ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

এক চুমুতেই রুবির ৩০ মাসের জেল!

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:২১, ২৯ মার্চ ২০২৪

এক চুমুতেই রুবির ৩০ মাসের জেল!

বিশ্বকাপের মঞ্চে স্বদেশী নারী ফুটবলারকে চুমু দিচ্ছেন স্পেনের লুইস রুবিয়ালেস

শেষ পর্যন্ত হয়তো নিজেকে রক্ষা করতে পারছেন না স্পেন ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইএফ) সাবেক সভাপতি লুইস রুবিয়ালেস। এক চুমুকা-ের ঘটনাতেই তাকে আড়াই বছর অর্থাৎ ৩০ মাসের হাজতবাস করতে হতে পারে। এমন শাস্তিরই দাবি জানিয়েছেন স্পেনের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের উদ্ধৃতিতে জানা গেছে, স্পেনের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মার্তা ডুরান্টেজ ৪৬ বছর বয়সী রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন ও জবরদস্তিমূলক কর্মকা-ের অভিযোগ এনেছেন। রুবিয়ালেসের প্রথম অপরাধের জন্য ১ বছর ও দ্বিতীয়টির জন্য ১৮ মাস বা দেড় বছর সাজা চেয়েছেন ডুরান্টেজ। তিনি আরও দাবি করেছেন, হারমোসোকে ৫০ হাজার ইউরো (৫৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা) ক্ষতিপূরণও দিতে হবে রুবিয়ালেসকে।

গত বছরের ২০ আগস্ট মেয়েদের বিশ্বকাপ ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় স্পেন। উৎসবের মাঝেই বিতর্কিত কা- করে বসেন রুবিয়ালেস। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে পদক পরিয়ে দেওয়ার সময় স্পেন দলের সব ফুটবলারকেই তিনি আলিঙ্গন করেন। গালে ও কপালে চুমু এঁকে দেন অনেকের। তবে ফরোয়ার্ড জেনিফার হারমোসোকে বেশ কিছুটা সময় আলিঙ্গনে জড়িয়ে রেখে পরে দু’হাত দিয়ে মাথায় ধরে ঠোঁটে চুমু দিয়ে বসেন তিনি। ওই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন রুবিয়ালেস।
সরকারি আইনজীবী ডুরান্টেজ স্পেন নারী দলকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচ জর্জ ভিলদা, ফেডারেশনের বর্তমান ক্রীড়া পরিচালক আলবার্ত লুকি, ফেডারেশনের মার্কেটিং বিভাগের প্রধান রুবেন রিভেরার বিরুদ্ধে রুবিয়ালেসকে সমর্থন জানানো এবং চুমুটি দুজনের সম্মতিতে হয়েছিল হারমোসোকে দিয়ে জোর করে এমন কথা বলানোর অভিযোগ এনেছেন। যে কারণে এ তিনজনেরও ১৮ মাস করে জেল হতে পারে। অভিযোগে বলা হয়েছে, এই তিন কর্মকর্তা হারমোসোকে কখনো সরাসরি, কখনো তার সতীর্থ খেলোয়াড়, বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন ও বারবার চাপ প্রয়োগ করে হয়রানি করেছিলেন। 
তাদের প্রত্যেকের জন্য ১৮ মাস কারাবাসের শাস্তি চেয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি। এ ছাড়া হারমোসোকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে রুবিয়ালেস, ভিলদা, লুকি ও রিভেরাকে যৌথভাবে আরও ৫০ হাজার ইউরো দিতে বলেছেন। তবে ভিলদা, লুকি ও রিভেরা আদালতে উপস্থিত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এসবের বিরুদ্ধে আগেই ফিফার কাছে আপিল করেছিলেন রুবিয়ালেস। কিন্তু ফিফার আপিল কমিটি সেসব খারিজ করে দেয়। যে কারণে ফুটবল-সংক্রান্ত সব ধরনের কার্যক্রম থেকে স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের (আরইএফএফ) সাবেক সভাপতিকে তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে ফিফার আপিল কমিটি। বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা বিবৃতিতে জানায়, উপস্থাপিত তথ্য বিশ্লেষণ ও শুনানি শেষে আপিল কমিটি আপিল খারিজ করার এবং রুবিয়ালেসের নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আপত্তিকর ওই ঘটনার পর সমালোচনাকারীদের প্রথমে ‘ইডিয়ট’ বলে মন্তব্য করেছিলেন রুবিয়ালেস। তবে সমালোচনার তীব্রতা বাড়লে বিতর্কিত ঘটনার জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। অবশ্য পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানান। দাবি করেন হারমোসোরও এতে সম্মতি ছিল। তবে হারমোসো পরিষ্কার করে বলেন, তার কোনো সম্মতি ছিল না। 
চাপের মুখে গত সেপ্টেম্বরে আরইএফএফ সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান রুবিয়ালেস। হারমোসো পরে রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করেন।

×