ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

জমে উঠেছে গ্রামীণ জনপদে ঈদের কেনাকাটা

প্রকাশিত: ০৬:৫৭, ৫ জুন ২০১৮

জমে উঠেছে গ্রামীণ জনপদে ঈদের কেনাকাটা

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ৪ জুন ॥ পবিত্র মাহে রমজানের শেষ সপ্তাহে জমে উঠেছে গ্রামীণ জনপদে ঈদের কেনাকাটা। অন্যন্য বছরের মতো এবারো মেয়েদের পছন্দ বিদেশী পোশাক। তাই সকাল থেকে তারা ছুটছে শপিংমলের দিকে। অন্যরা পছন্দের পোশাকটি কিনে নেয়ার আগেই কিনতে হবে নিজের পছন্দের পোশাক। পাশাপাশি প্রিয়জনকে নতুন পোশাক পছন্দ করে কিনে দিতেও ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতারা। সুতরাং সব মিলিয়ে জমে উঠেছে ঈদ মার্কেটে কেনাবেচা। দেশীয় বাহারি রঙের পোশাকের পাশাপাশি বিদেশী পোশাক সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। সোমবার বেলা ১১টার দিকে মাদারীপুর পুরান বাজার বিভিন্ন শপিংমলে গিয়ে দেখা গেছে, ঈদকে উপলক্ষে সব শ্রেণী-পেশার মানুষ ছুটে এসেছেন বিপণি বিতানগুলোতে। ক্রেতা সাধারণকে আকৃষ্ট করতে দোকানিরা বাহারি রঙের দেশী-বিদেশী পোশাক টানিয়ে রেখেছেন। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। ছেলেরা পছন্দ করে বেশি কিনছেন কিলার, ট্রাম্প, মুনলাইট নামের জিন্স প্যান্ট ও শার্ট-পাঞ্জাবি। মেয়েরা কিনছেন ঝোঁক ‘পিউ, পামেলা, পাংচুয়া, কিংবা ‘বোঝে না সে বোঝে না’ ইত্যাদি। মেয়েরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে ভারতীয় স্টার জলসা, স্টার পাস ও জি-বাংলা সিরিয়ালের বিভিন্ন নামে মার্কেটে আসা পোশাকের দিকে। দাম একটু বেশি হলেও ক্রেতাদের কোন অভিযোগ নেই। বরং পছন্দের পোশাকটি কিনতে পেরে খুশিই। পুরান বাজার ঈদের পোশাক কিনতে আসা কলেজছাত্রী সুবর্ণা আক্তার জেসিকা বলেন, ‘আমি পালকি শপিংমল থেকে পছন্দের পোশাক ও একটি নতুন ধরনের গাউন কিনেছি। পোশাকটি আমার খুব পছন্দ হয়েছে, খুব ভাল লাগছে। এখন ম্যাচ করে স্যান্ডেল কিনব।’ এদিকে বিক্রেতারা বলছেন কয়েক বছর ধরে ভারতীয় সিরিয়ালের নামে ও অনুকরণে তৈরি পোশাকের চাহিদা বেশি ছিল। এবার সে চাহিদা আগের চেয়ে অনেক বেশি। ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী পোশাক দিতে পারায় খুশি ব্যবসায়ীরা। সোহেল রানা নামে এক বিক্রেতা বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর আমাদের বিক্রি বেশ ভাল। চাহিদা অনুযায়ী সব ধরনের পোশাক তুলেছি। দাম ক্রেতাদের নাগালে থাকায় পছন্দের পোশাক কিনতে পারছেন ক্রেতারা। তবে ভারতীয় পোশাকের চেয়ে আমাদের দেশের তৈরি পোশাকের মান ভাল। তবুও ক্রেতাদের বেশি পছন্দ ভারতীয় পোশাক।’ পোশাকের পাশাপাশি জুতা-স্যান্ডেল ও প্রসাধনীর দোকানেও প্রচ- ভিড়। এ ভিড় থাকবে ঈদের আগের দিন গভীর রাত পর্যন্ত। যশোর স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস জানায়, একটা সময় উৎসবের শাড়ির সঙ্গে বিভিন্ন নাম জুড়ে দেয়া হতো। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হিন্দি সিরিয়াল ও মুভির নামের সঙ্গে জোড়া হতো। এই যেমন বীরজারা, কনক, কারিনা, সানি লিওন বা চেন্নাই এক্সপ্রেস। সময়টা এখন বদলে গেছে। পাল্টেছে মানুষের রুচি। উৎসবের শাড়ি মানেই এখন মসলিন, জামদানি, জর্জেট, নেট, তসর বা সিল্ক। তবে এবার জর্জেট ও নেটের জমকালো নক্সার দেশী শাড়ির পাশাপাশি বিদেশী শাড়িও দখল করে আছে যশোরের ঈদবাজার। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রং আর নক্সাতেই শুধু নয়, শাড়ির উপাদানে আছে নতুনত্ব। আঁচল ও পাড় জুড়ে আছে নানা কাজ। প্রিন্টের সূতি শাড়ির জমিনটা এবার বেশ ভরাট। কাতান, হাফসিল্ক বরাবরের মতো এবারেও রয়েছে ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায়। এসব শাড়ির জমিন জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের এ্যামব্রয়ডারি ও হালকা কারচুপির কাজ। সব বয়সীদেরই শাড়ির প্রতি আগ্রহ রয়েছে বলে জানান বিক্রয়কর্মীরা। এবারের ঈদ আয়োজনে বড় বাজার, সিটি প্লাজা, মুজিব সড়কের অভিজাত শোরুমগুলোতে আড়ং, রঙের শাড়ির পাশাপাশি টাঙ্গাইলের জামদানি, রাজশাহীর সিল্ক, মিরপুরের কাতান শাড়ি তোলা হয়েছে। দেশীয় শাড়ির পাশাপাশি রাখা হয়েছে ভারত ও ভারতের লক্ষেèৗ থেকে আমদানি করা শাড়িও। সব শ্রেণীর ক্রেতার কথা চিন্তা করে বড় বাজারের পুরাতন শাড়ির দোকান মনসা বস্ত্রালয়ে তোলা হয়েছে শাড়ি। এখানের বিক্রয় প্রতিনিধি বিদ্যুত জানান, ‘দোকানে ৫শ’ টাকা থেকে ১২ হাজার টাকার শাড়ি ঈদ উপলক্ষে তোলা হয়েছে। বরাবরের মতো টিস্যু, জামদানি, জুট জামদানির চাহিদা বেশি।’ তাঁত কুটিরের স্বত্বাধিকারী তৈয়ব বিশ্বাস রানা জানান, ‘ঈদ বাজার জমে উঠেছে। ক্রেতারা শাড়ি কিনছেন। তবে গত বছরের তুলনায় এবছর বেচাবিক্রি সেভাবে হচ্ছে না।’ তাঁত কুটির থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকার শাড়ি কিনতে পারবেন ক্রেতারা।
×