ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

আইসিটি পার্ক নির্মাণ প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করার তাগিদ

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ৯ এপ্রিল ২০১৭

আইসিটি পার্ক নির্মাণ প্রকল্পগুলো দ্রুত  শেষ করার তাগিদ

ফিরোজ মান্না ॥ আইসিটি পার্কগুলোর প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ দ্রুত শেষ করার তাগিদ দিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ। কয়েকটি জেলায় দীর্ঘ সময় ধরে আইসিটি পার্ক নির্মাণ কার্যক্রম চলছে। ২০১৮ সালের মধ্যে প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ না হলে মন্ত্রণালয়ের হাতে নেয়া কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- গাজীপুর হাইটেক পার্ক, সিলেটে ইলেকট্রনিক সিটি, মহাখালীতে আইটি ভিলেজ, রাজশাহী আইটি ভিলেজ, জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, যশোর সফটওয়্যার পার্ক, নাটোর ফ্রিল্যান্সার ইনস্টিটিউট ও বিভাগীয় পর্যায়ে আইটি ভিলেজ। এর মধ্যে কয়েকটি প্রকল্পে কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক। বাকি প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি খুব একটা নেই বললেই চলে। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষ জনবল গড়ে তোলার জন্য গাজীপুরে হাইটেক পার্ক শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় হাইটেক বা আইসিটি পার্ক স্থাপন, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার জন্য সময়োপযোগী কার্যক্রম হাতে নেয়া হয় কয়েক বছর আগে। কিন্তু প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে গতিহীনতার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হচ্ছে না। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ১৬২ দশমিক ৮৩ একর জমির ওপর ইলেকট্রনিক সিটি স্থাপন করা হবে। ঢাকার মহাখালীতে ৪৭ একর জমির ওপর প্রস্তাবিত আইটি ভিলেজ নির্মাণের জন্য এখনও ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়নি। রাজশাহীতে ৩৪ দশমিক ৫৬৩১ একর জমিতে আইটি ভিলেজ স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। রাজধানীর কাওরান বাজার এলাকায় জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক পুরোপুরি চালু হয়নি। যশোরে সফটওয়্যার পার্কের ডরমেটরি বিল্ডিং ও এমটিবি ভবন নির্মাণের কাজ শেষের পথে। সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কটি ১৫ তলা ভবন বিশিষ্ট হবে। নাটোরে ফ্রিল্যান্সার ইনস্টিটিউট স্থাপনের জন্য এক দশমিক ২৩৯৩ একর জমি এবং নাটোর আইটি ভিলেজ স্থাপনের কাজ শুরুই হয়নি। এলাকাভিত্তিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একটি করে টেকনোলজি পার্ক বা আইটি ভিলেজ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব প্রকল্পগুলোতে কনসালটেন্ট নিয়োগও করেছে মন্ত্রণালয়। সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন কাজে হাত দেয়া হবে। অনেক প্রকল্প ২০১৮ সালের আগে শেষ হবে না। তবে বিসিএসআইআর এর ডাটাবেজ প্রস্তুত এবং তথ্যপ্রযুক্তি স্বয়ংক্রিয়করণ শীর্ষক কর্মসূচীর আওতায় বৈজ্ঞানিক ডাটাবেজ, মানবসম্পদ ডাটাবেজ, ফিন্যান্সিয়াল ডাটাবেজ, লাইব্রেরি ডাটাবেজ ও মেডিক্যাল ডাটাবেজের জন্য সফটওয়্যার তৈরি করা হচ্ছে। এখন সারাদেশে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই সেবাগুলো মানুষের হাতে পৌঁছে দেয়া হবে। এদিকে, দেশের মানুষ যেসব সেবা পাচ্ছেন- এই সেবার মান নিশ্চিত করার জন্য জেলা পর্যায়ে ডিসি ও উপজেলা পর্যায়ে ইউএনওদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সেবার মান নিশ্চিত না হলে মানুষ তথ্যপ্রযুক্তির ফল পাবে না। ইমপ্রুভিং ডেমোক্রেসি থ্রু পার্লামেন্টারি ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ (আইপিডি), এক্সেস টু ইনফরমেশন, ইমপ্রুভিং পাবলিক এ্যাডমিনিস্ট্রেশন এ্যান্ড সার্ভিস ডেলিভারি থ্রু ইন ই-সলিউশন: ইমপ্রুভিং গ্রিভ্যন্সি সিস্টেম, কন্সট্রাকশন অব উপজেলা এ্যান্ড রিজিউনাল সার্ভার স্টেশনস ফর ইলেটোরাল ডাটাবেজ, স্ট্রেংদেনিং ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট ইন বাংলাদেশ, আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহেনসিং একসেস টু সার্ভিসেস, স্ট্রেংদেনিং অব বাংলাদেশ পাবলিক এ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং সেন্টার, ডিজিটালাইজেশন অব বিপিএটিসি, ডিপেনিং এমটিবিএফ এ্যান্ড স্ট্রেংদেনিং ফাইনেন্সিয়াল একাউন্টেবিলিটি, স্ট্রেংদেনিং গভর্ন্যান্স ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট, ইমপ্লিমেন্টেশন অব ডিজিটাল একনেক, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা, ডেভেলপমেন্ট অব বাংলাদেশ প্রপার্টি ডাটাবেজ, বাংলাদেশ জরিপ অধিদফতর ডিজিটাল ম্যাপিং, ইন্ট্রোডাকশন অব মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি), তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তায় শিক্ষার মান উন্নয়ন, বিভিন্ন প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন, হেলথ ইনফরমেশন সিস্টেম এ্যান্ড ই-হেল্্থ, বিএফডিসিতে ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রবর্তন, বাংলাদেশ বেতারের মধ্যম তরঙ্গ ট্রান্সমিটার ডিজিটালাইজেশন ও আধুনিকায়ন, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, ই-সিটিজেন সার্ভিস উন্নয়ন, কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্রের মাধ্যমে ডিজিটাল কৃষি তথ্যের প্রচলন ও গ্রামীণ জীবন মান উন্নয়ন, ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষ প্রযুক্তি, জেলেদের নিবন্ধন, স্ট্রেংদেনিং সেটেলমেন্ট প্রেস, ম্যাপ প্রিনটিং প্রেস এ্যান্ড প্রিপারেশন অব ডিজিটাল ম্যাপ, ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ ও রেকর্ড প্রণয়ন, ক্যাপাসিটি বিল্ডিং, এস্টাবলেশিং ডাটা সেন্টার এ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ডেভলপমেন্ট, থ্রিজি নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি প্রবর্তন, ১০০৬ ইউনিয়ন পরিষদে অপটিক্যাল ফাইবার কেবল নেটওয়ার্ক উন্নয়ন, উপজেলা পর্যায়ে অপটিক্যাল ফাইবার কেবল নেটওয়ার্ক উন্নয়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য এনজিএন টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক স্থাপন, তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর গ্রামীণ ডাকঘর নির্মাণ, পোস্ট-ই- সেন্টার ফর রুরাল কমিউনিটি, লার্নিং এ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট, ডেভেলপমেন্ট অব ন্যাশনাল আইসিটি ইনফ্রানেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশ গভার্নমেন্ট, বেসিক আইসিটি, অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে বিসিসি শক্তিশালীকরণ, লেভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ, এমপ্লায়মেন্ট এ্যান্ড গভার্নেন্স, সাপোর্ট টু ডেভলেপমেন্ট কালিয়াকৈর হাইটেক পার্ক, এম্পাওয়ারিং রুরাল কমিউনিটি রিচিং দ্যা আনচিড: ইউনিয়ন ইনফরমেশন এ্যান্ড সার্ভিসেস সেন্টার, যশোর সফট্্ওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, ডেভেলপমেন্ট অব ন্যাশনাল আইসিটি ইনফ্রা-নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশ গর্ভমেন্ট, অনুমেদিত নতুন প্রকল্পের জন্য থোক বরাদ্দ- আইসিটি বিভাগ ও ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। এই প্রকল্পগুলোর অনেক প্রকল্পই এখন পর্যন্ত শেষ হয়নি। সূত্র জানিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তি সেবা তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছে দিতে সরকার ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের নেয়া পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারি আউটলেট, কাগজবিহীন ভর্তি পরীক্ষা, ওয়াসা, পিডিবি ও তিতাস গ্যাসের বিল পেমেন্ট, ডেমরায় কম্পিউটারাইজড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কলসেন্টার, শিক্ষা পদ্ধতিতে আইসিটি, এসএমএসভিত্তিক ভোটকেন্দ্র সংক্রান্ত তথ্য, হজ ব্যবস্থাপনা, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ফলাফল প্রকাশ, ট্রেনের টিকেট কেনা, অনলাইন সার্ভিস ট্র্যাকিং সিস্টেম, অনলাইনে ডেইলি মার্কেট প্রাইজ জানা, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস অটোমেশন, রাজউকের কম্পিউটারাইজেশন এবং ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম, সরকারী, জাতীয় ওয়েব পোর্টাল, আইনবিষয়ক ওয়েব পোর্টাল, দুর্যোগ পূর্বাভাস, ভোটার ডাটাবেজ, পানি ও সামুদ্রিক সম্পদ পরিকল্পনা, কৃষি সম্পদ পরিকল্পনা, এডুকেশন প্ল্যানিং, বাংলাদেশ ব্যাংক অটোমেশন, সড়ক ও জনপদ পরিকল্পনা অটোমেশন উল্লেখযোগ্য।
×