ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সচেতনতা জরুরি

মো. জাহিদুল ইসলাম দুলাল

প্রকাশিত: ২০:৫৫, ২৭ মার্চ ২০২৪

সচেতনতা জরুরি

বর্তমানে ঢাকা শহরকে বলা হয় যানজট ও শব্দের শহর

বর্তমানে ঢাকা শহরকে বলা হয় যানজট ও শব্দের শহর। এখন শুধু ঢাকা শহর নয় পুরো দেশের একই অবস্থা। রাস্তা ফাঁকা তবু ড্রাইভার হর্ন বাজিয়েই চলছে। হচ্ছে বিভিন্ন মাইকিং। উচ্চৈঃস্বরে বাজানো হচ্ছে গান-বাজনা। বিভিন্ন নির্মাণকাজে হচ্ছে শব্দদূষণ। জেনারেটরের শব্দ। রাস্তায় বিভিন্ন পণ্যে বিক্রির বিজ্ঞাপনের শব্দ বেজেই চলেছে। বাজারের মোড়ে মোড়ে এবং শপিংমলগুলো উচ্চৈঃস্বরে বাজানো হচ্ছে আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন ও গান-বাজনা।

অনেকে বাড়িতে উচ্চৈঃস্বরে সাউন্ডবক্স বাজিয়ে যাচ্ছে দিনের বেলা ও অনেক রাত পর্যন্ত। এসব শব্দ ভোর থেকে চলছে মধ্যরাত পর্যন্ত। গ্রামাঞ্চলে অনেকে মোটরবাইকে অ্যাম্বুলেন্স ও লঞ্চের হর্ন লাগিয়ে এলাকায় শব্দদূষণ করছে। এসব শব্দদূষণের কারণে মানুষ দিনদিন বধির হচ্ছে, কানে কম শুনতে পাচ্ছে। দেখা দিয়েছে বিভিন্ন রোগব্যাধি।
এই শব্দদূষণ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে যে কাজগুলো করা উচিত তা হলোÑ সব জনগণের মতামতের ভিত্তিতে একটি কার্যকরী আইন করা। যা সকলেই মানতে বাধ্য থাকবে। যে এই আইন অমান্য করবে সে যেই হোক তাকে শাস্তি পেতে হবে। সকল গাড়ির জন্য নির্দিষ্ট হর্ন (মাত্রা) ব্যবহার করতে হবে। অতি উচ্চশব্দের হর্ন ব্যবহার করলেই জরিমানার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

সকলকে সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। অযথা শব্দ না করা, উচ্চৈঃস্বরে টিভি, মাইক, সাউন্ডবক্স না বাজানো। বিনা কারণে শব্দদূষণ করলে সাধারণ জনগণ তাকে বয়কট করতে হবে। সকল ড্রাইভারদের দিতে হবে এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ। রেডিও, খবরের কাগজ, টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। শব্দদূষণের কুফলগুলো বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ দ্বারা নিয়মিত মিডিয়াতে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। 
বাংলাদেশের পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় ২০০৬ সালে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ আইন তৈরি করে। ওই আইনের বিধি ৮ এ হর্ন ব্যবহারে বিধি-নিষেধের বিধানে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি মোটর, নৌ বা অন্য কোনো যানে অনুমোদিত শব্দের মানমাত্রা অতিক্রমকারী হর্ন ব্যবহার করতে পারবে না। আরও বলা হয়েছে নীরব এলাকায় চলাচলকালে যানবাহনে কোনো প্রকার হর্ন বাজানো যাবে না।

পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের ২০০৬ সালের এই আইনটি কিতাবেই রয়ে গেছে। এর বাস্তবতা নেই বললেই চলে। বাস্তবতা থাকবে কিভাবে এই আইন সম্পর্কে অনেকে জানে না। শুধু এই আইন না আমাদের দেশে অনেক ভালো ভালো আইন রয়েছে, প্রচারের অভাবে সাধারণ জনগণ জানা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাহলে এসব আইন করে লাভ কি? যারা আইন পালন করবে, তারাই জানে না।

এজন্য সরকারের উচিত জনস্বার্থে আইন তৈরির পরপরই বিভিন্নভাবে সাধারণ জনগণকে জানানো। এছাড়া আইনের প্রতি যতদিন না আমাদের সকলের সম্মান প্রদর্শন বা নিজ থেকে আইন মেনে না চলব ততক্ষণ শব্দদূষণ বন্ধ হবে না। এজন্য সকলেই এগিয়ে আসতে হবে। 
 
লালমোহন, ভোলা থেকে

×