ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মহিলা বিশ্বকাপ ক্রিকেট

ইংল্যান্ড-ভারত শিরোপা লড়াই আজ

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ২৩ জুলাই ২০১৭

ইংল্যান্ড-ভারত শিরোপা লড়াই আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঐতিহাসিক লর্ডসে মহিলা বিশ্বকাপের ফাইনাল আজ। এগারোতম আসরের শিরোপার লড়াইয়ে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ শক্তিধর ভারত। প্রথম সেমিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২ উইকেটের নাটকীয় জয়ে ফাইনালে উঠে আসে ফেবারিট ইংলিশ মেয়েরা। আর হারমানপ্রিত কাউরের (১৭১*) রেকর্ডগড়া সেঞ্চুরির সৌজন্যে দ্বিতীয় সেমিতে ‘ডিফেন্ডিং’ চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দিয়ে চূড়ান্ত লড়াইয়ের মঞ্চে নাম লেখায় ভারত। গত দশ আসরের ৬ বারের চ্যাম্পিয়ন অসিদের বিপক্ষে ১৮৬ রানের বিশাল জয় মিতালি রাজদের বাড়তি আত্মবিশ্বাস যোগাবে। ২০০৫ বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেছিল ভারত, সেটিই তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য। অন্যদিকে অসিদের পর দ্বিতীয় সর্বাধিক তিনবারের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের মেয়েরা। তার ওপর ঘরের মাটিতে খেলা, হিথার নাইটের দলও তাই পিছিয়ে থাকবে না। মেয়েদের ওয়ানডে (৫০ ওভারের) বিশ্বকাপে জয়ের পাল্লাটা ইংলিশদেরই ভারি। বিশ্ব ইভেন্টে এ পর্যন্ত ছয়বার মোকাবেলা করে ভারতকে চার বারই হারিয়েছে ইংল্যান্ড। তবে অত্যন্ত চাপের মধ্যেও ভারতীয় দলের ফল বের করে আনার সক্ষমতাটা অন্তত ইংলিশদের জানা আছে। কেননা এই ভারতের কাছে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে ৩৫ রানে হেরে গিয়েছিল স্বাগতিকরা। ওই পরাজয়ের পর টানা সাত ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড। হেথার নাইট এবং ওপেনার ট্যামি বিউমন্ট টপঅর্ডারে ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন। টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত দু’জনে মিলে মোট ৭৫০ রান করেছেন। চার নম্বরে খেলা নাটালি শিভার একমাত্র ব্যাটার যিনি বিশ্বকাপে রেকর্ড দুটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। পক্ষান্তরে মিতালি রাজের নেতৃত্বাধীন ভারত প্রথমবার শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছে, তাদেরও রয়েছে শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন। মিডল ওভারে ভারতীয় সাফল্যে মূল ভূমিকা রাখছেন অফস্পিনার দিপ্তি শর্মা। নিজের প্রথম বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত তিনি শিকার করেছেন ১২ উইকেট। শর্মাকে যথাযথ সহায়তা দেবেন লেগস্পিনার পুনম যাদব এবং বাঁহাতি স্পিনার একতা বিশট। টুর্নামেন্টের শুরুতে পাকিস্তানের বিপক্ষে যিনি ৫ উইকেট শিকার করেন। বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অধিনাযক রাজ ও ফাস্ট বোলার ঝুলন গোস্বামী রয়েছেন দলে। সর্বশেষ ২০০৫ সালে ফাইনালে উঠলেও অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরাজিত হয়ে শিরোপা স্পর্শ করা সম্ভব হয়নি ভারতীয় মেয়েদের। ওই বিশ্বকাপে ছিলেন ঝুলন আর মিতালি। ‘মনে হচ্ছে আমরা যেন ২০০৫ আসরে ফিরে এসেছি এবং আমি অত্যন্ত খুশি যে, মেয়েরা পুনরায় আমাদের ফাইনালের অংশ হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। পুরো টুর্নামেন্টেই তারা সবাই খুব ভাল খেলেছে। স্বাগতিকদের বিপক্ষে খেলাটা একটা চ্যালেঞ্জ। তবে বলতেই হচ্ছে বর্তমান দলটি এ জন্য প্রস্তুত। আমাদের কয়েকজনের জন্য এটা হয়তো শেষ বিশ্বকাপ। গোটা দলই সেটি স্মরণীয় করে রাখতে চায়।’ ৩৪ বছর পর গ্রেট কপিল দেবের লর্ডসে তেরঙা পতাকা ওড়ানোর অপেক্ষায় ‘উইমেন ইনি ব্লু’। নতুন ইতিহাস গড়ার সুযোগ মিতালি এ্যান্ড কোং-এর সামনে। যেমনটা গড়েছিলেন কপিল। এই লর্ডসেই ১৯৮৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ভারতকে প্রথম বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন তিনি। মিতালিকে বলা হয় মহিলা ক্রিকেটের শচীন টেন্ডুলকর। ওয়ানডেতে সর্বাধিক রানের রেকর্ড তার দখলে, ঝুলনের রেকর্ড সর্বাধিক উইকেটের। ২০০৫ সালে খুব কাছাকাছি পৌঁছেও বিশ্বকাপ ছোঁয়া হয়নি। ২০০৭ সালে আইসিসি’র বর্ষসেরা মহিলা ক্রিকেটার হয়েছেন। সদ্য একদিনের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির পালকও জুটেছে তার মুকুটে। হয়তো এটা তার শেষ বিশ্বকাপ। তা পেলেই ষোলোকলা পূর্ণ হয়। উল্টো পক্ষও প্রস্তুত। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ পুনরুদ্ধারে বদ্ধপরিকর ইংল্যান্ড। চেনা পরিবেশে গ্যালারি ভর্তি সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে ঘুঁটি সাজানোর ছক ইতিমধ্যেই কষে ফেলেছে হিথার নাইটের দল। বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের সাফল্যের অন্যতম কারণ তাদের ব্যাটিং লাইনআপ। ব্যাটিংয়ের ওপর ভিত্তি করেই গোটা টুর্নামেন্টে একের পর এক সাফল্য অর্জন করেছে নাইটের দল। পাশাপাশি ফাইনালে ইংল্যান্ড শিবিরের নজর থাকবে তাদের পেস লাইনআপের ওপরও। অধিনায়ক হিথার নাইটের অলরাউন্ড পারফর্মেন্সের ওপর ভর করে বহু হারা ম্যাচ জিতেছে ইংলিশরা। চলতি বিশ্বকাপেই একের পর এক উদাহরণ রয়েছে। বিশ্বকাপ জিততে হলে ফাইনালে আরেকবার ভেল্কি দেখাতে হবে নাইটকে। নাতালি স্কিভার কথাও বিশেষভাবে বলতে হবে। চলতি বিশ্বকাপেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন এই ব্রিটিশ ব্যাটার। নাভালির ব্যাট ঠিক পথে চললে বিশ্বকাপ জয়ের রাস্তা অনেকটা সহজ হয়ে যাবে ইংল্যান্ডের।
×