ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সাংবাদিকদের ভারতের ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার

ইভিএম ভোট ব্যবস্থায় কারচুপির কোন সুযোগ নেই

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৬ অক্টোবর ২০১৬

ইভিএম ভোট ব্যবস্থায় কারচুপির কোন সুযোগ নেই

তৌহিদুর রহমান, নয়াদিল্লী থেকে ॥ নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবস্থা পুরোপুরি নিরাপদ ও বিশ্বস্ত। এতে কারচুপির কোন সুযোগ নেই। এছাড়া বাংলাদেশ ও ভারতের নির্বাচনে কালো টাকা, পেশি শক্তির ব্যবহার ও মিডিয়ার প্রভাব বিস্তার প্রধান চ্যালেঞ্জ। মঙ্গলবার নয়াদিল্লীতে ভারতের নির্বাচন কমিশনের ডেপুটি কমিশনার উমেশ সিনহা বাংলাদেশের সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে দিল্লীতে সফররত বাংলাদেশের সাংবাদিক প্রতিনিধি দলকে দেশটির ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার উমেশ সিনহা বলেন, ইভিএম ব্যবস্থা নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলে থাকেন। তবে ইভিএমে প্রশ্ন তোলার কোন সুযোগ নেই। কেননা এটি পুরোপুরি নিরাপদ একটি ব্যবস্থা। এতে কারচুপিরও কোন সুযোগ নেই। ভোট গণনার সময় ইভিএম মেশিন নষ্ট হলে কমিশন কি ব্যবস্থা নিতে পারে এমন প্রশ্নের উত্তরে উমেশ সিনহা বলেন, ভোট গণনার সময় ইভিএম মেশিন নষ্ট হলে পনেরো মিনিটেই ঠিক করা সম্ভব। এছাড়া এই মেশিনে ডাটা নষ্ট হওয়ার কোন সুযোগ নেই। মেশিনে ভোটের ডাটা সেভ হয়ে থাকে। সেখান থেকেই ডাটা প্রিন্ট করা সম্ভব। তিনি বলেন, ভারতের জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম মেশিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ইভিএম ব্যবস্থায় এখানের সব রাজনৈতিক দলের আস্থাও রয়েছে। এর মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করা যেতে পারে। অনেক দেশেই ইভিএম ব্যবহার করে থাকে। সম্প্রতি নামিবিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ইভিএম ব্যবহার হয়েছে। সেখানেও ইভিএম নিয়ে কোন প্রশ্ন উঠেনি। ভারতের ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার বলেন, ভারতের জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম বুথে ভোট হয়েছে। আমাদের কাছে ২২ লাখ ইভিএম মেশিন রয়েছে। তবে ইভিএম ব্যবস্থা প্রচলনে জনগণের মধ্যে সচেতনতা আনতে হয়। আমরা সেটাই করেছি। ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার কিভাবে নির্বাচিত হয়ে থাকেন জানতে চাইলে উমেশ সিনহা বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে বিশ্বস্ততা, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার বিচারে নিয়োগ পান। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ভারতের ভোটার সংখ্যা প্রায় ৮৫ কোটি। এই বিশাল সংখ্যার ভোটারদের সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ করাটা অনেক বড় দায়িত্ব। কমিশন নিরপেক্ষভাবে সেই দায়িত্ব পালন করে চলেছে। উমেশ সিনহা জানান, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে একের পর এক ভোট গ্রহণ চলতে থাকে। সে কারণে আমাদের সব সময় ব্যস্ত থাকতে হয়। নির্বাচন কমিশন এখন ৫টি রাজ্যের বিধানসভার ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি চলছে। এসব রাজ্য হলো উত্তর প্রদেশ, গোয়া, পাঞ্জাব, মনিপুর ও উত্তরাখ-। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ কি কি এমন প্রশ্নের উত্তরে উমেশ সিনহা বলেন, কালো টাকা, পেশি শক্তি ও পক্ষপাতমূলক মিডিয়া সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের বড় বাধা বলে তিনি মন্তব্য করেন। নির্বাচনের আগে অনেক মিডিয়াই একজন প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে থাকে। এর ফলে নির্বাচন প্রভাবিত হয়। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপও গ্রহণ করে থাকে। আমাদের মনিটরিং কমিটি এসব পর্যবেক্ষণ করে। সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা আনাও জরুরী বলে তিনি মন্তব্য করেন। ভারতের ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রতিটি নির্বাচন কমিশনকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করতে হয়। আমরা সেটাই করছি। জাতীয় নির্বাচন হলো সবচেয়ে বড় উৎসব। এই উৎসবে সকল ভোটার যেন যোগ দিতে পারে সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। ভারতের নির্বাচন কমিশন অফিসে আয়োজিত এই মতবিনিয় সভায় ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও কমিশনের পরিচালক ভিএন শুক্লা ও ধীরেন্দ্রনাথ ওঝা উপস্থিত ছিলেন।
×