ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৭ জুন ২০২৪, ৩ আষাঢ় ১৪৩১

এমন হার নয়

প্রকাশিত: ২০:২৫, ২৬ মে ২০২৪

এমন হার নয়

.

বড় দুঃখে টাইগারদের তকমা দিতে হচ্ছেহারের শীর্ষে প্রথম দল হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে হারেরসেঞ্চুরি রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। হিউস্টনে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে শততম হারের স্বাদ পেয়েছে তারা। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচ হারের আগেও বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ম্যাচ হারের তালিকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের (৯৯) চেয়ে পিছিয়ে ছিল। টাইগাররা যে কোনো দলের সঙ্গে হারতেই পারে, বিশেষ করে তালিকার তলানিতে থাকা কোনো দলের সঙ্গেও। সেটি হতে পারে অঘটন। কিন্তু টানা দুটি ম্যাচ হেরে একেবারে সিরিজ হেরে বসাটাকে তো আর অঘটন বলা চলে না। তাও আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নবাগত আমেরিকার বিপক্ষে। বোলিং ব্যাটিং উভয় ক্ষেত্রেই টাইগাররা ব্যর্থতার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, সেটি তাদের কতখানি লজ্জা দিয়েছে, আমাদের জানা নেই। তবে দেশের মানুষকে ব্যথিত ক্ষুব্ধ করেছে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে কমপক্ষে ম্যাচের সিরিজ এর আগে বার হেরেছে বাংলাদেশ। তবে এর কোনোটিই আইসিসির সহযোগী সদস্য কোনো দেশের বিপক্ষে ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হারে সে অর্থে নতুন এক অভিজ্ঞতাই।

টি-টোয়েন্টি ্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ নবম। যুক্তরাষ্ট্র ১৯তম। প্রথমটি টেস্ট খেলুড়ে, পরেরটি আইসিসির সহযোগী দেশ। দুটি দলই খেলবে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল পেশাদার। অভিবাসীদের সমন্বয়ে একটি অপেশাদার ক্রিকেটারদের দল আমেরিকা। এখন এই দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্র যদি একটি ম্যাচও জিতত, তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভালো করতে সেটাই দলটির বড় প্রেরণা হওয়ার কথা ছিল। সিরিজটাই জিতে গেল তারা। তাই সংগত কারণেই দারুণ উজ্জীবিত দলটি। বিপরীতে বাংলাদেশ যে হতাশ, সেটি প্রকাশ করছে না। বরং বড় গলায় কথা বলছেন দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ মহাতারকা খেলোয়াড় সাকিব। সত্যি বলতে কি জয় সম্ভব এমন একটি স্কোরের খেলায় উল্টো আউট হয়ে নতুনদের ভেঙে পড়ায় পরোক্ষ অবদানই রেখেছেন তিনি। হেঁয়ালি করে বলেছেন, টি-টোয়েন্টিতে ছোট দল বড় দল বলে কিছু নেই।

একেকজন ক্রিকেটার গড়ে তুলতে রাষ্ট্রের বিপুল বিনিয়োগ হচ্ছে। ক্রমান্বয়ে তাদের উন্নতি অগ্রগতিই ছিল কাম্য। অথচ তারা পিছিয়ে পড়ছে। পিছিয়ে পড়ে আবার বাগাড়ম্বরও করছে; পরের ম্যাচে টাইগাররা পুরো ২০ ওভারই খেলতে পারেনি। সৌম্য সরকার লিটন দাসদের মতো ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ ক্রিকেটারদের কেন বারবার দলে রাখতে হবে?

যাহোক, শনিবার বাংলাদেশ সময় রাতের বেলা তৃতীয় বা শেষ ম্যাচ খেলেছে উভয় দল। টাইগারদের হয়তো বা হোয়াইট ওয়াশের দুর্ভাবনা কাজ করেনি। কিন্তু দেশের ক্রিকেট অনুরাগী লাখ লাখ মানুষ শঙ্কায় ছিলেন। ধবল ধোলাই হলে তা হতো রীতিমতো বিশাল লজ্জার বিষয়। ভাগ্যিশ, সেটি হয়নি। বাংলাদেশ দল শেষ পর্যন্ত সান্ত¡নার দাপুটে দশ উইকেটের জয় পেয়েছে। গত বছরই সফরকারী শক্তিশালী আফগানিস্তান দলকে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আমরাও গর্ববোধ করেছিলাম। তদুপরি আফগানরা হোয়াইট ওয়াশ হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র সিরিজটি ছিল বাংলাদেশ দলের বিশ্বকাপ প্রস্তুতির মঞ্চ। সেটিই হেরে যাওয়ায় বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপে ভালো কিছু করবে, এমন আশাবাদী হতে ভরসা পাওয়া যাচ্ছে না। কথা হলো, খুব ভালো কিছু নাই-বা হলো; খুব খারাপ, মহাঅসম্মানজনক যেন কিছু না হয়Ñ এটাই প্রত্যাশা।

×