ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১৭ মার্চ ২০১৭

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

মোরসালিন মিজান ॥ একটি গাছের কথা হোক আজ। রাজধানী শহরের এই গাছ নাকি বাঁচবে এক হাজার বছর! ঘটনার সত্যমিথ্যা যাচাইয়ের তেমন সুযোগ নেই। তবে কৌতূহল নিয়ে গাছটির দিকে তাকাচ্ছেন পথচারী। জাতীয় সংসদ ভবনের মানিকমিয়া এ্যাভিনিউ সংলগ্ন এলাকায় এটি রোপণ করা হয় ২০০৮ সালের ১০ আগস্ট। কুড়িগ্রাম থেকে চারা এনে রোপণ করেছিলেন সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম। না, গাছের নামটি জানা যায়নি। তাই অচিন বৃক্ষ নাম। দীর্ঘকাল বলা চলে মরে পড়েছিল। পাতা ছিল না কোন। কিন্তু এই বসন্তে এসেছে নতুন পাতা। তাতেই গাছের দিকে নতুন করে তাকাচ্ছেন সবাই। চেনার চেষ্টা করছেন। বৃহস্পতিবার সেদিক দিয়ে হেঁটে আসার সময় মনে হলো, বেশ আয়েশী ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে অচিন বৃক্ষ। নিজের জানান দিচ্ছে বেশ ভালভাবেই। আনিসুর রহমান নামে এক তরুণ মোহাম্মদপুর থেকে এসেছিলে গাছটি দেখতে। বললেন, একটি গাছ এক হাজার বছর বাঁচে। এমন তথ্য জানার পর থেকেই ভাবছিলাম দেখতে আসব। দেখলাম আজ। বসন্তে গাছের নতুন পাতা দেখতে এমনতিতেই বেশ লাগে। এই গাছের বেলায় আনন্দটা দ্বিগুণ মনে হচ্ছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, প্রতিদিন বহু মানুষ গাছটির পাশ দিয়ে হেঁটে যান। তাকান না। একবার তাকান। তখনই দেখবেন, অন্য গাছ থেকে এটি আলাদা। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চলছে পাঁচ দিনব্যাপী জাতীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) মেলা। বৃহস্পতিবার ছিল দ্বিতীয় দিন। এদিনও মেলা ছিল জমজমাট। বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখা যায় বাঁশের তৈরি ফুলদানি, টেবিল ল্যাম্প, ফটোফ্রেম, কলমদানি, ঝুড়ি, শিশুদের হরেক রকমের খেলনা দিয়ে সাজানো। মেলায় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তাদের উৎপাদিত পাটপণ্য, খাদ্য ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, চামড়াজাত পণ্য, ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী, হালকা প্রকৌশল পণ্য, আইটি পণ্য, প্লাস্টিক ও সিনথেটিক, হস্তশিল্প পণ্য, ডিজাইন ও ফ্যাশনওয়্যার ইত্যাদি প্রদর্শন ও বিক্রি করছেন। আছে বিভিন্ন ধরনের গহনা। দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা উদ্যোক্তার সৃজনশীলতা দেখে মুগ্ধ হতে হয়। এবারের মেলায় দেশের ২০০ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। স্টলের সংখ্যা ২১৬। মেলা চলবে ১৯ মার্চ পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে সবার জন্য। কোন প্রবেশমূল্য নেই। কয়েকদিন ধরেই রাস্তা দখলে নিয়ে আন্দোলন করছেন হোম ইকোনমিক্স কলেজের শিক্ষার্থীরা। মিরপুর রোড দিয়ে ঠিকমতো গাড়ি চলাচল করতে পারছে না। তাদের দাবি, হোম ইকোনমিক্স হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ ইনস্টিটিউট। দাবির পক্ষে এখনও রাজপথে তারা। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নীরব। তেমন কিছু বলছিলেন না কেউ। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার নতুন দৃশ্যের অবতারণা হয়। হোম ইকোনমিক্সের শিক্ষার্থীদের দাবির বিরোধিতা করে রাস্তায় নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পূর্ণাঙ্গ ইনস্টিটিউট করার জন্য কলেজটির শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানান তারা। অভিযোগ করেন, হোম ইকোনমিক্স কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে ঢাবির কুয়েত মৈত্রী ও ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। মানববন্ধনের সমন্বয়কারী ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহামুদুল হাসান হোক ইকোনমিক্স কলেজের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, দিনে ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা পড়ালেখা করে ঢাবিতে ভর্তি হতে হয়। রাস্তায় নেমে আন্দোলন করে ঢাবিতে ভর্তি হওয়া যায় না। ঢাবির সব অধিভুক্ত কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আলাদা সমাবর্তন এবং সেসব প্রতিষ্ঠানের অযৌক্তিক আন্দোলনে নতি স্বীকার না করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আহ্বান জানান তিনি। মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শীঘ্রই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে। এ অবস্থায় শহর ঢাকার যানজট আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
×