ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বান্দরবান আওয়ামী লীগের নজর এবার উপজেলা নির্বাচনে

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ৫ জানুয়ারি ২০১৯

 বান্দরবান আওয়ামী  লীগের নজর এবার  উপজেলা নির্বাচনে

নিজস্ব সংবাদদাতা, বান্দরবান, ৪ জানুয়ারি ॥ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা ৬ বার আওয়ামী লীগ বান্দরবানে আসন ধরে রাখলেও গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলার ৭টি উপজেলায় ফলাফল বিপর্যয় হয়। ফলে এবার সতর্কতার সঙ্গে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হবে, যাতে ফল বিপর্যয় এড়ানো যায়। তাই এখন তৎপর জেলা আওয়ামী লীগ। জানা গেছে, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলে মার্চে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, আর এর অংশ হিসেবে ভাল ফলাফলের আশায় প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগ থেকে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনের পাশাপাশি ইতোমধ্যে দলটির পক্ষ থেকে দক্ষ ও পরিপক্ব এবং জনপ্রিয় নেতাদের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। দ্রুত এই বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসলাম বেবী বলেন, গতবারের মতো ফলাফল যাতে না হয়, সেই বিষয়ে এবার সতর্ক থেকে আমরা প্রার্থী নির্বাচন করব। আরও জানা গেছে, গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রুমা উপজেলায় দলটির প্রার্থী ছিলেন এ্যাডভোকেট বাসিং থোয়াই মারমা। তিনি বর্তমান চেয়ারম্যান জেএসএস নেতা অংথোয়াইচিং মারমার কাছে হেরে যান। এবার রুমায় আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী এ্যাডভোকেট বাসিং থোয়াই মারমা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উহ্লাচিং মারমা, সদর ইউপি চেয়ারম্যান শৈমং মারমা থাকলেও এক্ষেত্রে বাসিং থোয়াই’ কে এগিয়ে রাখছেন স্থানীয়রা। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক শফি উল্লাহ বিএনপির প্রার্থী তোফায়েল আহম্মেদের কাছে পরাজিত হন। এবার দল থেকে অধ্যাপক শফি উল্লাহ, আবু তাহের কোম্পানী, তসলিম ইকবাল চৌধুরী ও আলহাজ খাইরুল বাশার সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে থাকলেও শফিউল্লাহ বা খাইরুল বাশারকে দল থেকে প্রার্থী করা হতে পারে। অন্যদিকে বান্দরবান সদরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ক্যা সা প্রু বিএনপির প্রার্থী আব্দুল কুদ্দুসের কাছে হেরে গেলে এবার সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর, জেলা পরিষদের সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অমল দাশ। তবে এক্ষেত্রে মোজাম্মেল হক বাহাদুর এগিয়ে আছেন। জেলার আলীকদম উপজেলায় গতবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী জামাল উদ্দিন বিএনপির প্রার্থী আবুল কালামের কাছে পরাজিত হন। এবার আলীকদমে সম্ভাব্য প্রার্থী নাসির উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মং ব্রাচিং মার্মা ও জামাল উদ্দিনের নাম থাকলেও জনপ্রিয়তার কারণে মং ব্রাচিং মার্মাকে এগিয়ে রাখছেন দলের নেতাকর্মীরা। আরও জানা যায়, লামা উপজেলায় আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ ইসমাইল বিএনপির প্রার্থী থোয়াইনু অং মার্মার কাছে পরাজিত হলে এবার সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ইসমাইল, দলটির সাধারণ সম্পাদক বাথোয়ই চিং মার্মার নাম থাকলেও দলটির মধ্যে গ্রুপিং থাকার কারণে এবার বাথোয়ইচিংকে দলের প্রার্থী হিসেবে দেখা যেতে পারে। থানচিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থোয়হ্লা মং মার্মা স্বতন্ত্র প্রার্থী ক্যহ্লাচিং-এর কাছে হেরে যান। এক্ষেত্রে দলটির নেতা বাসোইচিং, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মং থোয়াই ম্যা রনি ও থোয়হ্লামং সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় থাকলেও ক্লিন ইমেজের কারণে বাসোইচিংকে প্রার্থী হিসেবে দেখা যেতে পারে। রোয়াংছড়িতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী চাহ্লা মং মার্মাকে জেএসএস-এর জেলা সাধারণ সম্পাদক ক্যাবা মং মার্মা পরাজিত করেন। এবার প্রার্থী হিসেবে আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক চাহ্লা মং মার্মা ও দলটির সহ-সভাপতি চহাইমং। তাদের দুজন থেকে যে কোন একজনকে আওয়ামী লীগ বেছে নিতে পারে প্রার্থী হিসেবে। এখন থেকে জোর প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতা, বর্তমান বাস্তবতা আর আগামী দিনে জেলায় বীর বাহাদুরের উন্নয়ন কর্মকা-ে সহায়তা করার জন্য যাকে দক্ষ মনে হবে তাকেই দল থেকে প্রার্থী করা হবে।
×