ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরে ১৯ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ২৮ কোটি টাকা

প্রকাশিত: ০১:১১, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরে ১৯ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ২৮ কোটি টাকা

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট ॥ জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরটি ৪র্থ দেশীয় স্থলবন্দর। স্থলবন্দরটি বর্তমানে একটি পণ্যে পাথরে আমদানির ওপর নির্ভরশীল স্থলবন্দরে পরিনিত হয়েছে। একসময় এই বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ, ভারতে ভূটান ও নেপালে পণ্য আমদানি-রফতানি হত। বর্তমানে স্থলবন্দরটি দিয়ে ভারতে সামান্য কিছু গামেন্টর্স গুডস ও ঝুঁটজাতীয় পন্য ফরতানি হয়। এছাড়া এই স্থলবন্দর দিয়ে এখন শুধুমাত্র ভারত ও ভুটান হতে পাথর আমদানি হয়ে থাকে। স্থলবন্দরটি এখন পাথর আমদানির বন্দরে রুপান্তরিত হয়েছে। এতে করে দেখা দিয়েছে রাজস্ব ঘাটতি। ৪র্থ দেশীয় বুড়িমারী স্থলবন্দরটিতে ব্যহত হচ্ছে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম। গত ১৯ মাসে এই বুড়িমারী স্থলবন্দরে রাজস্ব ঘাটতি দেখা দিয়েছে প্রায় ২৮ কোটি টাকা। বুড়িমারী স্থলবন্দরটি ব্যয় সংকুলানে ক্ষতির মুখে পড়েছে। বুড়িমারী মহাসড়কটি প্রসস্থ কম হওয়ায় সড়ক দুর্ঘটনা নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহাসড়কটি যেন মৃত্যুপুরিতে পরিণিত হয়েছে। বুড়িমারী স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত জানান, একটি স্থলবন্দর নির্মাণ করতে যে পরিমাণ জায়গা দরকার বুড়িমারী স্থলবন্দরে সেই পরিমাণ জায়গা নেই। বুড়িমারী স্থলবন্দরের জায়গা সংকট রয়েছে। বুড়িমারী স্থলবন্দরটি অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে উঠেছে। বুড়িমারী স্থলবন্দরটিকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তুলতে হবে। বুড়িমারী স্থলবন্দরের উন্নয়নে নিতে হবে খুবদ্রুত যুগোপযোগী পদক্ষেপ। আধুনিক প্রসস্থ সড়ক নির্মাণ, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত ও দ্রুত গতির ইন্টারনেট সেবা সার্ভিস প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। যাতে বুড়িমারী স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী, কাষ্টমস্ ও স্থলবন্দরকতৃপক্ষ দ্রুততার সাথে স্থলবন্দরের কাজ করতে পারে। বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর যুগ। ব্যবসা বাণিজ্যে যে হারে আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে। সেই হিসেবে বুড়িমারী স্থলবন্দরে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ঘটেনি। যার ফলে ব্যবসায়ীরা সুষ্ঠুভাবে ব্যবসা করতে পারছেন না। তাই বর্তমানে পাথর ছাড়া অন্য কোনো পণ্য বুড়িমারী স্থলবন্দরে প্রবেশ করছে না। বুড়িমারী স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ মাহমুদ জানান, নিরাপত্তা এবং পাসপোর্ট যাত্রীদের ইমিগ্রেশন সুবিধার্থে পৃথক অফিসের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছি। পার্সপোটধারী যাত্রীদের নিরাপত্তায় ও পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রয়োজন যাহা বুড়িমারী স্থলবন্দরে নেই। বুড়িমারী স্থলবন্দরের সহকারী কমিশনার সুমেন কান্তি চাকমা জানান, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ৮০ শতাংশ পাথর আসে ভুটান থেকে। ভুটান ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনত যুদ্ধে বাংলাদেশকে সর্বপ্রথম স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাই ভুটানের প্রতি বাংলাদেশের জনগণ কৃতজ্ঞা স্বরুপ ভুটানের পণ্য আমদানিতে ডিউটি ফ্রি করে দিয়েছে। তাই ভুটান হতে আমদানি হয়ে আসা পাথরের কোনো ডিউটি নেই। ২০ শতাংশ পাথর আসে ভারত থেকে। এই ২০ শতাংশ পাথরের ডিউটি এই বুড়িমারী স্থলবন্দরের রাজস্ব আয়ের উৎস। বর্তমানে এই বুড়িমারী স্থলবন্দরে পাথর ছাড়া অন্য কোনো পণ্য আমদানি হচ্ছে না। তাই রাজস্ব আদায় কমেছে।
×