ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

মানসিকতায় বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে জিম্বাবুইয়ে

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

মানসিকতায় বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে জিম্বাবুইয়ে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ক্রিকেট ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে টানা ব্যর্থতার কারণে কোণঠাসা বাংলাদেশ দল। গত বছর থেকে শুরু করে টানা ৬ টেস্ট খেলে ৫টিতেই ইনিংস ব্যবধানে হার দেখতে হয়েছে। এর মধ্যে একমাত্র যে পরাজয়টি লজ্জাজনক ইনিংস ব্যবধানে হয়নি, সেটিও টেস্ট ক্রিকেটের নবীন দেশ আফগানিস্তানের কাছে ঘরের মাটিতে ২২৪ রানের হার। এমন পরিস্থিতিতে এবার ঘরের মাটিতে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে শনিবার একমাত্র টেস্টে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। যে দলে নেই অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও অন্যতম অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। অথচ কিছুদিন আগেই দেশের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুর্দান্ত একটি টেস্ট সিরিজ শেষ করে দারুণ উজ্জীবিত জিম্বাবুইয়ে। সে জন্যই দলটির অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজা দাবি করেছেন মানসিকভাবে বাংলাদেশের চেয়ে জিম্বাবুইয়ে দল শক্তিশালী। বৃহস্পতিবার দলের ঐচ্ছিক অনুশীলন শেষে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের এমন কথা বলেন তিনি। গত বছর সর্বশেষ বাংলাদেশ সফর করেছিল জিম্বাবুইয়ে দল। সেখানে তারা ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজ খেলেছে। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে পেরে ওঠেনি। সেটি নিয়ে মাথাব্যথাও নেই জিম্বাবুইয়ের। কারণ ২০১৮ সালে সর্বশেষ তারা বাংলাদেশের মাটিতে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করেছিল। এর মধ্যে সিরিজের প্রথম টেস্টেই সিলেটে তারা স্বাগতিকদের পরাস্ত করে ১৫১ রানে। সেই ম্যাচে অবশ্য সাকিব ও তামিম খেলেননি। পরের টেস্টে অবশ্য তাদের ছাড়াই জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। এবারও জিম্বাবুইয়ের প্রতিপক্ষ যে বাংলাদেশ দল, সেই দলে সাকিব নেই। তামিম থাকলেও আরেক অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ নেই, যার নেতৃত্বে ২০১৮ সালের সিরিজটি জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে খেলেছিল বাংলাদেশ দল। সেই সিরিজটিই এবার সফরকারীদের জন্য সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। তারা সদ্যই ঘরের মাটিতে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ টেস্ট সিরিজ খেলেছে। এ বিষয়ে সিকান্দার বলেন, ‘মানসিকতায় আমরা বেশি শক্তিশালী। দলের ক্রিকেটাররা যার যার ভূমিকা খুব সুন্দরভাবে বুঝে নিয়েছে। এটা দেখতেও দারুণ লাগছে। জিম্বাবুইয়ের মূলশক্তি মানসিকতায়। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে প্রথম টেস্টে আমরা হেরেছি, যেখানে আমরা সহজেই ড্র করতে পারতাম। দ্বিতীয় ম্যাচটিও অনেক ক্লোজ ম্যাচ ছিল। সেখান থেকে আমরা অনেক আত্মবিশ্বাসী হয়েছি। জিম্বাবুইয়ে সবসময় বাংলাদেশে ভাল খেলে এসেছে।’ অবশ্য ২০১৮ সালে সিলেট টেস্টে জয় ব্যতীত দীর্ঘদিন বাংলাদেশের মাটিতে তেমন সুবিধা করতে পারেনি জিম্বাবুইয়ে। বিশেষ করে বাংলাদেশী স্পিনারদের কাছেই বারবার কুপোকাত হয়েছে তারা। তাই এবার সিরিজ শুরুর আগেও বাংলাদেশের স্পিনারদের সমীহ করছেন সিকান্দার। যদিও তিনি মনে করেন বাংলাদেশ সফরের পূর্ব অভিজ্ঞতা তাদের সহায়তা করবে ভাল পারফর্মেন্স করতে। তার বিশ্বাস আগের সফরগুলো থেকে জিম্বাবুইয়ের খেলোয়াড়রা অনেক কিছু শিখেছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিপক্ষে বাংলাদেশের স্পিনারদের রেকর্ড খুবই ভাল। কিন্তু আমি মনে করি বাংলাদেশে আসার অভিজ্ঞতা থেকে আমরা কিছু শিখেছি এবং আমরা নিজেদের অনেক উন্নতি করেছি যতটা সম্ভব। তাদের স্পিনাররা অনেক উইকেট নিয়েছে কিন্তু আমরা তাদের বিপক্ষে রানও করেছি সিলেট এর একটি উদাহরণ হতে পারে। আমরা সেই ম্যাচটি জিতেছিলাম।’ আর বাংলাদেশ দলের সেই সিলেটে পরাজয়ের পর আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়ের দারুণ সুখস্মৃতি রয়েছে। কিন্তু ২০১৯ সালের শুরু থেকে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত শুধুই লজ্জার গ্লানি। নিউজিল্যান্ডে দুই টেস্টে ইনিংস পরাজয়, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ২২৪ রানের বড় ব্যবধানে হার, ভারত সফরে দুই ম্যাচে ইনিংস পরাজয় এবং পাকিস্তানের সঙ্গে রাওয়ালপিন্ডিতেও ইনিংস পরাজয়। সবমিলিয়ে সর্বশেষ ছয় টেস্টের পাঁচটিতেই ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। এ জন্যই জিম্বাবুইয়ের প্রধান কোচ লালচাঁদ রাজপুত গত বুধবার বিকেএসপিতে প্রস্তুতি ম্যাচের পর বলেছিলেন, ‘কোন দল নিয়মিত হারতে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই চাপে থাকে। নিজেদের দুর্গে খেলা হওয়ায় আরও বেশি চাপে থাকবে তারা। আমরা তাদের ওপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করব। এখন আমরা ভাল ক্রিকেট খেলছি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যে দল শক্ত হাতে চাপ সামলাতে পারে, সবশেষে তারাই জেতে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাব।’ সেই কথাটাই বললেন সিকান্দারও। বৃহস্পতিবার মিরপুরের একাডেমি মাঠে দলের ঐচ্ছিক অনুশীলন হলেও সিকান্দার ঠিকই হাজির ছিলেন নেটে। স্বাগতিক স্পিনারদের ঠেকাতে বদ্ধপরিকর এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘আপনি যতই বলেন স্পিনাররা আমাদের বিপক্ষে অনেক উইকেট নিচ্ছে, আমরাও সময়ের সঙ্গে স্পিনের বিপক্ষে রান করা শুরু করেছি।’
×