ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

১৫টির বেশি থাকতে পারবে না

বাড়তি সিম-রিম নিষ্ক্রিয় করার সময় আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ২৩ জানুয়ারি ২০১৮

বাড়তি সিম-রিম নিষ্ক্রিয় করার সময় আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি

ফিরোজ মান্না ॥ বাড়তি সিম-রিম নিষ্ক্রিয় করার সময় আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। বিটিআরসির ঘোষণা অনুযায়ী গ্রাহকের হাতে ১৫টির বেশি মোবাইল সিম-রিম থাকতে পারবে না। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাড়তি সিম-রিম নিষ্ক্রিয় না করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিটিআরসি। বাড়তি সিম-রিম তুলে নেয়ার জন্য বিটিআরসি অপারেটরদের চিঠিও দিয়েছে। বিটিআরসি গত বছরের ডিসেম্বরে গ্রাহকের হাতে সিম বা রিম থাকতে পারবে না। তখন বলা হয়েছিল ১৫টির বেশি সিম থাকলে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিজ উদ্যোগে অপারেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করে অতিরিক্ত সিম নিষ্ক্রিয় করতে হবে। কিন্ত বিটিআরসির ওই ঘোষণা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর হয়নি। পরে বিটিআরসি দুই মাস সময় বাড়িয়ে দিয়েছে। এ যাত্রায়ও অতিরিক্ত সিম নিষ্ক্রিয় হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ এখনও অনেক সিম নিবন্ধন ছাড়াই ব্যবহার হচ্ছে। বিষয়টি টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনও (বিটিআরসি) স্বীকার করে নিয়েছে। তাই গ্রাহকদের হাত থেকে বাড়তি সিম নিষ্ক্রিয় করার বিষয়টিও কঠিন হবে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভর করছে মোবাইল অপারেটরের ওপর। তারা চাইলে বাড়তি সিম গ্রাহকদের হাত থেকে তুলে নিতে পারে। সূত্র জানিয়েছে, বিটিআরসি দেশের সব মোবাইল ফোন অপারেটরকে গত বছরের ৫ ডিসেম্বর নির্দেশ দিয়েছিল গ্রাহকদের হাত থেকে ১৫টির বেশি সিম থাকলে তা নিষ্ক্রিয় করে দেয়ার জন্য। সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল ৩১ ডিসেম্বর। কিন্ত বিটিআরসির এ নির্দেশ যথাসময়ে মোবাইল অপারেটররা পালন করেনি। পরে বিটিআরসি বাধ্য হয়ে আরও দুই মাস সময় বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি করেছে। বাড়তি সময়ের মধ্যে স্বেচ্ছায় অতিরিক্তি সিম নিষ্ক্রিয় না করলে বিটিআরসি পরে নিজেদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট অপারেটরের মাধ্যমে সেগুলোর নিবন্ধন বাতিল ও বন্ধ করে দেবে। সেক্ষেত্রে গ্রাহকের প্রয়োজনীয় সিমও বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে বিটিআরসির নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে। বিটিআরসি জানিয়েছে, গ্রাহকদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে দুই মাস সময় বৃদ্ধি করে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। গ্রাহক ওই সময়ের মধ্যে স্বেচ্ছায় অতিরিক্তি সিম নিষ্ক্রিয় না করলে কমিশন নির্ধারিত পদ্ধতির ভিত্তিতে তা বন্ধ করে দেয়া হবে। কোনো গ্রাহকের হাতে ১৫টির বেশি মোবাইল সিম বা রিম থাকলে নিজ উদ্যোগে অপারেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করে অতিরিক্ত সিম নিষ্ক্রিয় করার যে সময় দেয়া হয়েছিল তা আরও দুই মাস বাড়িয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। কোনো গ্রাহকের পাসপোর্ট, এনআইডি, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা জন্ম নিবন্ধন সনদের বিপরীতে কতটি সিম রয়েছে তা দুটি পদ্ধতিতে জানা যাবে। একটি হচ্ছে ‘স্টার ১৬০০১ হ্যাশ’ (*১৬০০১#) নম্বরে ডায়াল করলে ইউএসএসডি কোডে তার কাছে এনআইডির শেষ চার ডিজিট জানতে চাওয়া হবে। তা লিখে সেন্ড করলে ফিরতি এসএমএসে জানিয়ে দেয়া হবে তার নামে থাকা সিমের সংখ্যা কয়টি। অন্যভাবে এনআইডি নম্বরের শেষ চার ডিজিট লিখে ১৬০০১ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ওই এনআইডির বিপরীতে কয়টি সিম রয়েছে তা জানতে পারবে গ্রাহক। কর্পোরেট গ্রাহকের ক্ষেত্রে সিম সংখ্যা নির্ধারণ করে দেয়া বাস্তবসম্মত হবে না। তাই কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সিম বা রিম কেনার জন্য অনুমোদিত ব্যক্তি এ সীমার আওতামুক্ত থাকবেন। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২০ জুন গ্রাহক প্রতি সর্বোচ্চ ২০টি সিম রাখা যাবে বলে বিটিআরসি সীমা বেঁধে দিয়েছিল। তা আরও কমিয়ে গত বছরের আগস্টে সর্বোচ্চ পাঁচটি সিম রাখার অনুমতি দেয়া হয়। এরপর ওই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে গত ২৪ অক্টোবর গ্রাহক প্রতি সর্বোচ্চ ১৫টি সিম বা রিম রাখার সুযোগ দেয় বিটিআরসি। সর্বশেষ পাঠানো নোটিসে বিটিআরসি জানিয়েছে, গ্রাহকদের কাছে ১৫টির বেশি সিম থাকলে তা অবৈধ। অবৈধভাবে কেউ সিম রাখলে তা আইনগতভাবে বেআইনি। ২৮ ফেব্রুয়ারির পরে যদি কারো হাতে ১৫টির বেশি সিম পাওয়া গেলে-তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিটিআরসি। বাড়তি সিম নিষ্ক্রিয় করতে অপারেটরদের কোন গাফলতি পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
×