ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

দক্ষিণ আফ্রিকার কেভিন এ্যান্ডারসনকে হারিয়ে ইউএস ওপেনের তৃতীয় শিরোপা জয়, ক্যারিয়ারের ১৬ গ্র্যান্ডসøাম জয়ের স্বাদ পেলেন স্প্যানিশ টেনিস তারকা

নাদালের মুখেই শেষ হাসি

প্রকাশিত: ০৪:৫৬, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭

নাদালের মুখেই শেষ হাসি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নোভাক জোকোভিচ আর এ্যান্ডি মারে খেলেননি। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে যান রজার ফেদেরার। ইউএস ওপেনের ফাইনালের আগে তাই ‘অলিখিত’ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে বিবেচনা করা হয় রাফায়েল নাদালকে। শেষ পর্যন্ত সেটাই বাস্তবে রূপ নিল। রবিবার ফাইনালে কেভিন এ্যান্ডারসনকে পরাজিত করে মৌসুমের শেষ গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টের শিরোপা নিজের শোকেসে তুললেন বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের নাম্বার ওয়ান তারকা। অথচ কেভিন এ্যান্ডারসনের সামনে ছিল নতুন এক ইতিহাস গড়ার হাতছানি। কিন্তু কোর্টের লড়াইয়ে অবশ্য কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়তে পারেননি। বরং তাকে সরাসরি সেটে উড়িয়ে দিয়ে চলতি মৌসুমের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট জয়ের স্বাদ পেলেন এই স্প্যানিয়ার্ড। বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের নাম্বার ওয়ান নাদাল নিউ ইয়র্কের ফ্ল্যাশিং মিডোতে এদিন ২ ঘণ্টা ২৭ মিনিটের লড়াইয়ের পর ৬-৩, ৬-৩ এবং ৬-৪ গেমে পরাজিত করেন কেভিন এ্যান্ডারসনকে। ৩১ বছর বয়সী নাদালের এটি ইউএস ওপেনের তৃতীয় শিরোপা। আর ক্যারিয়ারের ১৬ গ্র্যান্ডস্লাম। ১৯ গ্র্যান্ডসøাম শিরোপা নিয়ে তার ওপরে আছেন কেবল সুইস কিংবদন্তি রজার ফেদেরার। এ মৌসুমে চার গ্র্যান্ডসøাম শিরোপাই ভাগ করে নিয়েছেন নাদাল ও ফেদেরার। এর ১১ বছর আগেও এমনটা দেখেছিল টেনিস বিশ্ব। ২০০৬ সালের পর ২০০৭ ও ২০১০ সালেও চার গ্র্যান্ডসøাম ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন তারা। ২০১৩ সালের পর এই প্রথম একই বছরে দুটি গ্র্যান্ডসøাম শিরোপা জিতলেন নাদাল। গত জুনে জিতেছিলেন ফ্রেঞ্চ ওপেন। এ বছরের অন্য দুটি গ্র্যান্ডসøাম প্রতিযোগিতা অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ও উইম্বলডন জিতেছেন ফেদেরার। অথচ চোট নাদালের ক্যারিয়ারটাই এক পর্যায়ে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছিল। সেখান থেকে কী দুর্দান্তভাবেই না ফিরেছেন টেনিস কোর্টে। একের পর এক প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে চলেছেন। গত মাসে ২০১৪ সালের পর প্রথমবার উঠেছেন বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে। তাই এ বছরটাকে অবিশ্বাস্যই বলছেন নাদাল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমার জন্য বিশেষ দুটি সপ্তাহ কাটল। কয়েক বছর বিভিন্ন ঝামেলা, চোট, ভাল না খেলার পর এ বছরে যা কিছু ঘটল, তা সত্যিই অবিশ্বাস্য। মৌসুমের শুরু থেকে এটা ছিল খুবই আবেগঘন।’ চাচা এবং দীর্ঘদিনের কোচ টনির পাশে নাদালের একসঙ্গে কাজ করা শেষ গ্র্যান্ডসøাম ছিল এই ইউএস ওপেন। নাদালের এই নাদাল হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে বড় অবদান তার চাচার। তাই তো চাচার প্রতি স্প্যানিশ তারকার বিনয়, ‘আমার জন্য তিনি যা কিছু করেছেন তার জন্য ধন্যবাদ যথেষ্ট নয়। সম্ভবত তিনি ছাড়া আমি টেনিসই খেলতে পারতাম না। এটা দারুণ যে তার মতো কেউ একজন ছিল যিনি সব সময় আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন। অবশ্যই তিনি আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের একজন।’ গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে টেনিস কোর্টের আলোচিত নাম নাদাল। ২০০৫ সালে ফ্রেঞ্চ ওপেনে প্রথম গ্র্যান্ডসøাম জয়ের স্বাদ পান তিনি। সেই যে শুরু এরপর আর পেছনের দিকে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ফরাসী ওপেনেই জিতেছেন দশম শিরোপা। এছাড়া উইম্বলডনে দুইবার এবং একবার উচিয়ে ধরেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ট্রফি। এদিকে কেভিন এ্যান্ডারসন এবারই প্রথম কোন গ্র্যান্ডসøাম প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠেছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার কোন টেনিস খেলোয়াড় গ্র্যান্ডসøাম ট্রফি জিততে পারেনি। এ্যান্ডারসনের সামনে ছিল তাই ইতিহাস গড়ার হাতছানি। নাদালের সঙ্গে মুখোমুখি আগের চারবারের দেখায় প্রতিবারই তিনি হেরেছিলেন। এবার অবশ্য স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। কেননা পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলেই যে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিলেন এ্যান্ডারসন। কিন্তু না, হারলেন আরেকবার, বাধা হতে পারলেন না নাদালের ‘সুইট সিক্সটিন’-এর পথে। বরং কেভিন এ্যান্ডারসনকে হারিয়ে ২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মতো একই বছর দুটি গ্র্যান্ডসøাম জিতলেন ৩১ বছর বয়সী নাদাল। গত জুনে তিনি ফরাসী ওপেনে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। স্প্যানিশ টেনিস তারকার লক্ষ্য এখন নতুন মৌসুমেও নিজের সেরাটা দিয়ে খেলা।
×