করা হয়। এখানে প্রায় দুই শ’ ঘর। প্রায় হাজারো মানুষের বসতি। সাধারণত পুলিশ আসে অপরাধীর খোঁজে বা বস্তি উচ্ছেদ করতে। কিন্তু রবিবার খিলগাঁও বস্তির মানুষের সামনে পুলিশ একটু অন্যরকমভাবেই হাজির হয়েছিল। মানবতার সেবায় ব্রত হয়ে ও করোনা রোধে সাধারণ মানুষের পাশে থাকার হাত বাড়িয়ে দেয়া হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। তাই পুলিশ দেখে কাউকে পালাতে দেখা যায়নি। উল্টো চিত্র দেখা গেছে এখানে। অর্থাৎ বিতরণ কার্যক্রম দেখে সবাই পুলিশের দিকে দৌড়ে আসছিলেন। ব্যাংকে বিল দিতে এত লাইন কেন ॥ নোভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে আগামী মে মাস পর্যন্ত গ্যাসের বিল এবং এপ্রিল পর্যন্ত বিদ্যুতের বিল দেরিতে পরিশোধ করা হলেও বিলম্ব জরিমানা দিতে হবে না গ্রাহকদের। এক সপ্তাহ আগে সরকারের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং বিদ্যুত বিভাগ পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। জ্বালানি বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আবাসিক গ্যাস বিল নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে পরিশোধের জন্য বিপুল সংখ্যক গ্রাহককে একইসঙ্গে বিভিন্ন ব্যাংকে যেতে হয়। এটি করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই আবাসিক গ্যাস বিল পরিশোধের নির্ধারিত সময়সীমা শিথিল করা হয়েছে। আবাসিক গ্রাহকরা কোন ধরনের সারচার্জ বা বিলম্ব মাসুল ছাড়া গত ফেব্রুয়ারি থেকে আগামী মে মাসের গ্যাস বিল জুন মাসের সুবিধাজনক সময়ে পরিশোধ করতে পারবেন। কিন্তু রবিবার ব্যাংক খোলার দিনে দেখা গেছে বিদ্যুত ও গ্যাস বিল পরিবেশোধে নগরীর বিভিন্ন এলাকার ব্যাংকের শাখায় মানুষের দীর্ঘ লাইন। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শাখার পক্ষ থেকে গ্রাহকদের এ ব্যাপারে কোন কিছু বলা হয়নি। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে বিল পরিশোধের চিত্র দেখা গেছে বনানী, গুলশান, মহাখালীসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যাংকগুলোয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরকম চিত্র করোনা সংক্রমণ বাড়াতে পারে। তাই ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে সরকারী ঘোষণা অনুযায়ী বিল জমা না দেয়ার সার্কুলার দেয়া উচিত। সেই সঙ্গে প্রি-পেইড মিটারে যদি টাকা শেষ হয়ে যায় তাহলে বিদ্যুত বিভাগের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সেবা চালু রাখার ঘোষণা দেয়ার দাবি জানিয়েছেন অনেকেই। পরবর্তীতে রিচার্জ শেষে বকেয়া টাকা সমন্বয় করার পরামর্শ দিয়েছেন অনেকেই। সুরক্ষা নেই পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের ॥ করোনা সংক্রমণের চরম ঝুঁকিতে রয়েছে রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। সিটি কর্পোরেশন থেকেও যেটুকু ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) দেয়া হয়েছে, তাও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তারপরও বেশিরভাগ কর্মী সে সব ব্যবহার করছেন না। অনেকে পিপিই বিক্রি করে দিয়েছেন। এ অবস্থায় পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় নিয়মিত স্কেলভুক্ত ১ হাজার ৭শ’ ও দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে ৫ হাজার ৩শ’সহ মোট ৮ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাজ করছেন। আর উত্তর সিটিতে নিয়মিত স্কেলভুক্ত ২ হাজার ৭শ’ ও প্রাইভেট কোম্পানির ১ হাজার ৩শ’ কর্মী কাজ করছেন। সব মিলিয়ে দুই সিটিতে প্রায় ১২ হাজারের মতো পরিচ্ছন্নতা কর্মী কাজ করছেন। এদের মধ্যে সিটি কর্পোরেশনের নিয়োজিত কর্মীদের জন্য মাস্ক, বুট ও হ্যান্ড গ্লাভস দেয়া হয়েছে। তবে প্রাইভেট কোম্পানির কর্মীদের এখনও তা দেয়া হয়নি। দক্ষিণ সিটির মালিবাগ, খিলগাঁও, ইস্কাটন, রাজারবাগ এলাকায় কোন ধরনের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম ছাড়া কাজ করতে দেখা গেছে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের। সিটি কর্পোরেশনের কর্মী জামালউদ্দিন বলেন, আমরা হ্যান্ড গ্লাভস, মাস্ক ও বুট পেয়েছি। কিন্তু এগুলো পরে কাজ করতে কষ্ট হয়। তাই খুলে রেখেছি। জানতে চাইলে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি বিষয়ক সহকারী অধ্যাপক ডাঃ জাহিদুর রহমান খান বলেন, সিটি কর্পোরেশনের যেসব ময়লা আবর্জনা হয় সেগুলোর মধ্যে এই ভাইরাস খুব একটা ছড়ানোর ঝুঁকি না থাকলেও কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে অবশ্যই পিপিই পরা উচিত। তাছাড়া তাদের যেহেতু মাঠে থাকতে হচ্ছে, সে কারণে এই জিনিসপত্রের ব্যবহার কঠোরভাবে নিশ্চিত করা আবশ্যক। এ প্রসঙ্গে দক্ষিণ সিটির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বলেন, আমাদের সব কর্মীর জন্য হ্যান্ড গ্লাভস, বুট ও মাস্ক দেয়া হয়েছে। এছাড়া আমাদের নিজস্ব পোশাক বা ড্রেস দেয়া হয়েছে। আমরা আরও কিছু উন্নত পিপিই কেনার উদ্যোগ নিয়েছি। কর্মীদের অনেকেই সচেতন নয়। তাদের সচেতন করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। উত্তর সিটির অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এস এম শফিকুর রহমান বলেন, কর্পোরেশন থেকে বরাদ্দ পাওয়ার আগেই আমরা ৪০ শতাংশ পিপিই কর্মীদের দিয়েছি। বর্তমানে আমাদের কর্মীদের জন্য শতভাগ সেফটি নিশ্চত করা হয়েছে। এক টেবিলে এক/এক চেয়ারে একজন ॥ করোনাভাইরাস আতঙ্কে রাজধানীর কার্যত শতভাগ হোটেল ও রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে গেছে। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সীমিত পর্যায়ে হোটেল খোলা রাখা যাবে। যে কেউ হোটেল থেকে খাবার সংগ্রহ করতে পারবেন। এমন ঘোষণায় নগরবাসীর কথা চিন্তা করে দু’একটি হোটেল খুলতে শুরু করেছে। তবে ক্রেতা সঙ্কটের কারণে অনেকে তা চালু করতে চাচ্ছেন না। কোন কোন হোটেল রেস্টুরেন্টে আছে কর্মী সঙ্কট। প্রশ্ন হলো খাবারের দোকানে করোনা নিরাপত্তা নিয়ে। অনেক সময় দেখা যায় এক টেবিলে চার থেকে ছয়জন পর্যন্ত বাসার ব্যবস্থা থাকে। এতে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে। তাই গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশের উদ্যোগে রেস্টুরেন্ট ও হোটেলগুলোয় বিশেষ ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকার রেস্টুরেন্টগুলো বাধ্যতামূলক সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে সৃজনশীল ও বিজ্ঞানসম্মত পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। চালু করা হয়েছে ‘এক টেবিলে একজন, এক চেয়ারে একজন’ কার্যক্রম। এতে করোনা সংক্রমণের কোন ভয় থাকে না বলছে পুলিশ। খাদ্য সহায়তায় সিটি কর্পোরেশন ॥ রাজধানীর টোলারবাগে প্রায় পরিবারের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। লকডাউনে থাকা প্রায় ৪শ’ পরিবারসহ আশপাশের দুস্থ, অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষদের এই খাদ্য সামগ্রী দেয়া হয়। ডিএনসিসির নবনির্বাচিত মেয়র আতিকুল ইসলাম উপস্থিত থেকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেন। এ সময় তার সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত মেয়র জামাল মোস্তফাসহ ডিএনসিসির উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রতি পরিবারে ৬শ’ টাকা হিসেবে ৫ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি পেঁয়াজ, ২ কেজি আলু এবং ১ লিটার করে তেল দেয়া হয়। টোলারবাগে লকডাউনে থাকা প্রায় ৪শ’ পরিবার ও টোলারবাগসহ আশপাশের এলাকার দুস্থ, ছিন্নমূল এবং আর্থিকভাবে অসচ্ছল মানুষদের এসব খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয় বলে জানান ভারপ্রাপ্ত মেয়র। আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা আমাদের ৫৪টি ওয়ার্ডেই এ ধরনের খাদ্য সামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছি। তবে টোলারবাগ এলাকায় করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে এলাকাটি লকডাউন আছে। কাজেই এটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আজ থেকে এ কার্যক্রম শুরু করলাম।
×