ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রথম ঘটনায় নির্যাতিত নারী উদ্ধার, দ্বিতীয়টিতে ধর্ষক গ্রেফতার

অপহরণের পর ১০৫ দিন পাশবিক নির্যাতন, বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ২৫ মে ২০১৭

অপহরণের পর ১০৫ দিন পাশবিক নির্যাতন, বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীতে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করার প্রেক্ষিতে ধর্ষক গ্রেফতার, অপহরণের পর ১০৫ দিন পাশবিক নির্যাতনের শিকার হওয়া এক নারীকে উদ্ধার ও এক যুবকের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। ডেমরা থানা-পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার এক নারী ধর্ষণের অভিযোগে সুজন নামে একজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ওই নারী ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকার একটি রেস্টুরেন্টের মালিক। প্রায় ২০ বছর আগে তার সঙ্গে স্বামীর ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর সুজন শেখ নামের একজনের সঙ্গে পরিচয় হয়। চলতি বছরের ২ মার্চ ডেমরার আমুলিয়া এলাকার সুজন শেখ (৩৭) নামের ওই ব্যক্তির সঙ্গে ওই নারী স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। গত ১৪ মে পর্যন্ত তারা একসঙ্গে থাকেন। তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। সুজন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই নারীকে ধর্ষণ করে। বিয়ের প্রস্তাবের পর সুজন ওই নারীকে বিয়ে করতে অপারগতা প্রকাশ করে। তারই প্রেক্ষিতে ওই নারী মামলাটি করেন। মঙ্গলবার রাতেই সুজনকে গ্রেফতার করা হয়। আর মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে ওই নারীকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়। বুধবার সকালে আসামি সুজনকে আদালতে পাঠানো হয়। ডেমরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ সেলিম জনকন্ঠকে বলেন, আদালত আসামিকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন। অপহৃত নারী উদ্ধার মঙ্গলবার রাতে অপহরণের ১০৫ দিন পর সাভারের আশুলিয়া থেকে এক নারীকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি দল। অপহরণের পিবিআইয়ের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন তালুকদার জনকণ্ঠকে জানান, ২০০৭ সালের ১৬ জুন মোস্তফা বুলবুল নামে এক যুবকের সঙ্গে ওই নারীর বিয়ে হয়। তাদের সংসারে কাছাফমান তাহমিদ (৬) নামে এক পূত্র সন্তান রয়েছে। মোস্তফা বুলবুল মূলত ব্যবসায়ী। তিনি পরিবার নিয়ে রাজধানীর সূত্রাপুর থানাধীন এলাকায় বসবাস করতেন। ব্যবসার সূত্র ধরে মোস্তফার বুলবুলের সঙ্গে দিদার ওরফে সোহান, দুলাল ও রানার পরিচয়। তারা চারজন মিলে একত্রে ব্যবসা করতেন। মোস্তফার বাড়িতেও যাতায়াত ছিল ব্যবসায়িক ওই তিন পার্টনারের। যাতায়াতের সুবাদে তাদের মধ্যে সুসর্ম্পক গড়ে ওঠে। চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে চারটার দিকে তিন ব্যবসায়িক পার্টনার মোস্তফার সঙ্গে যোগাযোগ না করেই তার বাসায় হাজির হয়। তারা মোস্তফার স্ত্রীকে মিথ্যা কথা বলে বাড়ির বাইরে আনে। তাকে জরুরী ভিত্তিতে একটি জায়গায় যাওয়ার কথা বলে গাড়িতে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এরপর থেকেই তাকে বিভিন্ন বাসায় রেখে তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালাতে থাকে তিন ব্যবসায়িক পার্টনার। তাকে বহুবার ধর্ষণ করে তারা। এ ব্যাপারে ঘটনার একদিন পরেই গত ৭ ফেব্রুয়ারি সূত্রাপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন অপহৃতের স্বামী। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে অপরাধীদের শনাক্ত করা হয়। তাদের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালায় পুলিশ। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই নারীকে গাড়ি থেকে সাভারের আশুলিয়া এলাকায় ফেলে ওই তিন ব্যবসায়িক পার্টনার পালিয়ে যায়। ওই নারীকে উদ্ধার করে আদালতে সোর্পদ করা হয়। আদালত ওই নারীকে সরকারী সেভ হোমে রাখার নির্দেশ দেন। বুধবার সকালে দারুসসালাম থানাধীন শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের পাশে একটি বট গাছ থেকে গামছা দিয়ে ঝুলন্ত মৃত অবস্থায় আসিফ খান (২৮) নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠায় পুলিশ। থানা-পুলিশ জানায়, মৃত আসিফ ফরিদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের মৃত শফি খানের ছেলে ছিল। সে থানার প্রথম কলোনির ২৭৫ নম্বর বাসায় মা আকলিমা বেগম ও ছোট ভাইকে নিয়ে থাকত। একটি বেসরকারী কোম্পানিতে চাকরি করত আসিফ। অভাবের সংসারে মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার করে অভিমানে আত্মহত্যা করে। মৃত্যুর পেছনে আরও কোন কারণ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
×