ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলা একাডেমিতে রোকেয়া দিবসের আলোচনা

প্রকাশিত: ০২:৪২, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭

বাংলা একাডেমিতে রোকেয়া দিবসের আলোচনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রোকেয়া দিবস উপলক্ষে বাংলা একাডেমি আয়োজিত একক বক্তৃত্বায় অধ্যাপক সোনিয়া নিশাত আমিন বলেন, রোকেয়া তার ঐতিহাসিক বস্তুবাদী এবং জ্ঞানতাত্ত্বিক নারী-ভাবনায় ইতিহাসে উপেক্ষিতা নারীকে নতুন মর্যাদা দান করেছেন। নারীর বিকাশের পথে মানসিক অধস্তনতাকে তিনি অন্যতম প্রতিবন্ধক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। রবিবার বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে রোকেয়া দিবস ২০১৭ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে তিনি ‘জ্ঞানতত্ত্ব ও নারীমুক্তি : আমাদের পথিকৃৎ (ঊনিশ ও বিশ শতক)’ শীর্ষক একক বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। অধ্যাপক পারভীন হাসানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নূরজাহান বোস, মালেকা বেগম, লিলি হক প্রমুখ। অধ্যাপক সোনিয়া নিশাত আমিন বলেন, উনিশ ও বিশ শতকে সাবিত্রী দেবী ফুলে, প-িতা রমাবাঈ, সরলা দেবী ও রোকেয়া নারীমুক্তির নানামাত্রিক বৈপ্লবিক পথরেখা নির্ধারণ করে দেখিয়েছেন পৃথিবীতে নারীর অনগ্রসরতার নেপথ্যে কাজ করে দর্শনগত দারিদ্র্য। এর ফলে আমাদের প্রচলিত সমাজ নারীপুরুষ বিভাজনের সংস্কৃতি চালু করে। রোকেয়া বাঙালি মুসলমান সমাজের পরিসরে অবস্থান করে এই বিভাজনের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক উভয় দিক থেকে লড়াই করেছেন। পারভীন হাসান বলেন, রোকেয়া তার ব্যক্তি ও সাহিত্যজীবনে ছিলেন চিন্তাশীল এবং বাস্তবানুগ। তাই রক্ষণশীল সমাজের ভেতর অবস্থান করেও সূক্ষ্ম বিচার-বিশ্লেষণ সাপেক্ষে নারীদের সামনে তাদের অবনত অবস্থা তুলে ধরেছেন এবং এই অবস্থার অবসানকল্পে শাস্ত্রের উদাহরণ দিয়েই শাস্ত্রভীরু পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রয়াস পেয়েছেন। রোকেয়ার কালজয়ী আদর্শের পথ ধরেই আমরা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য একটি মাঙ্গলিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবো। শামসুজ্জামান খান বলেন, রোকেয়া নারীপুরুষ নির্বিশেষে আমাদের সবাইকে দিয়ে গেছেন সম্মুখযাত্রার দিশা। রংপুরের প্রত্যন্ত পায়রাবন্দের রোকেয়া নারীমুক্তির যে আলোর শিখা জ্বেলে দিয়ে গেছেন তা আজও আমাদের সার্বিক মুক্তির পথে অনিঃশেষ প্রেরণা দিয়ে চলেছে।
×