ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

পাইকারি বাজারে কমতে শুরু করেছে দাম

সরকারী পর্যায়ে আমদানির পাশাপাশি বেসরকারী চালও আসছে

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ২ আগস্ট ২০১৭

সরকারী পর্যায়ে আমদানির পাশাপাশি বেসরকারী চালও আসছে

হাসান নাসির, চট্টগ্রাম অফিস ॥ সরকারী পর্যায়ে ভিয়েতনাম থেকে আমদানির আড়াই লাখ মেট্রিক টন চালের মধ্যে প্রায় একলাখ টন চাল ইতোমধ্যেই এসে পড়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাকি চালও চট্টগ্রাম এবং মংলা বন্দরে এসে পৌঁছবে বলে আশা করছে খাদ্য অধিদফতর। এ ছাড়া শুল্ক কমানোর ফলে বেসরকারী পর্যায়েও চাল আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অপেক্ষাকৃত কমমূল্যে প্রতিবেশী মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশ থেকে চাল আনছেন আমদানিকারকরা। দুয়েক দিনের মধ্যেই চলে আসবে বেসরকারীভাবে আমদানির কয়েকটি চালান। এদিকে, আমদানির চাল আসতে শুরু করায় পাইকারি বাজারে কমতে শুরু করেছে দাম। তবে খুচরা পর্যায়ে এখনও কাক্সিক্ষত মাত্রায় প্রভাব পড়েনি বলে অভিমত ক্রেতা সাধারণের। চট্টগ্রাম বন্দর বহির্নোঙ্গরে সোমবার রাতে এসে পৌঁছেছে ভিয়েতনাম থেকে আসা চালের চতুর্থ জাহাজ। এমভি এশিয়ান এনার্জি নামের এ জাহাজে রয়েছে ২৫ হাজার ৫শ’ মেট্রিক টন চাল। প্রথম জাহাজ এসেছিল গত ১৪ জুন। ভিয়েতনাম থেকে মোট চারটি জাহাজে এ পর্যন্ত এসেছে ৮৩ হাজার ৮শ’ মেট্রিক টন চাল। আজ বুধবার রাতের মধ্যে এসে পৌঁছবে ভিয়েতনামী চালের ৫ম জাহাজ। এতে থাকছে ৩০ হাজার মেট্রিক টন। বন্দর বহির্নোঙ্গরে আসার পর চালের নমুনা সংগ্রহ করেছে খাদ্য অধিদফতর। যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে খালাস করা হচ্ছে সরকারী চাল। খাদ্য অধিদফতর চট্টগ্রাম অঞ্চলের নিয়ন্ত্রক (সরবরাহ ও সংরক্ষণ) জহিরুল ইসলাম জনকণ্ঠকে জানান, দ্রুততার সঙ্গে চাল খালাস নিতে সাইলো জেটিও ব্যবহার করা হচ্ছে। যদিও সাইলো জেটি শুধু গম খালাসের জন্য সংরক্ষিত, তারপরও বিশেষ ব্যবস্থায় চাল খালাসের কাজ চলছে। তিনি জানান, খালাস করা চাল পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে দেশের বিভিন্ন সরকারী খাদ্য গুদামগুলোতে। চট্টগ্রাম বন্দরে আসা চাল যাচ্ছে বিভাগের বিভিন্ন খাদ্য গুদাম, সিলেট বিভাগের প্রতিটি গুদাম, ঢাকা বিভাগের উত্তরাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু গুদামে। প্রসঙ্গত, আগাম বন্যা, ভারি বৃষ্টিপাত, পাহাড় ধস এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে শস্যহানি হওয়ায় দেশে খাদ্য সঙ্কটের আশঙ্কায় সরকার জি টু জি ভিত্তিতে ভিয়েতনাম থেকে আড়াই লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির গত ১৪ জুনের বৈঠকে গৃহীত এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভিয়েতনাম সরকারের সঙ্গে চাল আমদানির বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। সে অনুযায়ী চালের প্রথম চালান নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ আসে ১৩ জুলাই। এছাড়া বেসরকারী পর্যায়ে চাল আমদানির ক্ষেত্রেও শুল্ক কমানো হয়। এছাড়া জি টু জি ভিত্তিতে মিয়ানমার থেকে চাল আমদানির লক্ষ্যেও সরকারের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। সরকারীভাবে চাল আমদানির পাশাপাশি বেসরকারী খাতের আমদানিকে বিশেষভাবে উৎসাহিত করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সে জন্যই শূন্য মার্জিনে এলসি খোলার সুযোগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া গত দুই বছর ধরে চাল আমদানির ওপর সব মিলে যে ২৮ শতাংশ শুল্ক ছিল তা কমিয়ে ১০ শতাংশে আনা হয়েছে। আগের ২৮ শতাংশের মধ্যে শুল্ক ছিল ২৫ শতাংশ এবং নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্কহার ছিল ৩ শতাংশ। সরকার নিয়ন্ত্রণমূলক সম্পূর্ণ তুলে নিয়েছে। এর ফলে বেসরকারী আমদানিকারকরাও উদ্যোগী হয়েছেন। খাদ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, বেসরকারী পর্যায়ে আমদানিকারকরাও বিভিন্ন দেশ থেকে চাল আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। কিছু চাল এখন পাইপ লাইনে রয়েছে। মিয়ানমার থেকে চাল নিয়ে একটি জাহাজ কয়েকদিনের মধ্যেই চট্টগ্রামে এসে পৌঁছবে।
×