ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

কেন্দ্রের নির্দেশ মানছেন না অনেকে

জনকণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

কেন্দ্রের নির্দেশ মানছেন না অনেকে

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

এবার দলীয় প্রতীকে হচ্ছে না উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। তবে অনেক উপজেলায় মন্ত্রী-এমপিরা প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে মাঠ গরম করেছেন। এ নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন অনেকে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের।
চট্টগ্রামে মরিয়া এমপিরা 
আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে চট্টগ্রামের তিনটি উপজেলায়। এদিন মীরসরাই, সীতাকু- এবং সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর এ তিন উপজেলায় বিভিন্ন পদে  মোট ২৬ জন রয়েছেন। সংসদ নির্বাচনের পর এখন নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের বড় টেনশন তাদের অনুগতরা উপজেলার বড় এই প্রশাসনিক পদে আসছেন কিনা।

দলীয় প্রতীক না থাকলেও সংসদ সদস্যরা অনুগত উপজেলা চেয়ারম্যান আনতে মরিয়া। অপরদিকে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের চ্যালেঞ্জ সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন উপহার  দেওয়া।
সন্দ্বীপ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে আগ্রহী ছিলেন এক ডজন নেতা। কিন্তু মনোনয়ন দাখিল করেন ৫ জন, যার মধ্যে তথ্যে গরমিল হওয়ায় দুজনের মনোনয়ন বাতিল হয়, এখন বৈধ প্রার্থী ৩ জন। অপরদিকে সীতাকু-ে ২ এবং মীরসরাইয়ে  চেয়ারম্যান পদে ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাঠে রয়েছেন। এ তিন উপজেলায় বর্তমানে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন ১১ প্রার্থী।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গত বুধবার চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে যাচাই-বাছাইকালে হলফনামায় তথ্যে গরমিলের কারণে সন্দ্বীপের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এ উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ওমর ফারুক। আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে চট্টগ্রামের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এনামুল হকের নেতৃত্বে প্রার্থীদের মনোনয়ন যাচাই-বাছাই করা হয়।
সন্দ্বীপে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন বৈধ হওয়া তিন প্রার্থী হলেন বর্তমান উপজেলা পরিষদ  চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনউদ্দীন মিশন, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফোরকান উদ্দিন আহমেদ এবং অ্যাডভোকেট নাজিম জামশেদ।
অপরদিকে সীতাকু- উপজেলা পরিষদে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন দুজন। তাদের দুজনের মনোনয়ন বৈধ হয়। তারা হলেন বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আরিফুল আলম  চৌধুরী রাজু ও চট্টগ্রাম উত্তর  জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদ মঞ্জুর।

মীরসরাই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌস হোসেন আরিফ, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এনায়েত  হোসেন নয়ন, বারইয়ারহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা হাজি জালাল উদ্দিন, সাবেক হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি উত্তম কুমার শর্মা ও  মোহাম্মদ মোস্তফা। আগামী ২২ এপ্রিল প্রার্থিতা প্রত্যাহার ও ২৩ এপ্রিল প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে।
এদিকে, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন না হলেও দলের নেতারা বিশেষভাবে স্থানীয় সংসদ সদস্য ঠিকই কোনো না কোনো প্রার্থীকে নিজের প্রার্থী ঘোষণা করছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা রয়েছে, সংসদ সদস্য বা নেতারা যেন প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা না করেন। কিন্তু সে নির্দেশনা মানা হচ্ছে না।

বিশেষ করে মীরসরাই থেকে অভিযোগ এসেছে যে, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন নিজে আওয়ামী লীগের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়েও দলের সিদ্ধান্ত মানছেন না। তিনি সেখানে একজন প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে তার অনুসারীদের মাঠে নামিয়েছেন বলে অভিযোগ। একইভাবে বাকি দুই উপজেলাতেও সংসদ সদস্যরা অনুগত চেয়ারম্যান প্রার্থীকে জিতিয়ে আনতে মরিয়া।
 
বাউফলে নাম ঘোষণা নিয়ে হট্টগোল 
উপজেলা পরিষদের এক সম্ভাব্য প্রার্থীর বাড়ির নিচতলায় আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনীর অনুষ্ঠান থেকে আরেক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করায় তুমুল হট্টগোল হয়েছে। ভুয়া ভুয়া, মানি না মানি না বলে কর্মী-সমর্থকরা স্লোগান দিয়েছেন। এ সময় মঞ্চে উপবিষ্ট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ স ম ফিরোজ এমপি ঘোষকের কাছ থেকে মাইক নিয়ে কিছু বলতে চাইলে বিক্ষুব্ধ কর্মীরা মাইকের তার কেটে দেন।

কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর যখন মাইক সচল হচ্ছিল না তখন এমপি আ স ম ফিরোজ খালি গলায় উচ্চৈস্বরে বলেন, তোমাদের ইউনিয়নের লোকজন ভোট দিলে কি উপজেলা চেয়ারম্যান হবে? তা হলে দেও, দিয়ে দেও। আমি যদি আ স ম ফিরোজ পক্ষে না থাকি হেই লোক ইলেকশন করবে বাউফলে কেমনে? আমি আ স ম ফিরোজ ষোলো ইউনিয়নের অভিভাবক।

আমি যদি একটা  লোককে নমিনেশন না দেই তা হলে সে ইলেকশন করতে পারে বাউফল? কারে কখন-কোথায় নমিনেশন দিতে হবে আমার চেয়ে তোমরা বেশি ভালো জানো না। বুধবার দুপুরে পটুয়াখালীর বাউফলের নওমালা ইউনিয়নের নগরেরহাট বাজারের ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন বিশ্বাসের বাস ভবনের নিচতলায় এক ঈদ পুনর্মিলনী  অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আ স ম ফিরোজ এ কথা বলেন। তবে এ বক্তব্য অস্বীকার করেছেন এমপি আ স ম ফিরোজ।

রাজশাহীতে ফের আলোচনায় এমপি কালাম
উপজেলা নির্বাচনে এবার আনুষ্ঠানিক দলীয় প্রার্থী দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। সে সিদ্ধান্ত না মেনে সভা ডেকে বাগমারা উপজেলায় প্রার্থী ঘোষণা করেছেন রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ। এ নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। স্থানীয় নেতারা বলছেন, কেন্দ্রের নির্দেশনা অমান্য করে তিনি একক সিদ্ধান্তে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে বিব্রত তারা।  

উপজেলা নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ করতে মন্ত্রী ও স্থানীয় এমপিদের প্রভাব বিস্তার না করার নির্দেশ দিয়েছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টুকে প্রার্থী ঘোষণা করে তার পক্ষে নেতাকর্মীদের কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রকাশ্যে।

বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তার পক্ষে প্রচারও চালাচ্ছেন। সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই তিনি নানা বিতর্কিত কর্মকা- করে আসছেন। দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নিয়েও করেছেন আপত্তিকর মন্তব্য। তাই এমপি নির্বাচিত হওয়ার দুই মাসের মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে কারণ দর্শানোর চিঠিও পেয়েছেন তিনি। এর পর তিনি জবাব দিলেও কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত এখনো আসেনি। এর মধ্যেই উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করলেন এমপি আবুল কালাম আজাদ। 

নীলফামারীতে ৩৫ প্রার্থী
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দুই উপজেলাÑ ডোমার ও ডিমলায় চেয়ারম্যান পদে ১২ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। বুধবার যাছাই-বাছাইয়ে সবার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন। তবে প্রার্থী প্রত্যাহারের সময়সীমা রয়েছে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত। 
এদিকে ডোমার উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৮ ও ডিমলা উপজেলায় ৪ প্রার্থী রয়েছেন। সূত্র মতে, প্রায় সকল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামী লীগের নেতা পর্যায়ের। ডোমার উপজেলায় যে আট প্রার্থী হয়েছেন তারা হলেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ, ডোমার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর-রাজশাহী) সরকার ফারহানা আখতার সুমী, ডোমার উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে উপজেলা ভাইস  চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক, আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা রাকিব আহসান প্রধান, মদন মোহন সিংহ ও দল থেকে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা এহছানুল হক।
অপরদিকে ডিমলা উপজেলায় চার  চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি টানা দু’বারের উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা তবিবুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক সরকার মিন্টু, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ফেরদৌস পারভেজ ও বাংলাদেশ ন্যাপ নেতা আব্দুল রহমান। 
 ডোমার উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮ জন হলেন দিলীপ কুমার মুখোপাধ্যায়, রাশেদুজ্জামান, জামাল উদ্দিন, মাছুম বিল্লাহ, রোকনুজ্জামান, মতিউর রহমান, রণজিৎ কুমার রায়, এ টি এম মিরাজুল কবীর। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন হলেন লাইলী বানু, শিল্পী আক্তার বানু, সন্ধ্যা রানী, বেগম রৌশন কানিজ, ফেরদৌসি বেগম। 
ডিমলা উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন হলেন স্বপন, মোফাক্কারুল ইসলাম পেলব, হামিদার রহমান,  উত্তম কুমার রায়, আবু সাঈদ, নীরেন্দ্র নাথ রায়, সুজয় চন্দ্র রায়। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন আয়শা ছিদ্দীকা, পারুল বেগম ও জাহানারা বেগম। রিটার্নিং অফিসার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, দুই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১২জন সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যানে ১৫ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮ জন সহ মোট ৩৫  প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মনোনয়নপত্র যাছাই-বাছাইয়ে বুধবার বৈধ ঘোষণা করা হয়।

নালিতাবাড়ীতে দেড় ডজন প্রার্থী
নালিতাবাড়ীতে নিজেদের প্রার্থিতা জানান দিয়ে মতবিনিময় ও গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্ভাব্য প্রার্থীরা মতবিনিময় ও গণসংযোগ করতে মাঠে নেমে পড়েছেন। তবে এ পর্যন্ত বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের মাঠে দেখা যায়নি। জানা গেছে, এরই  মধ্যে শুরু হয়েছে প্রার্থীদের নিয়ে নানা জল্পনাকল্পনা। কে যোগ্য, কার জয়ের সম্ভাবনা আছে, এ নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু করেছেন ভোটাররা। 
উপজেলা চেয়ারম্যান, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রায় দেড় ডজন প্রার্থী প্রতিদিন কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মতবিনিময়সহ দোয়া ও সমর্থন চেয়ে নানাভাবে ভোটারদের নজর কাড়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। আসন্ন নির্বাচনে ঘোষিত বেশিরভাগই হচ্ছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী। 
নালিতাবাড়ীতে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান মোকছেদুর রহমান লেবু, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মোশারফ হোসেন, উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক হাজী আমিনুল ইসলাম ও সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আছমত আরা আছমা।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন- শেরপুর জেলা কৃষক লীগ নেতা শামশাদ আলম সরকার, উপজেলা বিআরডিবির চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন রিপন, ইন্টারনেট ও ডিশ ব্যবসায়ী বাবুল হোসেন, সাবেক যুবলীগ নেতা মেহেদী হাসান রাজন, শেখ ফরিদ ও মেহেদী হাসান বিল্লাল। এছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্র্র্থী হলেন- বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আশুরা বেগম, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা, গারো আদিবাসী নেত্রী ক্লোডিয়া নকরেক কেয়া ও নোহেলিকা দিব্রা। তারা ইতোমধ্যেই গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।

বন্দরে ১১ প্রতিদ্বন্দ্বী
বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৫ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ১১ জনেরই প্রার্থিতা যাচাই-বাছাই শেষে  বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল পর্যন্ত নির্বাচন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রার্থীদের উপস্থিতিতে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হয়। 
 চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন-  বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এমএ রশিদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আবু সুফিয়ান, বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, জাতীয় পার্টির নেতা ও মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন এবং তার ছেলে মাহমুদুল হাসান। ভাইস চেয়ারম্যান পদের চার প্রার্থী হলেন- উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানু,  আলমগীর হোসেন, মোশাঈদ রহমান ও শাহিদুল ইসলাম জুয়েল। নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন হলেন- মাহমুদা আক্তার ও বর্তমান নারী ভাইস চেয়ারম্যান ছালিমা হোসেন।

বাগেরহাটে প্রার্থী ২৭
বাগেরহাটে প্রথম ধাপে তিনটি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে যাচাই-বাছাইয়ে সকল প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। বুধবার দুপুরে যাচাই-বাছাই শেষে ২৭ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচন রিটার্নিং কর্মকর্তা সেখ মুহাম্মদ জালাল উদ্দিন। বৈধ প্রার্থীরা হলেন সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সভাপতি সরদার নাসির উদ্দিন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রিজিয়া পারভিন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে সরদার মাসুদুর রহমান, শেখ মাহমুদ আলী, আমিরুল ইসলাম ও খান রেজাউল ইসলাম। এদের মধ্যে একক প্রার্থী হওয়ায় চেয়ারম্যান পদে সরদার নাসির উদ্দিন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রিজিয়া পারভিন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হচ্ছেন।
কচুয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নাজমা সরোয়ার, বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক কেএম ফরিদ হাসান, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মীর জায়েসী আশরাফী জেমস এবং প্রয়াত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম মাহফুজুর রহমানের ছেলে যুবলীগ নেতা মেহেদী হাসান বাবু। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাধবী রানী, হনুফা খাতুন ও মোসা. ইয়াসমিন আক্তার এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে ফিরোজ আহমেদ ও শেখ সুমন।
রামপাল উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মোয়াজ্জেম হোসেন, রামপাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জামিল হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শেখ আবু সাইদ, রামপাল উপজেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুল মান্নান ও জামায়াতে ইসলামী জেলা শাখার সহকারী সেক্রেটারি ইকবাল হোসেন। এছাড়া এই উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হোসনেয়ারা ও ছায়রা খাতুন এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে নূরুল হক, মোল্যা মাসুদ বিল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ, আসাদুজ্জামান ও মেহেদী হাসান (মিন্টু)।

শাহজাদপুরে নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থীরা
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শাহজাদপুরে সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে গোটা নির্বাচনী এলাকা। এদিকে নির্বাচন উন্মুক্ত ঘোষণা দেওয়ায় শাহজাদপুরে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক ডজন নেতা প্রচারে নেমেছেন । ইতোমধ্যেই উপজেলা সদর থেকে শুরু করে বিভিন্ন ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যন্ত প্রার্থীদের নানা রঙের পোস্টারে ছেয়ে গেছে । সম্ভাব্য প্রার্থীরা পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের হাটে-বাজারে, মাঠে-ঘাটে ও পাড়া-মহল্লায় লিফলেট বিতরণ, মতবিনিময় সভা, পথসভা ও উঠান বৈঠকের মাধ্যমে ভোটারদের কাছে নিজেদের পরিচিতি ও যোগ্যতা তুলে ধরে দোয়া ও ভোট প্রার্থনা করছেন। এমনকি নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নে কি কি কাজ করবেন তার অঙ্গীকার করছেন। এদিকে পুরো রমজান মাসে উপজেলা সদর থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মতবিনিময় সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন ছিল চোখে পড়ার মতো।
আসন্ন নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে যারা গণসংযোগ শুরু করছেন তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল হামিদ লাবলু, সহ-সভাপতি ও কৈজুরী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুস্তাক আহমেদ, যুবলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য নূর হোসেন সৈকত, পৌরসভার সাবেক মেয়র হালিমুল হক মিরু, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইউনুছ আলি,  শিল্পপতি গোলাম সাকলায়েন সেলিম। এসব প্রার্থীর মধ্যে অ্যাডভোকেট  আব্দুল হামিদ লাবলু, সাইফুল ইসলাম ও মুস্তাক আহমেদ অন্যদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে গণসংযোগে নেমেছেন পৌর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবে সোবহান শেখ সজল (মিন্টু), উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মারুফ হোসেন সুনাম, আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক সরকার ও সাইফুল ইসলাম প্রিন্স।

এদের মধ্যে মাহবুবে সোবহান শেখ সজল ও মারুফ হোসেন সুনাম কোমরবেধে প্রচারণায় নেমেছেন। অন্যদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এলিজা খান,  সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মৌসুমি খান, লাবনী ইসলাম, রুমি খাতুন প্রিয়া ও পপি সরকার পোস্টার- লিফলেট বিতরণ এবং পাড়া-মহল্লায় পথসভা ও উঠোন বৈঠকের মাধ্যমে গণসংযোগ করছেন। 

মোরেলগঞ্জে একমঞ্চে মুক্তিযোদ্ধারা
মোরেলগঞ্জে তৃতীয় ধাপে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে মাঠ এখন সরগরম, মুক্তিযোদ্ধারা একমঞ্চে, সর্বত্রই আলোচনার ঝড়। এবারে দলীয় প্রতীক না থাকলেও তৃণমূল নেতা-কর্মীরা হাইকমান্ডের নির্দেশনার অপেক্ষায়। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি প্রতিরোধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্য থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী খানকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থীর দাবি জানিয়েছেন ঐক্যবদ্ধ মুক্তিযোদ্ধারা। 
যুদ্ধকালীন উপজেলা মুজিব বাহিনীর প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মোসলেম উদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সুন্দরবন সাবসেক্টর যুদ্ধকালীন কমান্ডার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী খান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেনÑ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এমদাদুল হক, সহসভাপতি শফিকুর রহমান লাল, সাবেক অধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই খান, সাবেক অধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা নিহার রঞ্জন হালদার। 
এ সময় বক্তৃতা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এম কে আজিজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলম হাওলাদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবি সিদ্দিকী, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মুশফিকুর রহমান নাহার, শ্রমিক লীগ সভাপতি আলমগীর হোসেন বাদশা, সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন তালুকদার, স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ইলিয়াস হোসেন দুলাল, যুবলীগ নেতা খান হাসিবুর রহমান,  রাসেল হাওলাদার, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আজমিন নাহার সহ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

বিশ্বনাথে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বিভ্রান্তিতে 
বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ৬ জন প্রার্থী নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েছেন দলের নেতাকর্মীরা। তারা তফসিল ঘোষণার পর থেকেই রঙিন পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার, ফেস্টুন আর ওঠান বৈঠকের মাধমে প্রচার করে আসছেন। তবে একই দল থেকে ৬ চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ায় নেতাকর্মীরা পড়েছেন বিভ্রান্তিতে। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু নেতাকর্মী ভাগ হয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের সঙ্গে মাঠে থাকলেও অধিকাংশরাই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছেন। অনেকে নীরব ভূমিকা পালন করছেন। 
গত পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক এবং স্থানীয়ভাবে দলীয় নির্দেশনা থাকায় একক প্রার্থী ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এসএম নুনু মিয়া। ওই নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীক পাওয়ায় নেতাকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনে এককভাবে নির্বাচন করায় বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনে অবস্থা ঘোলাটে হয়ে গেছে। এই নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী আওয়ামী লীগ সমর্থিত ৬ চেয়ারম্যান প্রার্থীই কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ।

×