ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সরাসরি অংশগ্রহণে শ্রীলঙ্কা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ লড়াই

প্রকাশিত: ০৫:১০, ১৯ আগস্ট ২০১৭

সরাসরি অংশগ্রহণে শ্রীলঙ্কা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ লড়াই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে আছে এই মুহূর্তে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল। একের পর এক ব্যর্থতার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে তারা। চলতি বছর ১৯৯৬ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ী দলটির অবস্থা আরও বিপর্যস্ত। এ বছর তারা টানা পরাজয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে সরাসরি আগামী ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলা নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুসারে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ ঘোষিত আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ ৮ দল (আয়োজক ইংল্যান্ড ছাড়া বাকি ৭ শীর্ষ দল) সরাসরি অংশ নেবে বিশ্বকাপে। এই মুহূর্তে ৮ নম্বরেই আছে লঙ্কানরা। তাদের বেশ কাছাকাছিই আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ (৯ নম্বরে)। ৩০ সেপ্টেম্বরের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আছে ৬ ওয়ানডে, সবগুলো ম্যাচ জিতলে তাদের রেটিং লঙ্কানদের চেয়ে বেশি হওয়ার সুযোগ আছে যদি ভারতের বিরুদ্ধে ঘরোয়া ৫ ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় তারা। এক্ষেত্রে ভারতের বিরুদ্ধে দুটি ম্যাচ জিতলেই নিশ্চিত হয়ে যাবে শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ। লঙ্কানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ সিরিজ শুরু হবে রবিবার। এই মুহূর্তে শ্রীলঙ্কার রেটিং ৮৮। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের রেটিং ৭৮। ৩০ সেপ্টেম্বরের আগে ভারতের সঙ্গে ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ছাড়া আর কোন খেলা নেই লঙ্কানদের। তাই এই সিরিজে কোনভাবেই হোয়াইটওয়াশ হওয়া চলবে না তাদের। এমনকি যদি একটিমাত্র ম্যাচও জেতে তারা সেক্ষেত্রেও শঙ্কা থাকবে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে। কারণ এই সময়ের মধ্যে ক্যারিবীয়দের মোট ওয়ানডে আছে ৬টি। এরমধ্যে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি এবং ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৫টি। যদি শ্রীলঙ্কা ৫-০ কিংবা ৪-১ ব্যবধানে হারে আর ক্যারিবীয়রা সবগুলো ম্যাচ জিতে যায় সেক্ষেত্রে ভগ্নাংশের ব্যবধানে এগিয়ে থাকবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ কারণে শক্তিশালী ভারতের বিরুদ্ধে ঘরের মাটিতে ৫ ম্যাচের সিরিজে অন্তত দুই ম্যাচ জিততে হবে শ্রীলঙ্কাকে। সেক্ষেত্রে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফলাফল যাই হোক তারা বাদ পড়ে যাবে। তাই বিশ্বকাপ নিশ্চিতের লড়াইটা এখন শ্রীলঙ্কা আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের। আয়োজক হিসেবে ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশসহ বাকি ৭ দলের নিশ্চিত হয়েছে বিশ্বকাপ। কিন্তু আগের সিরিজেই নিচু র‌্যাঙ্কিংয়ের দল জিম্বাবুইয়ের কাছে ৩-২ ব্যবধানে ঘরের মাটিতে সিরিজ হারিয়েছে লঙ্কানরা। সবমিলিয়ে এ বছর ১৫ ওয়ানডে খেলে মাত্র ৪টিতে জিতেছে শ্রীলঙ্কা, হেরেছে বাকিগুলো। এখন তাদের জন্য তাই ভারতের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অগ্নিপরীক্ষা। এর পাশাপাশি মাঠের বাইরেও আছে নানাবিধ সমস্যা। ১৯৯৬ সালে বিশ্বকে চমকে দিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয় করে শ্রীলঙ্কা। বিশ্বকাপ জয়ী সেই দলটি বেশ দাপটের সঙ্গেই এক যুগেরও বেশি বিশ্ব ক্রিকেটে মাথা উঁচু করে ছিল। পরবর্তীতে মাহেলা জয়াবর্ধনে, কুমার সাঙ্গাকারা, তিলকারতেœ দিলশানরা বেশ ভালভাবেই এগিয়ে নিয়েছেন দলকে। কিন্তু এখন আর তারা কেউ নেই। নতুনরা এসেছেন দলে। নিজেদের আর কোনভাবেই ফিরে পাচ্ছে না লঙ্কানরা। তারা এবার আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রথম রাউন্ড পেরোতেই ব্যর্থ হয়েছে। এরপর কোচ গ্রাহাম ফোর্ড চুক্তির মেয়াদের মাঝামাঝি অবস্থানেই সরে দাঁড়ান। এরপর দেশের মাটিতে আরও খারাপ ভাগ্যবরণ করতে হয়েছে তাদের। এবার নিচু র‌্যাঙ্কিংয়ের জিম্বাবুইয়ের কাছে ৩-২ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে তারা। তারপর অধিনায়ক এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস নেতৃত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। বিশ্বকাপ জয়ী সাবেক অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা বর্তমানে একজন মন্ত্রী। তিনি দাবি করেছেন শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট প্রধান থিলঙ্গা সুমাথিপালা জুয়ার সঙ্গে জড়িত। এছাড়া অভিযোগ উঠেছে দেশের ক্রিকেটাররা অনবরত ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়ে যাচ্ছেন। এসব বিতর্কে একেবারে নড়বড়ে হয়ে পড়েছে লঙ্কান ক্রিকেট।
×