স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, বর্তমান সরকার সমুদ্র বিজয় করেছে, মহাকাশও বিজয় করেছে, কিন্তু দেশের মানুষের হৃদয় জয় করতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের মানুষের হৃদয় জয় করেছে জাতীয় পার্টি। শত অত্যাচার আর নিপীড়নের পরও শুধু মানুষের ভালবাসায় বেঁচে আছে জাতীয় পার্টি। তাই প্রতিদিনই দলে দলে মানুষ জাতীয় পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন। অনেকেই যোগাযোগ করছেন আমাদের সঙ্গে। সবাই এখন জাপার ছাতার নিচে সমবেত হতে আগ্রহী। কারণ মানুষ অনুধাবন করেছে জাতীয় পার্টি দেশবাসীকে শান্তি ও নিরাপদে রাখতে পারে।
শনিবার গুলশানের ইমানুয়েলস কনভেনশন সেন্টার মিলনায়তনে সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম আমিনুল ইসলাম পিন্টু, জাতীয় পার্টির (জেপি) যুগ্ম-মহাসচিব মাহবুবুর রহমান লিপটন ও প্রকৌশলী মহিউল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শতাধিক নেতা-কর্মী আনুষ্ঠানিকভাবে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাতে ফুল দিয়ে জাপায় যোগ দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে বলেন, আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে জাতীয় পার্টির সরকার রোহিঙ্গাদের সব দায়িত্ব নেবে। বর্তমান সরকারকে রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধানের আহ্বানও জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ দূত বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। এই সমস্যা সহজেই সমাধান হবে না তাও অনুমান করা যাচ্ছে। তাই আমাদের উচিত হবে সম্মিলিতভাবে সঙ্কট সমাধানে কাজ করা।
এরশাদ বলেন, দেশের মানুষকে আর বোঝাতে হবে না, তারা বুঝে গেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দিয়ে দেশের দুর্নীতি, দুঃশাসন, দলবাজি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি বন্ধ করা যাবে না। মানুষ বুঝেছে এখন পরিবর্তন আনতে হবে এবং তা জাতীয় পার্টির পক্ষেই সম্ভব। সাধারণ মানুষের মাঝে জাতীয় পার্টিকে নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে, তাই বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীরা এখন প্রতিদিনই জাতীয় পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন। আগামী নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আরও অনেকেই যোগ দেবেন জাতীয় পার্টিতে। তিনি বলেন, যেখানেই যাচ্ছি সাধারণ ভোটারদের কাছ থেকে বিপুল সাড়া মিলছে। সবাই বলছেন, আগামীতে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় আসবে। কারণ সবাই এখন জাতীয় পার্টির শাসনামলে ফিরতে চান। আমরা এজন্য প্রস্তুত। দলের নেতাকর্মীরাও এখন মানুষের সঙ্গে আছে।
তিনি আরও বলেন, এখন মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। ঘরে থাকলে খুন আর ধর্ষণ, আর রাস্তায় বের হলেই গাড়ি চাকায় পিষ্ট হওয়ার আশঙ্কা। দেশে সুশাসনের অভাব, কেবল জাতীয় পার্টিই দেশের মধ্যে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চাইতে হবে, আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টিই বিজয়ী হবে। তিনি তিন শ’ আসনেই নির্বাচনে প্রস্তুতির কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এমপি, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, এসএম ফয়সাল চিশতী, আজম খান ও শফিকুল ইসলাম সেন্টু। উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, মেজর খালেদ আখতার ও ব্যারিস্টার দিলারা খন্দকার। চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নুরু, আমানত হোসেন আমানত প্রমুখ।
স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে এরশাদের অভিনন্দন ॥ দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সফলভাবে উৎক্ষেপণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি জাতীয় পার্টির চেয়াম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। স্যাটেলাইট বিশে^র ভিআইপি ক্লাবে ৫৭তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির এই প্রকল্প ও প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পৃক্তদেরও শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি।
এক অভিনন্দন বার্তায় সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ বলেন, ১২ মে রাত দুটা ১৪ মিনিটে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সফলভাবে উৎক্ষেপণ জাতির জন্য সম্মান ও গৌরবের। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সফল পরিচালনায় বিশ^ দরবারে বাংলাদেশের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশনগুলোকে ভাড়া বাবদ বিশাল অঙ্কের টাকা আর অন্য কোন দেশকে দিতে হবে না। এছাড়া ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, ভি-স্যাট ও বেতারসহ চল্লিশ ধরনের সেবা নিশ্চিত হবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে। স্যাটেলাইট যুগে বাংলাদেশের প্রবেশকে সাহসী সিদ্ধান্ত বলেও মনে করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ। তিনি বলেন, এই উপগ্রহ সাফল্যের সঙ্গে উৎক্ষেপণের দিনটি আমাদের জাতীয় জীবনের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: