ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইলের সখীপুরে এক শিক্ষকেই চলছে প্রাথমিক বিদ্যালয়

প্রকাশিত: ২৩:৩৮, ১২ নভেম্বর ২০১৭

টাঙ্গাইলের সখীপুরে এক শিক্ষকেই চলছে প্রাথমিক বিদ্যালয়

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ টাঙ্গাইলের সখীপুরে কাংগালীছেও দক্ষিণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছয়টি শ্রেণির প্রায় ৭০ শিক্ষার্থীর পাঠদান করেন মাত্র একজন শিক্ষক। বছর শেষে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়া ও অফিসিয়াল কাজ করছেন একাই। এতে চরম ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। ভেঙ্গে পড়ছে ডিজিটাল দেশ গড়ার প্রাথমিক কাঠামো। মাত্র একজন শিক্ষিকা। ক্লাস নেয়া, ক্লাস রুম ঝাড়ু দেয়া, অফিসিয়াল কাজে দৌড়া-দৌড়ি করা, ক্লাসের ঘণ্টা বাজানো, পরীক্ষা ফি আদায় ও পরীক্ষা নেয়াসহ সকল প্রকার কাজ করেন সেলিনা আক্তার নামের এই শিক্ষক। প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক এমনকি পিয়নের দায়িত্বও পালন করছেন তিনি একাই। সরেজমিনে দেখা যায়, ওই বিদ্যালয়ে মোট ৭০ জন শিক্ষার্থী। শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছয়টি শ্রেণির সবগুলো ক্লাস নেন তিনি একাই। সকাল ৯ টায় স্কুলে আসেন আর বিকেল সাড়ে চারটায় চলে যান ওই শিক্ষক। এভাবে প্রায় তিন মাস ধরে সেলিনা আক্তার ওই স্কুলের সকল দায়িত্ব পালন করে আসছেন। একাধিক অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, আগামী মাসে শুরু হবে বার্ষিক পরীক্ষা। শিক্ষকের অভাবে লেখাপড়ার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। জানা গেছে, এই স্কুলের জন্য কোন শিক্ষক নেই। দাঁড়িয়াপুর আকন্দপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ডেপুটিশনের মাধ্যমে শিক্ষক সেলিনাকে এই স্কুলে পাঠানো হয়েছে। আরো একজন শিক্ষককে ডেপুটিশনের মাধ্যমে এই স্কুলে পাঠানো হবে বলে উর্ধ্বতন কৃর্তপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনও কোন শিক্ষককে দেয়া হয়নি। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে আগামী বছর থেকে এই স্কুলে শিক্ষার্থী সংকট দেখা দিতে পারে। স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী উর্মি মন্ডল বলেন, আমাদের মাত্র একজন ম্যাডাম। তাই ভালোমতো সবগুলো ক্লাস হয় না। স্কুলের একমাত্র শিক্ষিকা সেলিনা আক্তার বলেন, আমি আসলে এই স্কুলের শিক্ষক না। ডেপুটেশনের মাধ্যমে এই স্কুলে পাঠানো হয়েছে। এখন আমার সাধ্যমতো এই স্কুলের সবগুলো ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছি। এই স্কুলে ৫ জন শিক্ষক প্রয়োজন। সখীপুর উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক এসএম নূরুল ইসলাম বলেন, এভাবে কোন স্কুল চলতে পারে না। শিক্ষা অফিসারকে বারবার তাগিদ দেয়া সত্বেও কোন লাভ হচ্ছে না। এ বিষয়ে সখীপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল হক বলেন, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। তবে কিছু দিনের মধ্যে ডেপুটেশনের মাধ্যমে ওই স্কুলে আরো একজন শিক্ষক দেয়া হবে।
×