ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

স্কুলের সাপ্তাহিক ছুটি

-

প্রকাশিত: ২০:৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪

স্কুলের সাপ্তাহিক ছুটি

সম্পাদকীয়

আগামী বছর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সাপ্তাহিক ছুটি একদিন কমানোর চিন্তা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেখানে শনিবারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা রাখার ইঙ্গিত এসেছে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। মূলত পবিত্র রমজান মাসে স্কুল খোলা নিয়ে যে অহেতুক অকারণ-অপপ্রচার, তাকে কেন্দ্র করেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় ছুটি নিয়ে নতুন করে ভাবনা-চিন্তা চলছে। শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী শিক্ষার্থীদের সাপ্তাহিক ছুটি নিয়ে সরাসরি কথা বলেছেন।

এ কথা বহুকালের প্রচলিত ‘শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড’। পবিত্র শিক্ষাঙ্গন হলো সেই জাতি গড়ার মহান কারিগর। শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষার্থী তার আগামীর জীবন গড়ার মহান লক্ষ্যে পরিবারের পর যে প্রতিষ্ঠানটিকে নির্দ্বিধায় আলিঙ্গন করে, সেটাই বহু কাক্সিক্ষত, প্রত্যাশিত পবিত্রতম শিক্ষার বলয়। 
সময়ের পালাক্রম আর আধুনিকতার উন্নত প্রযুক্তি সাবেকি সব নিয়মকানুন নতুন অভিগমনে পরিবর্তন, পরিবর্ধন আর যুগোপযোগী ধারায় নিয়ে আসাও পরিস্থিতির ন্যায্যতা। সেখান থেকে উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ সূচক শিক্ষা কার্যক্রমও আলাদা করা যায় না। নতুন শিক্ষাপাঠক্রমে ইতোমধ্যে বর্তমান শিক্ষার্থীদের আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত জ্ঞানচর্চায় নিবেদিত হওয়া উন্নয়নের এক বৃহৎ যোগসাজশ। শিক্ষার্থীদের নতুন শিক্ষাক্রমে অভ্যস্ত হতেই সাপ্তাহিক ছুটির বিষয়েও আসছে ভিন্ন কার্যক্রম।

অর্থাৎ, শুধু শুক্রবারেই ছুটি থাকবে। শনিবারের ছুটি আর থাকছে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলোয়। এবার রমজান মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকা নিয়ে হরেকরকম আপত্তি উঠেছে। যে কারণে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নতুন করে বিভিন্ন ছুটি নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে এগিয়ে এসেছে। সেখানে বছরে ৫২ শনিবারে ৫২ দিন বন্ধ থাকার বিষয়টা অনেকের কাছেই মনঃপূত হয়নি। শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অবশ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। 
তবে অভিভাবকরা মনে করছেন, শিশু-কিশোরদের জন্য টানা ছয়দিন শ্রেণিপাঠে মনোনিবেশ করা প্রাথমিকভাবে একটু জটিল হতে পারে। তবে আস্তে আস্তে সময়ের সঙ্গে সহনীয় হয়ে উঠবে। আমরা অনেকেই একনাগাড়ে শ্রেণিপাঠের মাধ্যমে লেখাপড়া শিখেছি। পরে সপ্তাহে পাঁচ দিন শ্রেণিপাঠে অভ্যস্ত হওয়া পরিণত হয় নিয়মে। অভ্যাসের কারণে চেতনায়ও গেঁথে আছে সেটি। সেটা অবশ্য সব নতুন ব্যবস্থাপনার নিরিখে বিচার্য।

তর্ক-বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য যা মঙ্গলজনক, সেটাই করতে হবে। হিতকর সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা সময় ও পরিস্থিতির ন্যায্যতা। ভালো-মন্দ সবসময়ই আপেক্ষিক। তেমন বিবেচনাকে পাশ কাটিয়ে ‘শুভ কর্ম পথে ধর নির্ভর গান’ এই নীতিতেই অটল থাকা উচিত। এ বিষয়ে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে কর্তৃপক্ষের দায়বদ্ধ থাকা বাঞ্ছনীয়।

তবে লক্ষ্য রাখতে হবে, তা যেন শিক্ষার্থীদের নতুন শিক্ষা পাঠ্যক্রম এবং ধারাবাহিক কার্যক্রমের তেমন কোনো ব্যত্যয় কিংবা অসুবিধা তৈরি করতে না পারে। মনে রাখতে হবে, শিক্ষার্থীদের সার্বিক শিক্ষা জীবন, সুষ্ঠু কর্মসংযোগ- সবই আগামী দিনের বাংলাদেশ তৈরিতে রাখবে নিয়ামকের ভূমিকা।

×