ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

শেকড় চাষে ভাগ্য বদল

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৯ জুলাই ২০১৮

  শেকড় চাষে ভাগ্য বদল

সামদ্রিক শেকড় সম্প্রতি নতুন সুপারফুড হিসেবে বেশ নাম কুড়িয়েছে। টুথপেস্ট, ওষুধ এবং শ্যাম্পুতে এই শেকড়ের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। ব্যাপক চাহিদার কারণে তাঞ্জানিয়ার আধা স্বায়ত্তশাসিত দ্বীপ জাঞ্জিবারে এই শেকড়ের একটি বড় ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। এবং এটি চাষাবাদে প্রধান ভূমিকা রাখছেন নারীরা। ভোর হতে না হতেই একদল নারী মাথার ওপর দড়ি ও লাঠি নিয়ে সমুদ্র সৈকতের দিকে হেঁটে যান এবং যে অংশে জোয়ারের পানি কম আসে সেখানে এই শেকড় বুনে দেয়। তারা প্রথমে হাঁটু সমান পানিতে নেমে সৈকতের বালুর মধ্যে লাঠিগুলো নির্দিষ্ট দূরত্বে গেঁথে দেন। তারপর শেকড়’র ছোট ছোট টুকরোগুলোকে পাশাপাশি দড়ি দিয়ে বেঁধে ওই মালাটি একেকটি লাঠির সঙ্গে বরাবর টান টান করে মেলে দেন। মাত্র ছয় সপ্তাহে এই ছোট চারাগুলো দশগুণ পর্যন্ত বেড়ে যায় এবং তখনই ফসল তোলার জন্য এগুলো প্রস্তুত হয়। এর মধ্যে কিছু খাওয়া হয় তবে বেশিরভাগই শুকিয়ে স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে রফতানি করা হয়। এই শেকড়ের চাষাবাদ এই নারীদের শুধু কাজের জায়গা নয় বরং বাস্তবতা থেকে একটু পালাবার ফুরসত দেয়। এটাই তাদের, কৌতুক বলে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ার জায়গা। যেখানে ইচ্ছে মতো গালগল্পও করা যায়। নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকে যখন সৈকতে এই শেকড়ের বা সিডউইয়ের চাষাবাদ শুরু হয়, তখন পুরুষরা মনে করতেন এই কাজ করে কোন লাভ নেই। তারা মাছ ধরা বা পর্যটন সংশ্লিষ্ট কাজ করতেই পছন্দ করতেন। কেউ কেউ এটাও চান না যে তাদের স্ত্রী এমন কাজ করুক। এর কারণ হিসেবে পূর্ব উপকূলীয় পাজে গ্রামের এক কমিউনিটি নেতা মোহাম্মদ জালে বলেন, ‘আমি মনে করি এই সিডউইয়ের ব্যবসা পরিবার-পরিকল্পনায় উৎসাহিত করে। কারণ সমুদ্র সৈকতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা থাকা এরপর বাড়ির কাজ করার পর নারীরা খুব ক্লান্ত হয়ে যায়। তখন তারা সন্তান নেয়ার সময় করতে পারে না’। এসব ভেবে জালে শুরুতে তার প্রথম স্ত্রীকে অন্যদের সঙ্গে যেতে অনুমতি দেননি। পরে তার স্ত্রী অনেক দুঃখ পেয়ে কান্নাকাটি করলে তিনি রাজি হন। শুধু তাই এ ব্যবসায় অনেক নারীর ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে। অনেকে এখন পুরুষের পাশাপাশি সংসারে অর্থনৈতিক সহায়তা করতে পারছে। দেশটির বুয়েলে গ্রামের সিডউই কৃষক সাফিয়া মোহাম্মদ, এই কাজের মাধ্যমে নিজের জীবনে আমূল পরিবর্তন আনতে পেরেছেন। -বিবিসি অবলম্বনে
×