ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাজনীতিক পেশাজীবীরা এলাকায় থেকে জনসেবা করুন

প্রকাশিত: ১০:২৩, ১৪ অক্টোবর ২০১৯

 রাজনীতিক পেশাজীবীরা  এলাকায় থেকে জনসেবা করুন

নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ, ১৩ অক্টোবর ॥ রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও কর্মরত ডাক্তারসহ পেশাজীবীদের হাওড়াঞ্চলে থাকার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, সপ্তাহের কয়েকদিন সংশ্লিষ্ট এলাকায় থেকে অধিকাংশ সময় জেলা শহরে গিয়ে বসবাস ও অবস্থান করেন। এমনটি কারও কাম্য নয়। যারা স্থানীয়ভাবে রাজনীতি করেন কিংবা হাওড়াঞ্চলে যাদের কর্মস্থল তাদের অবশ্যই এখানে থাকতে হবে। না হলে চাকরি ছেড়ে দেন। এ বিষয়ে তিনি কাউকে ‘ধানাই পানাই’ না করার জন্য হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। রাষ্ট্রপতি রবিবার বিকেলে জেলার হাওড় অধ্যুষিত ইটনায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সরকারী কলেজ মাঠে সুধী সমাবেশে এসব কথা বলেন। মিঠামইন-ইটনা-অষ্টগ্রাম আসনের সংসদ সদস্য রাষ্ট্রপতির বড় ছেলে রেজওয়ান আহমেদ তৌফিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জিল্লুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও পিপি শাহ আজিজুল হক, ইটনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী কামরুল হাসান, ইটনা রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ ইসলাম উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ইসমাঈল হোসেন, সহ-সভাপতি ওমর ফারুক প্রমুখ। এ সময় রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, প্রেসসচিব মোঃ জয়নাল আবেদীন, জেলা প্রশাসক মোঃ সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মোঃ মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্পেশাল পিপি এম.এ আফজলসহ বিভিন্ন সামরিক, বেসামরিক উর্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপতি বক্তব্যে জনপ্রতিনিধিদের কোন ভাবসাব না ধরার পরামর্শ দিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, এলাকায় মারামারি-হানাহানি রোধে সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজের জন্য দলমত নির্বিশেষে সকলকে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। এ সময় রাষ্ট্রপতি বলেন, তার জীবদ্দশায় হাওড়াঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মানন্নোয়নের জন্য হাওড়ের তিন উপজেলায় রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল নির্মাণ করা হবে। তিনি হাওড়ের শিক্ষার্থীদের কঠোর মনোযোগী হয়ে পড়াশুনা করে প্রশাসন ক্যাডারে নিয়োজিত হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি ভৌগলিক অবস্থানের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, হাওড়াঞ্চলের জীব বৈচিত্র্যসহ সার্বিক পরিবেশ রক্ষায় সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। অনেকগুলো সেতুর নির্মাণ কাজসহ অলওয়েদার রাস্তার কাজ সম্পন্ন হলে ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম থেকে যে কোন জায়গায় যাতায়াত করতে পারবেন। তাছাড়া হাওড়ের প্রতিটি উপজেলার ইউনিয়নের সঙ্গে জেলা শহরের যোগাযোগ ফ্লাইওভারের মাধ্যমে করার পরিকল্পনাও রয়েছে। এ সময় তিনি কৃষকসহ হাওড়বাসীর সুবিধার জন্য সাবমার্সেবল রাস্তা করা হয়েছে। কিন্তু এসব রাস্তায় গোবর ও ধান শুকানো কাজে ব্যবহার করেন উল্লেখ করে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকার বছর বছর সাবমার্সেবল রাস্তা করে দিবে না। এ জন্য হাওড়ের রাস্তায় কোন ট্রাক্টর চলাচল করতে দেয়া হবে না। এ বিষয়ে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে তিনি হুঁশিয়ার করে দেন। এ সময় তিনি তার সুস্বাস্থ্যের জন্য উপস্থিত সকলের কাছে দোয়া চান। রাষ্ট্রপতির আগমনে ইটনা ও এর আশপাশ থেকে হাজার হাজার মানুষ তাঁর ভাষণ শুনতে সভায় যোগদান করেন। ওইদিন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বেলা পৌনে তিনটায় মিঠামইন থেকে হেলিকপ্টারযোগে ইটনা উপজেলা হেলিপ্যাডে পৌঁছেন। সেখান তাঁকে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। পরে তিনি ইটনা ডাকবাংলোয় গিয়ে গার্ড অব অনার গ্রহণ শেষে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেন। বেলা তিনটার পরে তিনি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সরকারী কলেজ মাঠে সুধী সমাবেশে যোগদান করেন। সন্ধ্যায় তিনি ইটনার রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ অডিটরিয়ামে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ওইদিন তিনি জেলা পরিষদ ডাকবাংলোতে রাতযাপন করেন। সোমবার সকালে তিনি ইটনা উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শনসহ বিকেল তিনটায় পার্শ্ববর্তী হাওড় উপজেলা অষ্টগ্রাম খেলার মাঠে আয়োজিত সুধী সমাবেশে ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে।
×