ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিনিধি দলে রয়েছে ক্যাম্পের হেড মাঝি, শেড-ব্লক মাঝি ও মসজিদের ইমাম

ভাসানচরে আবাসন প্রকল্প পরিদর্শনে ৪০ রোহিঙ্গা

প্রকাশিত: ২৩:০৮, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

ভাসানচরে আবাসন প্রকল্প পরিদর্শনে ৪০ রোহিঙ্গা

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য সরকার আবাসন প্রকল্প নির্মাণ করেছে ভাসানচরে। এতে ১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করতে পারবে। এসব সুবিধাদি দেখে উখিয়া টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের রাজি করাতে ভাসানচরে তৈরি করা আবাসন প্রকল্প পরিদর্শনে গেছেন ৪০ সদস্যের রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দল। জানা যায়, রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিতে আবাসন প্রকল্প ঘিরে প্রায় ১৩ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ, ১২০টি সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও চিকিৎসা অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। মালয়েশিয়া ফেরত দাবি ও পরে বঙ্গোপসাগর হতে উদ্ধার হওয়া ৩০৩ রোহিঙ্গা বর্তমানে ভাসানচরে বসবাস করছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা ওই রোহিঙ্গাদের তত্ত্বাবধান করে আসছে। শনিবার ভোরে উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পের ৪০ রোহিঙ্গা নেতাকে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের তত্ত্বাবধানে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রতিনিধি দলে রয়েছে বিভিন্ন ক্যাম্পের হেড মাঝি, শেড-ব্লক মাঝি এবং মসজিদের ইমাম। কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মাহবুবুল আলম তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলটি ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করবেন। ৮ সেপ্টেম্বর ক্যাম্পে ফিরে এসে তারা রোহিঙ্গাদের কাছে সেখানকার অবস্থা সম্পর্কে বর্ণনা করবেন। এর আগে ভাসানচরে যেতে নির্বাচিতদের শুক্রবার উখিয়ার কুতুপালং ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়। করোনা পরীক্ষা শেষে শনিবার ভোরে তাদের নিয়ে রওনা হন সশস্ত্র বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বাসযোগে প্রথমে চট্টগ্রাম যান রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা। সেখান থেকে নৌবাহিনীর সহায়তায় জলযানে চড়ে ভাসানচরে পৌঁছাবেন। আরআরআরসি মাহবুব আলম তালুকদার আরও জানিয়েছেন, সরজমিনে ভাসানচর আবাসন প্রকল্প পরিদর্শন করে সেখানকার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জানবেন। তাদের কথায় শিবিরের রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যেতে আগ্রহী হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে প্রায় ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ খলিলুর রহমান জানান, তারা ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের থাকার ব্যবস্থা ও অন্যান্য বিষয়ে সরজমিনে পরিদর্শন করে আবারও ক্যাম্পে ফিরে আসবে। এদিকে তারা ফিরে আসার পূর্বেই উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্প থেকে এক কদমও না নড়তে প্রত্যাবাসন বিরোধী চক্র অপতৎপরতা শুরু করে দিয়েছে। প্রত্যাবাসন ও ভাসানচরে স্থানান্তরে রাজি না হতে সন্ত্রাসীরা সাধারণ রোহিঙ্গাদের ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে বলে জানা গেছে। রেজিস্ট্রার্ড ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের সভাপতি হাফেজ জালাল আহমদ জানান, রোহিঙ্গারা ভাসানচরে চলে গেলে ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কার্যক্রম কিছুটা হলেও কমে যাবে। সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা কয়েকটি এনজিও এবং ক্যাম্পের বাইরে বসবাসকৃত পুরনো রোহিঙ্গা নেতাদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে সাধারণ রোহিঙ্গাদের জিম্মি করে রেখেছে।
×