ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের বিশেষ বিধান বাতিল চাই ॥ সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ৪ মার্চ ২০১৭

বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের বিশেষ বিধান বাতিল চাই ॥ সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে বাল্যবিবাহের গড় হার ৬৬ শতাংশ। এর মধ্যে ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই শতকরা ৩৯ শতাংশ মেয়ের এবং ১৮ বছরের মধ্যে ৭৪ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়। আর ১৫ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিয়ের এই হার বিশ্বে সর্বোচ্চ। এই বিবেচনায় বাল্যবিয়ের হারে শীর্ষে বাংলাদেশ। ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭’ এর বিশেষ বিধান (১৯নং ধারা) বাতিলের দাবিতে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম শুক্রবার বেলা ১১টায় সমাবেশে এ তথ্য জানায়। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭’ এর বিশেষ বিধান বাতিলের দাবি জানায় সংগঠনটি। সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭’ এর বিশেষ বিধান (১৯নং ধারা) জাতীয় সংসদে পাস হয়। এই আইনের মধ্য দিয়ে শিশু বিয়ে বৈধতা পায়। তবে ‘বিশেষ প্রেক্ষাপট’ কী এবং কত কম বয়সে বিয়ে করা যাবে বা বাবা-মা ছাড়া আর কারা অভিভাবকত্ব দাবি করতে পারবেন তা এই আইনে স্পষ্ট করা হয়নি। আইনে উল্লেখ না থাকলেও, ধর্ষণের শিকার হয়ে বা প্রেমের সম্পর্কের কারণে মেয়ে শিশুর অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়াকে বিশেষ ক্ষেত্রে আইনের বিধান রাখার পক্ষে যুক্তি করছে সরকার। সে ক্ষেত্রে মনে হচ্ছে ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না করে ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দেয়ার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজছে সরকার। বিশ্বে বাল্যবিয়ের হারের দিক থেকে শীর্ষ স্থানে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। এমন পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত আমাদের বর্তমান প্রজন্মের জন্য আত্মঘাতী হবে উল্লেখ করে তারা বলেন, ৯৯ শতাংশ বাল্যবিবাহই বাবা-মায়ের সম্মতিতে হয়ে থাকে। দারিদ্র্য, যৌতুক, নিরাপত্তাহীনতা, অসচেতনতা, অশিক্ষা, কুসংস্কার, বেকারত্বের কারণে বাল্যবিয়ের হার দিন দিন বাড়ছে। সেগুলো দূর করার কোন কার্যকর উদ্যোগ না নিয়ে আইন করা হচ্ছে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স কমানোর। এই আইনের ফলে যুগ যুগ ধরে আমাদের সামজে এর কুপ্রভাব থাকবে বলে দাবি করেন বক্তারা। বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নারীদের সম্পত্তি উত্তরাধিকারে সমান অধিকার দেয়া হচ্ছে না। সিডও সনদের দুটি ধারা এখনও সরকার অনুমোদন দেয়নি। নারীদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার আইন না করে পিছিয়ে দেয়ার আইন করা হচ্ছে। অবিলম্বে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭’ থেকে এ বিশেষ বিধান বাতিলের দাবি জানান বক্তারা। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শম্পা বসুর সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ইমরান হাবীব রুমন, প্রগতিশীল চিকিৎসক ফোরামের সদস্য ডাঃ মনিষা চক্রবর্তী, সংগঠনের সদস্য মুক্তা বাড়ৈ, নবীনা আক্তার প্রমুখ।
×