ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষের পর কুমিল্লা মেডিক্যাল বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ৬ জানুয়ারি ২০১৮

ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষের পর কুমিল্লা মেডিক্যাল বন্ধ ঘোষণা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কুমিল্লা, ৫ জানুয়ারি ॥ কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন ও আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ১৫ ছাত্র আহত হয়েছে। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ২৩তম ব্যাচের ছাত্র তৌফিক ও ইরফানুল হককে ঢাকা মেডিক্যালে প্রেরণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে কলেজের দুটি হোস্টেলে দফায় দফায় এ সংঘর্ষ চলে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত। এ ঘটনায় আগামী ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম ও সকল আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করায় শুক্রবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ করেছে। ঘটনা তদন্তে কলেজের উপাধ্যক্ষ ডাঃ জাহাঙ্গীর হোসেনকে প্রধান করে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। শিক্ষার্থীরা জানান, বৃহস্পতিবার কলেজে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনসহ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগ নেতা ডাঃ আবদুল হান্নান ও ডাঃ হাবিবুর রহমান পলাশ গ্রুপের নেতাকর্মীরা সশস্ত্র অবস্থায় গভীর রাতে আবাসিক হোস্টেলে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। গভীর রাত থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ পরে কলেজের বীরউত্তম ছাত্রাবাস ও শেখ রাসেল ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় শুক্রবার ভোর পর্যন্ত চলা ওই সংঘর্ষে অন্তত ১৫ ছাত্র আহত হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত কলেজের ২৩তম ব্যাচের ছাত্র তৌফিক ও ইরফানুল হককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য তৌফিককে স্কয়ারের আইসিইউতে নেয়া হয়েছে। অপর আহতদের কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও নগরীর বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এদিকে হামলায় গুরুতর আহত ৫ম বর্ষের ছাত্র তৌফিকের মৃত্যুর গুঞ্জন শুক্রবার সকাল থেকে ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ক্যাম্পাস ও স্থানীয় এলাকায় টানটান উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ কিংবা পুলিশের দায়িত্বশীল কেউ তৌফিক মারা যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেনি। সূত্র জানায়, এর আগেও ছাত্রলীগ নেতা ডাঃ আবদুল হান্নান ও ডাঃ হাবিবুর রহমান পলাশ গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুদিন শান্ত ছিল। কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডাঃ মোঃ মহসিন উজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ছাত্ররা সংঘর্ষে লিপ্ত হলে বেশ কিছু ছাত্র আহত হয়। আহতদের ঢাকা ও কুমিল্লায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি জানান, ঘটনা তদন্তে কলেজের উপাধ্যক্ষ ডাঃ জাহাঙ্গীর হোসেনকে প্রধান করে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আগামী ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম ও হোস্টেল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা এরই মধ্যে সকল আবাসিক হোস্টেল ত্যাগ করেছে বলেও অধ্যক্ষ জানিয়েছেন। কুমিল্লা পুলিশ সুপার মোঃ শাহ আবিদ হোসেন জানান, খবর পেয়ে রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
×