ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

৮ ফেব্রুয়ারি নিজ অবস্থানে সজাগ ও সতর্ক থাকবে ১৪ দল

প্রকাশিত: ০৬:০১, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

৮ ফেব্রুয়ারি নিজ অবস্থানে সজাগ ও সতর্ক থাকবে ১৪ দল

সংসদ রিপোর্টার ॥ পাল্টা কর্মসূচী না দিলেও ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার রায়ের দিন নিজ নিজ অবস্থানে সজাগ ও সতর্ক অবস্থানে থাকবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। জোটের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতৃত্বাধীন সাম্প্রদায়িক অপশক্তি দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। কিন্তু দেশের জনগণ তাদের কোন ষড়যন্ত্রই বাস্তবায়িত হতে দেবে না। রায়ের দিন নিজ নিজ কার্যালয়ে ১৪ দলের নেতাকর্মীরা সজাগ ও সতর্ক অবস্থানে থাকবে। একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার ৬ দফা দাবি নাকচ করে দিয়ে ১৪ দল বলেছে, কোন অসাংবিধানিক দাবি মানা হবে না। সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই আগামী নির্বাচন হবে। সোমবার রাজধানীর ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ের পাশে নির্বাচনী অফিসে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে। বৈঠক থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত রাষ্ট্রপতি প্রার্থী এ্যাডভোকেট মোঃ আবদুল হামিদকে ১৪ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি তাঁকে সর্বসম্মতভাবে সমর্থন জানানো হয়। বৈঠক শেষে ১৪ দলের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আদালত যা রায় দেবে জনগণ নিশ্চয়ই সেটা দেখবে। রায়ে কে সংক্ষুব্ধ হলো, কে খুশি হলো; এটা দেখার দরকার নাই। রায় যেটা হওয়ার হবে। দুর্নীতি যদি কেউ করে থাকে, দুর্নীতি যদি প্রমাণিত হয়- তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে রায় দেয়ার অধিকার নিশ্চয়ই আদালতের রয়েছে। তবে মনে হয়, চোরের মন পুলিশ পুলিশ। কথা নাই বার্তা নাই, বিএনপি তাদের গঠনতন্ত্র থেকে ৭ ধারা বাতিল করে দিল। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির সর্বশেষ লক্ষ্য হলো যে কোন মূল্যে আগামী নির্বাচনকে ভ-ুল করে আগামীতে একটি অসাংবিধানিক সরকারকে ক্ষমতায় আনা। তা বিএনপি নেতাদের আচার-আচরণে বারবার প্রমাণ হচ্ছে। বিএনপি কার্যনির্বাহী বৈঠকে নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙ্গে দেয়াসহ দলটির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ছয়দফা দাবির সমালোচনা করে তিনি বলেন, তাদের প্রতিটি দাবিই অসাংবিধানিক। এগুলো আগামী নির্বাচনকে ভ-ুল করার জন্যই একটি কূটকৌশল। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এদেশে কোন অযৌক্তিক অসাংবিধানিক দাবি মেনে নেয়া হবে না। যারা অসাংবিধানিক ধারা চেষ্টা চালায় তাদের বিরুদ্ধে ১৪ দল অতীতের মতো আবারও মাঠে নামবে। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, খালেদা জিয়া হাস্যকর বক্তব্য দিয়ে বলেছেন তাঁর সঙ্গে নাকি প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সেনাবাহিনী আছে! সবাই যদি সঙ্গে থাকে তাহলে নিরপেক্ষ সরকার দাবি করেন কেন? তিনি এসব কথা বলে প্রশাসন, বাহিনী লোকদের উস্কানি দিচ্ছেন। বাহিনীর সদস্যরা কারও ব্যক্তিগত লোক নয়। যেই সরকার আসবে সেই সরকারের অধীনেই তারা কাজ করবে। এটাই তাদের কাজ। আর খালেদা জিয়া প্রশাসনকে উস্কানি দিচ্ছেন। হাইকোর্টের সামনে পুলিশের ওপর বিএনপির কর্মীদের হামলা চালানো নিয়ে মন্ত্রী বলেন, এটা কি কোন রাজনৈতিক দলের কাজ? এরা তো ডাকাতের দল, সন্ত্রাসী দল। তা না হলে পুলিশের ওপর এভাবে কেউ হামলা চালাতে পারে না। পুলিশ ওই দিন অনেক ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। আদালতের রায়ের আগে বিএনপির এ ধরনের কর্মকা- হলো একটি মহড়া। এটা তো জনগণের শক্তি নয়, এটা গুন্ডামি ও ডাকাতির শক্তি। আমরা বিশ্বাস করি এ ধরনের শক্তিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দক্ষতার সঙ্গে মোকাবেলা করবে। ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম আরও বলেন, দেশের আদালতের ওপর আমাদের আস্থা আছে। আমরা আইনের শাসনে বিশ্বাস করি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলও এটা বিশ্বাস করে। আইন-আদালত তার দায়িত্ব পালন করবে সংবিধান অনুযায়ী। অথচ আজকে আদালতের রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপি পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, আমরা সবসময় বলে এসেছি, আদালত তার বিজ্ঞ বিচারিক বিবেচনা অনুযায়ী যেকোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সেটা পক্ষেও যেতে পারে, বিপক্ষেও যেতে পারে। এটা আদালতের ব্যাপার। আইনের ব্যাপার। কেউ যদি সংক্ষুব্ধ হয় তাহলে উচ্চ আদালতে যেতে পারে। এ নিয়ম সব সময় হয়ে আসছে। অতীতেও হয়েছে ভবিষ্যতেও একই রকম হবে। তিনি বলেন, আদালতের রায় কোন কথা বলা উচিত হবে না। তবে ১৪ দল সজাগ আছে ও থাকবে। আমরা শুধু ৮ তারিখেই নয়, আগামী নির্বাচনের আগ পর্যন্ত মাঠে থাকব। এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করার স্বার্থে মাঠে থাকব। আর উন্নয়নের শাসনকে জনগণের সামনে তুলে ধরা ও বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য সম্পর্কে জনগণকে সচেতন ও সজাগ করতে পর্যায়ক্রমে সকল বিভাগীয় শহরে জনসভা করবে ১৪ দলীয় জোট। কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডাঃ ওয়াজেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈঠকে ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা, সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া, জাসদের নাজমুল হক প্রধান, জেপির শেখ শহিদুল ইসলাম, গণতন্ত্রী পার্টির শাহাদাত হোসেন, ডাঃ শহীদুল্লাহ শিকদার, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডাঃ অসিত বরণ রায়, তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, গণআজাদী লীগের এস কে শিকদার, আওয়ামী লীগের খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, একেএম এনামুল হক শামীম, ড. হাছান মাহমুদ, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, অসীম কুমার উকিল, মৃণাল কান্তি দাস, আফজাল হোসেন, আব্দুস সাত্তার, আমিনুল ইসলাম আমিন, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×