ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

আইসল্যান্ডকে ০-২ গোলে হার‍াল নাইজিরিয়া

আর্জেন্টিনার আশা নাইজিরিয়ার জয়ে উজ্জ্বল!

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২৩ জুন ২০১৮

আর্জেন্টিনার আশা নাইজিরিয়ার জয়ে উজ্জ্বল!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে বিধ্বস্ত হওয়ার পর আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ ভাগ্য খাদের কিনারায়। শুক্রবার রাতে ‘ডি’ গ্রুপের ম্যাচে আইসল্যান্ড জয় পেলে আরও বিপদে পড়ত দিয়েগো ম্যারাডোনার দেশ। তখন বিশ্বকাপ থেকে বিদায় একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যেত। থাকত শুধু খাতাকলমে সম্ভাবনা। কিন্তু সেটা হয়নি। নাইজিরিয়া ২-০ গোলে আইসল্যান্ডকে হারিয়ে দেয়ায় বিশ্বকাপে টিকে থাকার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে লিওনেল মেসি, সার্জিও আগুয়েরোদের। এই ম্যাচটির দিকে চেয়েছিল গোটা বিশ্ব। প্রায় সবাই চাচ্ছিলেন নাইজিরিয়া যেন জয় পায়। অবশেষে সেটাই হয়েছে। নাইজিরিয়াকে জিতিয়েছেন তরুণ ফরোয়ার্ড আহমেদ মুসা। দলের পক্ষে ম্যাচের ৪৯ ও ৭৫ মিনিটে দুটি গোলই করেন তিনি। ম্যাচে আইসল্যান্ড একাধিক সহজ সুযোগ হাতছাড়া করায় হারতে হয়েছে। প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করা দলটি ৮২ মিনিটে পেনাল্টি থেকেও গোল করতে ব্যর্থ হয়েছে। দারুণ এই জয়ে নাইজিরিয়ারও নকআউট পর্বে খেলার সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে। বর্তমানে ‘ডি’ গ্রুপে দুটি করে ম্যাচ শেষে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীষের্ আছে ক্রোয়েশিয়া। এক ম্যাচ হাতে রেখে ক্রোয়াটদের শেষ ষোলোতে খেলাও নিশ্চিত হয়েছে। এখন বাকি তিন দলের মধ্য থেকে একটি দল পরের রাউন্ডে যাবে। এক্ষেত্রে ৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে নাইজিরিয়া। এখনও গ্রুপে চার দলের মধ্যে চতুর্থ আর্জেন্টিনা। দুই ম্যাচে তাদের পয়েন্ট মাত্র ১। তৃতীয় স্থানের আইসল্যান্ডের পয়েন্টও ১। তবে গোল পার্থক্যে এগিয়ে আইসল্যান্ড। আর্জেন্টিনার বর্তমান গোল পার্থক্য যেখানে ৩ সেখানে আইসল্যান্ডের ২। ২৬ জুন নিজেদের শেষ গ্রুপ ম্যাচে মুখোমুখি হবে নাইজিরিয়া-আর্জেন্টিনা ও আইসল্যান্ড-ক্রোয়েশিয়া। নাইজিরিয়ার বিরুদ্ধে জিতলেই আর্জেন্টিনার নকআউট পর্বে খেলা নিশ্চিত হতে পারে। কারণ, তখন মেসিদের পয়েন্ট হবে চার। আর আইসল্যান্ড যদি ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে দেয় সেক্ষেত্রে আবার বাদ পড়তে হবে আর্র্র্জেন্টিনাকে। কেননা গোলগড়ে সবার নিচে তারা। কিন্তু দারুণ ফর্মে থাকা ক্রোয়েশিয়াকে হারাতে পারবে না আইসল্যান্ড, এমনটাই ভাবছেন সবাই। সেক্ষেত্রে নাইজিরিয়াকে হারিয়ে দিলেই কেল্লাফতে আর্জেন্টিনার। কিন্তু ম্যাচটি যদি ড্র হয় তাহলে আর কোন সম্ভাবনাই থাকবে না আর্জেন্টিনার। পরের পর্বে যেতে হলে আর্জেন্টিনাকে যেখানে জিততেই হবে সেখানে নাইজিরিয়াকে ড্র করলেই চলবে। তাই আফ্রিকান সুপার ঈগলরা সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবে না, এটাই স্বাভাবিক। এ কারণে আপাতদৃষ্টিতে নাইজিরিয়ার জয়ে আর্জেন্টিনার সম্ভাবনা বাড়লেও সেটা বাস্তবে রূপ দিতে কঠিন পরীক্ষাই দিতে হবে মেসি-মারিয়াদের। এদিকে ক্রোয়েশিয়ার কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার পর বাংলাদেশের আর্জেন্টিনার ভক্ত-সমর্থক-অনুরাগীদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। নিজেদের আবেগ-কষ্টগুলো শেয়ার করছেন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে। জনকণ্ঠের পাঠকদের জন্য তেমনই কিছু স্ট্যাটাস এখানে দেয়া হলো। একজন লিখেছেন, অন্যের হাতে নিজের ভাগ্য তুলে দেয়ার কথা ছিল না মেসির। তবু তাই করতে হলো এই আর্জেন্টাইনকে। অন্যজন লিখেছেন, ইতিহাস সাক্ষী, আর্জেন্টিনা যতবার বিশ্বমানের কোচ নিয়ে বিশ্বকাপে গিয়েছে ততবারই ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। অথচ তাদের ছিল ওয়ার্ল্ড ক্লাস ফুটবলার। আরেকজন লিখেছেন, ২০০২ সালে সর্বকালের সেরা টিম নিয়েও আর্জেন্টিনা গ্রুপ পর্বেই বাদ পড়ে যায়। বিশ্ববিখ্যাত কোচ মার্সেলো বিয়েলসা ভুল ফর্মেশন (৩-৪-৩), রিকুয়েলমেকে সাইডবেঞ্চে বসিয়ে রাখা এবং কোচের একগুঁয়েমি এজন্য দায়ী। ২০০৬ আসরে কোচ পেকারম্যান জেনেত্তি ও মেসিকে বিকল্প হিসেবে মাঠের বাইরে রেখে দেয়। সেবারও অনেক ভাল খেলে কোয়ার্টারে বিদায় নেয় তারা। ২০১০ সালে কোচ ছিল ম্যারাডোনা। তিনি কি করে গেছেন, তা সবাই জানে। তার না ছিল না কোন গেম প্ল্যান! অথচ দলে ছিল বিশ্বমানের কিছু ফুটবলার। ২০১৮ সালে আর্জেন্টিনাতেও প্লেয়ারের কোন অভাব নেই। ইকার্দির মতো প্লেয়ারকে দলেই নিলেন না কোচ সাম্পাওলি। আর সেই ২০০২-এর বিয়েলসার মতোই ফালতু ফর্মেশন। পরিণামে ফল সেই আগের মতোই গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়ার মতো অবস্থায়। আরেকজন লিখেছেন, সাম্পাওলি বেশি কিছু করে নাই! সে মেসির স্বপ্নটা নষ্ট করছে। মেসিকে একটা বিশ্বকাপ দেয়া থেকে আটকে রেখেছে। কোটি কোটি মেসি ফ্যান, আর্জেন্টিনা ফ্যানের আশা-ভরসা-স্বপ্নকে মাটিচাপা দিয়েছে। আরেকজন লিখেছেন, আর্জেন্টিনা যদি আর সামনে যেতে না পারে, লিওনেল মেসির উচিত নিজের নাম আর কলঙ্কিত না করে অনতিবিলম্বে অবসরে যাওয়া। আর্জেন্টিনা দল আগে শিখুক মেসিকে ছাড়া কিভাবে খেলতে হয়।
×