ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

নীলফামারীতে কৃষকের দাফনের পর লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৯:০১, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 নীলফামারীতে কৃষকের দাফনের পর লাশ উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ দুলাল হোসেন(৪৮) নামের এক কৃষকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ওই কৃষকের স্ত্রী ও সৎ ভাইরা ঘটনাটি স্বাভবিক মৃত্যু প্রচারনা সহ অনেক নাটকীয়তার জন্ম দেয়। তবে এলাকাবাসীর প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার বিকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তরদুরাকুটি গ্রামের দুই নম্বর ওয়ার্ডের কবিরাজপাড়ার এ ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় তোলপাড়া সৃস্টি করেছে। নিহত কৃষক ওই গ্রামের মৃত আব্দুল রশিদের ছেলে। অভিযোগে জানা যায়, নিহত কৃষক দুলাল ওই গ্রামের মৃত আব্দুল রশিদের প্রথম স্ত্রীর এক মাত্র সন্তান। রোগ ভোগে মা মারা গেলে বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে। ওই সংসারে রয়েছে তিন ছেলে। বাবার মৃত্যুর পর আবাদী জমি নিয়ে বিমাতা ভাইয়ের সঙ্গে দুলালের দ্বন্দ সৃস্টি হয়। অপর দিকে স্বামীর বিমাতা ভাইদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠে কৃষক দুলালের স্ত্রী কমলা খাতুনের। এলাকাবাসীর অভিযোগ কমলা খাতুন স্বামীকে দাপট দেখিয়ে জমির ফসল বিক্রির টাকা নিজেই কবজা করে রাখতো। সেই সঙ্গে কমলা গোপনে দাদন ব্যবসা ও অনৈতিক ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। এলাকাবাসীর অভিযোগ স্ত্রীর দাদন ব্যবসা ও অনৈতিক কর্মকান্ডকে বাধা দেয় দুলাল। এ নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে গত দুইদিন ধরে বচসা চলছিল। এমতাবস্থায় আজ বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামবাসী দেখতে পায় গ্রামের এমদাদুল ইসলামের আমবাগানের ভেতর কৃষক দুলাল হোসেনের মরদেহ পড়ে রয়েছে। এ সময় দুলালের বিমাতা তিন ভাই আব্দুল লতিফ,আব্দুল খালেক ও দুলু মিয়া ঘটনাটি নাটকীয়ভাবে ভিন্নখাতে নিয়ে গ্রামবাসীকে বলে বড়ভাই একটু অসুস্থ তাই আম বাগানে শুয়ে ঘুমাচ্ছে। এরপর তারা তাকে ঘাড়ে উঠিয়ে ছোট ভাই দুলুর নিজবাড়িতে নিয়ে আসে। গ্রামবাসী জানতে চাইলে বলা হয় ঘরের বিছানায় দুলাল ভাই ঘুমাচ্ছে। এদিকে ভেতরে ভেতরে তারা গোপনে দুলালের লাশ দাফনের চক্রান্ত করতে থাকে। দুপুর দেড়টার দিকে আরেকটি নাটকীয়তা জন্ম দিয়ে গ্রামবাসীকে বলা হয় দুলাল ভাইয়ের হার্ট এ্যার্টাক করেছে তাকে হাসপাতালে নিতে হবে। দুপুর সোয়া দুইটার দিকে উপজেলা হাসপাতালে দুলালের মরদেহ নিয়ে যায় তারা। হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক সুজাত শরীফ জানায় রোগী অনেক আগেই মারা গেছে। এরপর তারা মরদেহ গ্রামে নিয়ে এসে দাফনের আয়োজন করতে থাকে। এলাকাবাসীর প্রতিবাদে পুলিশ খবর পেয়ে এসে ঘটনাটি তদন্ত করে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়। গ্রামবাসীর অভিযোগ পুলিশ গ্রামে এলে কৃষক দুলালের স্ত্রী সহ তার বিমাতা তিন ভাই গা-ঢাকা দেয়। এলাকাবাসীর ধারনা কৃষক দুলালকে বিষ মেশানো খাদ্য খাইয়ে ওর স্ত্রী মেরে ফেলেছে। এর সঙ্গে দুলালের তিন বিমাতা ভাই জড়িত থাকতে পারে। তারা লাশ দাফনের চেস্টায় অনেক নাটক করলো। কিশোরীগঞ্জ থানার ওসি হারুন অর রশীদ জানান ঘটনাটি রহস্যজনক। মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার জেলার মর্গে লাশের ময়না তদন্ত করা হবে। ময়না তদন্তের রির্পোটের পর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে একটি অপমৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে।
×