ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দ্রব্যমূল্য বাড়ানোই বিএনপির উদ্দেশ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১২:০৯, ২৪ মার্চ ২০২৪

ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দ্রব্যমূল্য বাড়ানোই বিএনপির উদ্দেশ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ব্রিফ করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশে ভোগ্যপণ্য থেকে শুরু করে অনেক পণ্যই ভারত থেকে আসে। ভারতের সঙ্গে আমাদের হাজার হাজার কিলোমিটার সীমান্ত এবং কিছু সীমান্তে বাণিজ্যও হয় বৈধভাবে। 

আসলে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজার অস্থিতিশীল করে তোলা ও দ্রব্যমূল্য বাড়ানোই বিএনপির মূল উদ্দেশ্য। এতে দেশে যাতে জনগণের ভোগান্তি হয় এবং পণ্যের মূল্য বাড়ে।

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা ভারত থেকে আসা পেয়াঁজ খাবেন, আপনাদের নেত্রী ভারত থেকে আসা শাড়ি পরিধান করবেন, আপনাদের নেত্রী যেগুলো মাঠে গলা ফাটায়, তারাও আবার ভারতীয় শাড়ি পড়বেন, ভারত থেকে আসা গরুর মাংস দিয়ে আপনারা ইফতার করবেন, সেহেরি খাবেন, কদিন আগে ওদের নেতা ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। ভারতে চিকিৎসা নিতে যাবেন। আবার আপনারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিবেন। এগুলো হিপোক্রেসি ছাড়া অন্য কোনকিছু নয়। বিএনপির আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে- দেশে বাজার অস্থিতিশীল করে পণ্যের মূল্য বাড়ানো।

শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে চট্টগ্রাম জেলায় সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে বিএনপিসহ কয়েকটি দল ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক সম্পর্কে সাংবাদিকরা সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ভারতীয় পণ্য বর্জনের যারা ডাক দিয়েছে, তাদের সাথে শামিল হয়ে রিজভী সাহেব নিজের পরনের শালটিও জ্বালিয়ে দিয়েছে। আসলে শালটি ভারত থেকে কিনেছিল, নাকি বঙ্গবাজার থেকে কিনেছে- আমি জানি না।  

তিনি বলেন,  জাহাজের মধ্যে কয়লা আছে, কয়লা একটি দাহ্য পদার্থ। সুতরাং এমন কিছু করা যাবে না যাতে করে দাহ্য পদার্থ হুমকির সম্মুখীন হয়, জাহাজের ক্ষতি হয়। সেভাবেই আমরা এগুচ্ছি এবং যারা জাহাজটি হাইজ্যাক করেছে, তারা ইতিমধ্যে মালিক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও এ ব্যাপারে আমাদেরকে সহযোগিতা করছে এবং আপনারা নাবিকদের পরিবারের সাথে কথা বললেও জানতে পারবেন, তারাও অনেকটা আশ্বস্ত। আশা করছি, আমরা সহসা নাবিকদেরকে উদ্ধার করতে পারব।


তিনি বলেন, আপনারা জেনে খুশি হবেন, আজকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বে-টার্মিনালের জন্য ইতিমধ্যে পাঁচশ’ একর জায়গা প্রধানমন্ত্রী বিনামূল্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছেন। আরো তিনশ’ একরের বেশি জায়গা তারা পাবে, সেটির জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ আবেদন করেছে। ইতিমধ্যেই ডিপি ওর্য়াল্ড এবং সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটির সাথে চট্টগ্রাম বন্দর এমওইউ স্বাক্ষর করেছে।

তিনি আরও বলেন, এখানে তিনটি ভাগে কাজ হবে। একটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ করবে, আরেকটি সিঙ্গাপুর বন্দর কর্তৃপক্ষ করবে, আরেকটি ডিপি ওয়ার্ল্ড করবে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানও সেখানে যুক্ত হচ্ছে। এটা একটি বড় অগ্রগতি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, বে-টার্মিনাল হলে সেটি চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে আরো বড় একটি নতুন বন্দর হবে। যেটি সমগ্র বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন সম্পদ হবে এবং একই সঙ্গে এই বে-টার্মিনাল দিয়ে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহের পণ্য সরবরাহ আমরা করতে পারব। এছাড়া চট্টগ্রামে পাহাড়কাটা বন্ধ ও যানজট নিরসনসহ সার্বিক অনেক বিষয় নিয়ে সমন্বয় সভায় আমরা আলোচনা করেছি। আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি, প্রতি তিন মাস পরপর আমরা এ রকম সমন্বয় সভা করব।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামানের সঞ্চালনায় চট্টগ্রামের উন্নয়ন সংক্রান্ত সমন্বয় সভায় অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়েশা খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী, সংসদ সদস্য মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, এম এ ছালাম, এম এ মোতালেব সিআইপি, বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, ডিআইজি নুরে আলম মিনা, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র: বাসস

এসআর

×