ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলার নিসর্গের নান্দনিকতায় উজ্জ্বল অনুকুলের ক্যানভাস

প্রকাশিত: ১০:০২, ২ জুন ২০১৯

 বাংলার নিসর্গের নান্দনিকতায়  উজ্জ্বল অনুকুলের ক্যানভাস

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অধিকাংশ চিত্রপটে খুঁজে পাওয়া যায় প্রকৃতির কলরব। ক্যানভাসগুলো সযত্নে মেলে ধরেছে নিসর্গের নান্দনিকতা। রঙের প্রলেপ ও রেখার আঁচড়ে উদ্ভাসিত হয়েছে বাংলার রূপময়তা। সেখানে আছে শহর থেকে শুরু করে নদী, আকাশ, পাহাড় কিংবা বিশাল গাছের ঘন ছায়ার পাদদেশ। সুন্দরতম ভোরের স্নিগ্ধতা, বিশাল মাঠের বুকে সন্ধ্যা নামা অথবা চাঁদনী রাতের গল্পে বিভোর হয়েছে ক্যানভাস। এসবের সঙ্গে সহজাতভাবেই ঠাঁই পেয়েছে প্রকৃতিসংলগ্ন মা ও তার সন্তান; পারিপার্শ্বিকতা বা জীবনের বহুবিধ বিষয়। এভাবেই আপন চিত্রকর্মের বিষয়কে সাজিয়েছে চিত্রশিল্পী অনুকুল চন্দ্র মজুমদার। সে সব ছবির দেখা মেলে গুলশান দুই নং এভিনিউয়ের এজ গ্যালারিতে। প্রদর্শনীটির শিরোনাম ‘ডাউন অব ব্ল্যাক’। প্রদর্শনালয়ের দেয়ালে ঝুলে থাকা অনুকুলের চিত্রকর্মগুলোর সৃজনশৈলী স্বতন্ত্র রং, আবহ ও ঢঙে উজ্জ্বল। প্রকৃতির পথরেখায় বিচিত্র বিষয়ে ধাবিত হয়েছে তার চিত্রকলা। বলা চলে ছবিগুলো যেন শিল্পীর বোধ ও স্বপ্নের গল্পমালা। কিছু ছবিতে শিল্পী এঁকেছেন দিন-রাত্রির নিদারুণ দেখা গল্পের পা-ুলিপি। অনুকুলে ছবির মূল্যায়নে প্রখ্যাত শিল্পী মনিরুল ইসলাম বলেন, চিত্রকর্মগুলো বাঙালী ও বাংলারই রূপ। অনুকুল মজুমদারের কাজে আছে যত্নের ছোঁয়া। শিল্পের প্রতি তার যে দরদ ও দক্ষতা রয়েছে তার অনেকটাই প্রদর্শনীর ক্যানভাসগুলোয় উপস্থাপিত হয়েছে। নিজের আঁকা ছবি প্রসঙ্গে অনুকুল চন্দ্র মজুমদারের ভাষ্যটি এমন- আমাদের শহর, এই নদী, আকাশ, পাহাড়, বিশাল গাছের ঘন ছায়া আমাকে মোহাচ্ছন্ন করে তোলে। পাশাপাশি পারিপার্শি¦কতা, একটা পরিবারসহ নানা বিষয় প্রবেশ করে আমার ক্যানভাসে। নিজস্ব রং ও ঢঙে সেটাকেই উদ্ভাসিত করি। ধোঁয়াসা জীবনের মধ্যে ছবি এঁকে স্বপ্নের গল্প বলার চেষ্টা করি। যেখানে বেদনা-দুঃস্বপ্নের মাঝেও রোদের ফালি গায়ে লাগতে চায়, একটা সুন্দর ভোর হওয়ার গল্প, চাঁদনী রাতের গল্প, বিশাল মাঠের সন্ধ্যা নামার গল্প- এসব আমার সুখ স্বপ্নের গল্প বলা। ভোর হয়, বাস্তবতার ক্ষণে প্রয়োজনে ছবি আঁকতে বাধ্য করে। যতক্ষণ ক্যানভাসে থাকি মনে হয় ভাল আছি সুস্থ আছি। পাঁচ দশক সময়ে বুঝতে পারা দিনগুলো থেকে আজকের পরিবর্তন আধুনিকতার নেটওয়ার্ক, সমস্ত রিয়েলিটিকে সঙ্গে নিয়েই এগোয় আমার ছবির জমিন ও চারকোলের দাগ। এটা আমার বিন্দু বিন্দু নিজের জীবনের ব্যর্থতা উত্তরণের উপায়। চারকোলই আমার উত্তরণের উপায়, আমার হৃদয়ে কাঠ হওয়া গল্পের প্রধান উপাদান। বড় ক্যানভাসে যখন প্রথম দাগ দেই ভয় হয় মনে হয় স্থাপত্য নির্মাণের প্রথম মাটি খনন, বিশাল সমুদ্র পাড়ি দেয়ার মতো। শরীর-মন মেধার শক্তিতে অনিশ্চিত যাত্রায় এক সময় তীরের কিনারা মিলে। ৭৭টি চিত্রকর্মে সাজানো মাসব্যাপী প্রদর্শনীর শেষ দিন ছিল শনিবার।
×