পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি ॥ মহালছড়িতে পায়খানার গর্তে পড়ে ভোরের কাগজের উপজেলা প্রতিনিধি প্রদীপ শশী চাকমাসহ তার অপর দুই ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আরও দুই প্রতিবেশী আহত হন। রবিবার রাত ১২টার দিকে দুর্গম মনারটেক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত অপর দুই ভাই হলো হেভেন্টু চাকমা (৩৫) ও উভেন্টু চাকমা (৩২)। এ ঘটনায় মহালছড়ির মনারটেক গ্রামে চলছে মাতম।
প্রদীপ শশী চাকমার স্ত্রী উজ্জ্বল চাকমা জানান, রাত ১২টার দিকে উভেন্টু চাকমা বাড়ির পাশে একটি টয়লেটে গেলে স্ল্যাপ ভেঙ্গে প্রায় ১৫ ফুট গভীরে পড়ে যায়। ছোট ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে প্রদীপ শশী চাকমা ও হেভেন্টু চাকমাও ঘটনার শিকার হন। প্রতিবেশী রতœ উজ্জল চাকমা জানান, তারা খবর পেয়ে গর্ত থেকে তিন ভাইকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মহালছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় রিপন চাকমা (২০) ও বাবলু চাকমা (২২) নামে আরও দুই প্রতিবেশী টয়লেটের গ্যাসক্রিয়ায় অসুস্থ হন।
মহালছড়ি হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডাক্তার তানজিল ফরহাদ জানান, হাসপাতালে তিনজনকেই মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী বিনয় স্মৃতি চাকমা জানান, রাত পৌনে ১২টার দিকে উভেন্টু চাকমা বাড়ির পাশে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে হাত ফসকে তার মোবাইল ফোনটি টয়লেটে পড়ে যায়। তিনি মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করতে স্ল্যাব উল্টে রশি বেয়ে নিচে নামলে বিষক্রিয়ায় অজ্ঞান হয়ে যান। ছোট ভাইয়ের আসতে দেরি দেখে অপর দুই ভাই টয়লেটে গিয়ে দেখে ছোট ভাই অজ্ঞান হয়ে টয়লেটের নিচে পড়ে আছে। ছোট ভাইকে উদ্ধার করতে প্রদীপ শশী চাকমা ও হেভেন্টু চাকমা টয়লেটের নিচে নামলে তারা বিষক্রিয়ায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এ অবস্থায় প্রতিবেশীরা তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। তিন ভাইকে উদ্ধার করতে গিয়ে রিপন চাকমা (২০) ও বাবলুক চাকমা (২২) নামে আরও দুই প্রতিবেশী গ্যাসের বিষক্রিয়ায় অসুস্থ হন।
মহালছড়ি হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডাক্তার তানজিল ফরহাদ জানান, রাত সোয়া ১২টার দিকে পর পর পাঁচজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, তিনজন অনেক আগেই মারা গেছেন। অন্য দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা উন্নতির দিকে।