ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিরোপা জিততে স্বাগতিক বাংলাদেশের চাই ড্র

প্রকাশিত: ০৭:১০, ১৯ অক্টোবর ২০১৯

শিরোপা জিততে স্বাগতিক বাংলাদেশের চাই ড্র

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফুটবল-শক্তির নিরিখে ইউরোপের চেয়ে যোজন যোজন ব্যবধানে পিছিয়ে এশিয়া মহাদেশের দেশগুলো। বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত শক্তি হচ্ছে ইউরোপ। কারণ তারাই সবচেয়ে বেশিবার (১৯ বারের মধ্যে ১০ বার, বাকি ৯ বার লাতিন আমেরিকা) ফিফা বিশ^কাপের শিরোপা জিতেছে। সেক্ষেত্রে বিশ^ ফুটবলে সবচেয়ে দুর্বল শক্তি হচ্ছে এশিয়া। সঙ্গত কারণেই তাদের সঙ্গে ইউরোপের শক্তির ফারাকটা অনেক বেশি। তবে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার প্রত্যাশা-এই ব্যবধানটা যেন ক্রমশ কমে আসে এবং প্রতিটি মহাদেশই যেন ফুটবলে সমশক্তির হয়, তাহলে নিঃসন্দেহে খেলাটি হবে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। তবে একমাত্র ফিফা বিশ^কাপ এবং কনফেডারেশন্স কাপ ছাড়া নিয়মের কারণে অন্যান্য বৈশ্বিক ফুটবল টুর্নামেন্টে ইউরোপের সঙ্গে এশিয়ার দেশগুলোর খেলা হয় না। এটারও বিকল্প বের করেছে ফিফা। সিনিয়র পর্যায়ে না হলেও জুনিয়র বা বয়সভিত্তিক পর্যায়ে তারা একটা সমাধান বের করেছে। সেটা হচ্ছে উয়েফার অর্থায়নে অনুর্ধ-১৬ বালক টুর্নামেন্ট (আয়োজনে এএফসি)। টুর্নামেন্টের নিয়ম হচ্ছে প্রতিবছরই ভিন্ন ভিন্ন দেশে চারটি দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে আসরটি। তিনটি দল থাকবে এশিয়ার, বাকি দলটি হবে ইউরোপের। ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হয় এই আসর। এবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে দ্বিতীয় আসর। প্রথম আসরে না পারলেও এবার দ্বিতীয় আসরে শিরোপার হাতছানি দিচ্ছে বাংলাদেশকে। কাল রবিবার টুর্নামেন্টের শেষ দিনের শেষ ম্যাচে সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হওয়া ম্যাচে মোকাবেলা করবে মালদ্বীপকে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে বাংলাদেশ ড্রম করলেই প্রথমবারের মতো কাংখিত শিরোপা অর্জন করতে পারবে। গতবারের মতো এবারও লিগ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে টুর্নামেন্টটি। সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট অর্জনকারী দল হবে চ্যাম্পিয়ন। রবিবার টুর্নামেন্টের শেষ দিন। বাংলাদেশ যদি মালদ্বীপের সঙ্গে জিতে গেলে তো কোন কথাই নেই, আর নুন্যতম যদি ড্রও করে, তাহলেও হেসেখেলেই শিরোপা জিতে যাবে। ২ ম্যাচের প্রতিটিতেই জিতে বাংলাদেশের পয়েন্ট ৬। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আছে তারা। সমান ম্যাচে ফ্যারো আইল্যান্ড ১ জয় ও ১ হারে (প্রথম ম্যাচে তারা হারিয়েছিল মালদ্বীপকে, ১০-৩ গোলে) ৩ পয়েন্ট নিয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে। অপর দুই দল মালদ্বীপ এবং কম্বোডিয়া ২ ম্যাচ খেলে ১ ড্র ও ১ হারে ১ পয়েন্ট করে পেয়েছে। গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় তিনে আছে মালদ্বীপ আর তলানিতে কম্বোডিয়া। দু’দলেরই অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে শিরোপা জেতার আশা। তবে ফ্যারো আইল্যান্ডের কিঞ্চিৎ আশা আছে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। এজন্য তাদের আজ বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠেয় ম্যাচে শুধু কম্বোডিয়াকে বড় ব্যবধানে হারালেই চলবে না, কামনা করতে হবে বাংলাদেশের হারও। বাংলাদেশের ব্রিটিশ কোচ মার্টিন রাইলস বলেন, ‘আমাদের জন্য চ্যাম্পিয়ন হওয়ার বড় সুযোগ এটি। কারণ নিজেদের মাঠ। চেনা পরিবেশ।’ অধিনায়ক জনি শিকদারের ভাষ্য, ‘আমরা কদিন আগেই কাতারে খেলে এসেছি এএফসি অ-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপে। ভালো খেলার চেষ্টা করেছি। কাতারের ভুলগুলো শুধরে নিয়ে এই টুর্নামেন্টে খেলবো। মালদ্বীপের কোচ মোহাম্মদ নিজাম অবশ্য একধাপ এগিয়ে বলেন, ‘গত বছর বাংলাদেশের সঙ্গেও আমরা খেলেছি। এবারও তাদের মুখোমুখি হবো। শিরোপা জেতার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেলেও শেষ ম্যাচে আমরা জিতে শেষ করতে চাই।’ অধিনায়ক হাসান আজোমিজ আলীর অভিমত, ‘আমরা আজ জয়ের লক্ষেই খেলতে নামবো।’ ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই আসরটি। ভেন্যু ছিল থাইল্যান্ড। তাতে অংশ নিয়েছিল মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, সাইপ্রাস এবং বাংলাদেশ। ইউরোপের দল সাইপ্রাস হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন, আর বাংলাদেশ হয়েছিল তৃতীয়। ওই প্রতিযোগিতায় থাইল্যান্ডের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। আর মালদ্বীপকে হারিয়েছিল ১০-০ গোলে। তবে সাইপ্রাসের কাছে হেরেছিল ৪-০ গোলে। এবার বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে ২-০ গোলে কম্বোডিয়াকে হারিয়ে শুভসূচনা করে। দ্বিতীয় ম্যাচে শক্তিশারী ফ্যারো আইল্যান্ডকে দুর্দান্ত খেলে হারিয়ে দেয় ৩-১ গোলে। বাংলাদেশ দলের মূল অস্ত্র হচ্ছে ১১ নম্বর জার্সিধারী ফরোয়ার্ড মইনুল ইসলাম মঈন। ২ ম্যাচে ২টি করে মোট ৪টি গোল করেছে সে। আজকের ম্যাচেও তার ওপর ভরসা করবেন কোচ রাইলস। এছাড়া কোচের নির্ভরতার সেনানী আছে আরও-ডিফেন্ডার ও অধিনায়ক জনি শিকদার, ফরোয়ার্ড পিয়াস আহমেদ নোভা (ফ্যারো আইল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১টি গোলও আছে তার), গোলরক্ষক মেহেদী হাসান এবং মিডফিল্ডার সাইফুল ইসলাম সাঈদ। প্রথম আসরে ভিন দেশে অংশ নিয়ে তৃতীয় হওয়া। এবার নিজ দেশে দ্বিতীয় আসরে অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার হাতছানি। বাংলাদেশের কিশোর ফুটবলার এবার পারবে কি?
×