স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিউজিল্যান্ডে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ কখনোই জিততে পারেনি। তবে বাংলাদেশের মাটিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে আট ম্যাচের সাতটিতেই হেরেছে। এ জন্য খুব সাবধান হয়েই বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে নামবে নিউজিল্যান্ড। কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনই যেমন বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে হারাতে সেরাটা খেলতে হবে।’
আজ বাংলাদেশ সময় ভোর চারটায় তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে খেলতে নামার আগে ক্রাইস্টচার্চে সংবাদ সম্মেলনে উইলিয়ামসন বলেছেন, ‘ওরা পুরোপুরি থিতু একটা দল। ওয়ানডেতে অভিজ্ঞ ঐক্যবদ্ধ দল। ওদের হারাতে আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘দেশের মাটিতে ওদের হারানো ভীষণ কঠিন। নিজেদের মাঠে ওরা প্রায় সবাইকে হারিয়েছে। দেশের বাইরেও ওরা আরও অভিজ্ঞ হচ্ছে।’
বাংলাদেশ দল সম্প্রতি ভাল খেলেই নিউজিল্যান্ডে গেছে। ইংল্যান্ডকে টেস্টে হারিয়েছে। উল্টো দিকে নিউজিল্যান্ড সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়ার কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। এমন অবস্থায় নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটাররা আরও বেশি আক্রমণাত্মক ক্রিকেটার খেলার অপেক্ষায় আছে। উইলিয়ামসন তাই বলেছেন, ‘আপনি যখন কোন সফরে গিয়ে অসিদের কাছে যেভাবে হেরেছি সেভাবে হারবেন, আপনি অবশ্যই তারচেয়ে অনেক বেশি ভাল করতে পছন্দ করবেন। এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমরা আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলব। উইকেটও নিতে চাইব। আমরা চাই পেসাররা ওদের (বাংলাদেশের) ব্যাটসম্যানদের চেপে ধরুক।’
এই সিরিজের আগে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটাররা ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছে। তবে উইলিয়ামসন ছিলেন বিশ্রামে। সেটি কাজেও দিয়েছে। নিউজিল্যান্ড কোচ মাইক হেসন যেমন বলেছেন, ‘তাকে বিশ্রাম দিতে পারা খুব ভাল একটি ব্যাপার। তিন ফরমেটই খেলতে বলা খুব কঠিন। আবার দলের অধিনায়কও। অবশ্যই সে খেলার জন্য প্রস্তুত। ১০-১২ দিন ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার সুযোগ পেয়েছে ছেলেরা, এটা ভাল ব্যাপার। ওরা আত্মবিশ্বাস ফিরে পাচ্ছে। ভারতে দুটি জয় পেয়েছে ওরা।’
উইলিয়ামসনের কথাবার্তাতেই বোঝা যাচ্ছে, পেস আক্রমণ দিয়েই বাংলাদেশকে চাপে রাখতে চায় তার দল। আর সেটি ফার্গুসনকে দিয়েই বেশি হতে পারে। ফার্গুসনের গতি তামিম, সৌম্য, সাকিব, মুশফিকদের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার অভিষেক সিরিজটি যদি লকি ফার্গুসনের জন্য হতাশারই ছিল। তবে সুযোগ এসেছে আরেকটি। তার সুইং আর বাউন্সারগুলো পুরো সিরিজে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের তাড়া করে ফিরবে বলে মনে করছেন কোচ মাইক হেসন। ফার্গুসন নিজেই যেমন বলেছেন, ‘আমি জানি, আমি এই পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আরও ভাল করতে পারব। আমি পরের চ্যালেঞ্জের জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।’
তবে বাংলাদেশকে একেবারে সহপ্রতিপক্ষ মনে করছেন না ফার্গুসন নিজে, ‘আগে যেমন ছিল তেমন সহজ শিকার ওরা এখন আর নয়। ওরা এখন খুব শক্তিশালী একটি দল।’ কোচ হেসনও বলেন, ‘লকির অবশ্যই গতি আছে। ও খুব দ্রুত শিখেও। নিজের বৈচিত্র্য নিয়েও আত্মবিশ্বাসী। এই মুহূর্তে ও খুব ভাল বাউন্সার করছে। সে অবশ্যই পুরো সিরিজে নতুন বলেও সুইং আর গতি দিয়ে বাংলাদেশীদের চ্যালেঞ্জ জানাবে।’
বাংলাদেশের বিপক্ষে আবার রানে ফিরতে মরিয়া লুক রনকিও। আগেই ৩৫ বছর বয়সী এ অভিজ্ঞ ডানহাতি ব্যাটসম্যান তা জানিয়েছেন। ২০০৮ সালে ওয়ানডে অভিষেক ঘটলেও মাত্র ৪ ম্যাচ খেলেই বাদ পড়েছিলেন রনকি। আবার ফিরেছেন ৫ বছর পর। এবার আর তাকে দল থেকে বাদ দেয়া যায়নি। দলে ফিরে ভাল কিছু করতে চান রনকি। এ বিষয়ে রনকি বলেন, ‘আমার নিজেকে একটু সময় দিতে হবে। পারফর্ম করতে মরিয়া আমি। সম্প্রতি সেটাই আমি বেশি করছি। পাঁচ বল হাতে থাকলে সব সময় সেখান থেকে ৩০টা রান আসে না। সব ডেলিভারি ব্যাটে-বলে হয় না। ফলে, দলে সেট হতে আমার একটু সময় দরকার। ওয়েলিংটনের হয়ে খেলে আমি কিছুটা আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছি। সেটাকেই এবার জাতীয় দলের হয়ে করে দেখানোর চেষ্টায় থাকব।’