ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

টার্গেট তিন দফা দাবি আদায়

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের টানা কর্মসূচী ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ১৬ জুলাই ২০১৮

 ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের টানা কর্মসূচী ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তিন দফা দাবি আদায়ে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। তারা অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ও আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে। আগামী ১৮ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত দাবি আদায়ের জন্য টানা কর্মসূচী ঘোষণা করেছে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা। পেশাগত সমস্যাদি সমাধানের দাবিতে রবিবার বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স সার্ভিস এ্যাসোসিয়েশন সমন্বয় পরিষদের উদ্যোগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এ ঘোষণা দিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সমন্বয় পরিষদের সদস্য সচিব মোঃ সিরাজুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন পরিষদের আহ্বায়ক মোঃ ফজলুর রহমান খান, ঢাকা ওয়াসা ডিইএ’র সভাপতি আঃ মান্নান, সাধারণ সম্পাদক আরমান ভূইয়া, সওজ ডিপ্রকৌসের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মুন্তাসির হাফিজ, বিউবো ডিপ্রকৌসের সভাপতি আবুল কালাম আখন্দ, পিজিসিবি ডিপ্রকৌসের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মোঃ ইলিয়াস, রেলওয়ে ডিপ্রকৌসের সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন, ডেসকো ডিপ্রকৌসের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম শিমুল, প্রাইভেট সেক্টর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আতিকুর রহমানসহ বিভিন্ন সার্ভিস এ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে সমন্বয় পরিষদের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবি তুলে ধরা হয়। তাদের দাবি, প্রাথমিক নিযুক্তিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের একটি স্পেশাল ইনক্রিমেন্ট। ডিজাইন ও প্লানিংয়ে কর্মরত উপ-সহকারী প্রকৌশলীদের ৩টি স্পেশাল ইনক্রিমেন্ট দিতে হবে। পদোন্নতির কোটা শতকরা ৫০ ভাগে উন্নীত করতে হবে। আন্তর্জাতিক ইঞ্জিনিয়ারিং টিম কনসেপ্ট অনুযায়ী ডিগ্রী ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার এক ইস্টু ৫ অনুপাতে নিয়োগের বিধান রেখে সব সংস্থায় অর্গানোগ্রাম প্রণয়ন করতে হবে। বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ২০১৫ এবং ঢাকা ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ সংশোধনপূর্বক গেজেট প্রকাশ করতে হবে। দেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও টিএসসি’র শিক্ষক স্বল্পতা নিরসন করে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তি ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ভাতা বৃদ্ধির সুপারিশ বাস্তবায়ন এবং ইমার্জিং টেকনোলজি থেকে পাস করা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারী-বেসরকারী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও টিএসসিতে ব্যবহারিক ক্লাসের জন্য ল্যাব-ওয়ার্কসপ স্থাপন, টিটিসিতে কর্মরত ইনস্ট্রাক্টর, সিনিয়র ইনস্ট্রাক্টর, চীফ ইনস্ট্রাক্টর একই স্কেল প্রদানের অমানবিক প্রথা সংশোধন করে চাকরি বিধি প্রণয়ন করতে হবে। মাধ্যমিক স্কুল ও দাখিল মাদ্রাসায় এসএসসি (ভোক) কোর্স চালু করতে হবে। দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রাইভেট সেক্টরে কর্মরত ও কর্মপ্রত্যাশী ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে সুদবিহীন-স্বল্প সুদে ঋণ সহায়তা দিতে হবে। বেসরকারী সংস্থায় কর্মরত ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য ন্যূনতম বেতন স্কেল, পদ ও পদবী নির্ধারণ করে বেতন কাঠামো ঘোষণা করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, উল্লেখিত দাবি অভিলম্বে মেনে না নিলে কঠোর অন্দোলনের ডাক দেয়া হবে। সারাদেশে ৫ লাখের বেশি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার নানা বৈষম্যে রাখা হচ্ছে। তাদের ন্যয্য দাবি মেনে নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেয়ার নির্দেশ দিলেও এখন পর্যন্ত কেন তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। কোন অদৃশ্য ইশারায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। দাবির বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সুপারিশও রয়েছে। এরপরও কেন দাবি পূরণ করা হচ্ছে না। একটি মহল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সরকারের বিরুদ্ধে উস্কে দেয়ার জন্য ন্যায্য দাবি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীকে বিতর্কিত করার জন্য মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চক্রটি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আমরা এই শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থেকে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করে যাচ্ছি। এক শ্রেণীরে দেশ প্রেমহীন আমলা চক্র যারা এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন এই ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির আওতায় আনার জন্য। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১২ মে ২১তম জাতীয় সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা মহানগর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ সংশোধনসহ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের পেশাগত সমস্যাদি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দেন। এরপর দীর্ঘদিন কেটে গেলে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই আমলা চক্রটি। আমাদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিকভাবে কর্মসূচী ঘোষণা করেছি। এই কর্মসূচীর আগেই সরকার আমাদের দাবি মেনে নেবে বলে আশা রাখছি। সংবাদ সম্মেলনে ৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য নি¤েœাক্ত আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়েছে। ১৮ জুলাই সকাল ১১টায় ঢাকায় শিক্ষা ভবন চত্বর, ১৯ জুলাই সকাল ১১টায় ঢাকা ওয়াসা ভবন এবং ২২ জুলাই সকাল ১১টায় ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও মিরপুরস্থ বিকেটিটিসি ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ সমাবেশ।
×