ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হাত-পা কেটে হত্যার জের

হবিগঞ্জে শতাধিক বাড়িঘরে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর অগ্নিসংযোগ

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

 হবিগঞ্জে শতাধিক  বাড়িঘরে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর অগ্নিসংযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ, ২৬ ফেব্রুয়ারি ॥ দুর্বৃত্তদের হামলায় যুবকের এক হাত-কান কর্তন, পুলিশী নির্লিপ্ততায় তাকে উদ্ধার না করায় ও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে হবিগঞ্জ শহরের ছোট বহুলা গ্রামের অন্তত শতাধিক বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, আসবাবপত্রে অগ্নিসংযোগ করেছে ক্ষুব্ধ জনতা। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে প্রতিপক্ষীয় পক্ষাবলম্বনকারী উত্তেজিত জনতা প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী এই তা-ব চালানোয় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে এই ঘটনার পরপরই হবিগঞ্জে ফায়ার ব্রিগেডের অন্তত ৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালালেও রাত পৌনে ৮টা পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি। শুধু তাই নয়, এহেন ঘটনার পর উভয় পক্ষের মঝে বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কায় সংশ্লিষ্ট গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ ও গ্রামবাসীরা জানায়, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ওই গ্রামের মৃত আলতাফ মিয়ার সঙ্গে বিরোধে লিপ্ত ছিলেন একই গ্রামের কুতুব উদ্দিন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বারকয়েক সালিশ বৈঠক ও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। এর জের ধরে গত শুক্রবার কুতুবউদ্দিনের পক্ষাবলম্বনকারী সশস্ত্র লোকজন আলতাফ মিয়ার ছেলে আব্দুল আজিজকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। শুধু তাই নয়, আজিজের বাম হাত ও বাম কান কর্তন করে দুটি অংশই গুম করে ফেলে ওরা। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আজিজকে প্রথমে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল এবং পরবর্তীতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার দুপুর ২টায় আজিজ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এই মৃত্যুর খবর হবিগঞ্জের ছোট বহুলা গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আলতাফ মিয়ার পক্ষ নেয়া সশস্ত্র লোকজন প্রথমে কুতুব গংদের এবং পরবর্তীতে নির্বিচারে শতাধিক বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও আসবাবপত্রে কেরোসিন, পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় এসব বাড়িঘরে থাকা, শিশু, যুবতী কন্যা, মহিলারা প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার শুরু করলেও কেউ এগিয়ে যাবার সাহস পায়নি। এ সময় আহত হয় অন্তত ১২/১৫ জন। এমতাবস্থায় দাউ দাউ করে ছড়িয়ে পড়া আগুনের লেলিহান শিখায় পুরো গ্রামটি যেন অগ্নিকু-ে রূপ নেয়। রাতের আঁধারে দূর থেকে শুধুই আগুন আর আগুন দেখা যায়।
×