ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

গিয়াস, হাসনাত ও তামিম গুলশান শোলাকিয়া হামলার মাস্টারমাইন্ড

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২ আগস্ট ২০১৬

গিয়াস, হাসনাত ও তামিম গুলশান শোলাকিয়া হামলার মাস্টারমাইন্ড

শংকর কুমার দে/গাফফার খান চৌধুরী ॥ রাজধানীর গুলশান ও শোলাকিয়ার জঙ্গী হামলার মাস্টারমাইন্ডদের মধ্যে অন্যতম নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজা করিম ও বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক তামিম আহমেদ চৌধুরী। এ তিনজন বসুন্ধরায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি গিয়াস উদ্দিন আহমেদের বাসায় এবং কল্যাণপুরের জঙ্গী আস্তানায় একাধিকবার গোপন বৈঠক করেছে। উচ্চশিক্ষিত যুবকদের মগজধোলাই (ব্রেনওয়াশ) করেছেন এ তিন মাস্টারমাইন্ড। তারা সিরিয়া, ইরাক, মরক্কো ও ইয়েমেনসহ বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, জেএমবি ও হিযবুত তাহরীর জঙ্গীদের দেশে ফিরিয়ে এনে শোকের মাসে বড় ধরনের জঙ্গী হামলার ছক কষছে। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিম রেজা ও কল্যাণপুর থেকে জীবিত অবস্থায় গ্রেফতারকৃত রাকিবুল হাসান রিগ্যানকে জিজ্ঞাসাবাদে, উদ্ধারকৃত আলামত, তদন্তে এবং অনুসন্ধানে এমন তথ্য পেয়েছে তদন্তকারী সংস্থা ও গোয়েন্দারা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারি ও শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতের দিনে জঙ্গী হামলার ছক বাস্তবায়নের পরই কল্যাণপুরে জঙ্গী আস্তানা গড়ে তোলে জেএমবির এ জঙ্গীগোষ্ঠী। রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় জঙ্গী হামলা করতে রেকিও করেছিল জঙ্গীরা। গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলার পর এবং কল্যাণপুরের জঙ্গী আস্তানায় অভিযান শেষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তারা একই গোষ্ঠীর সদস্য। জেএমবির জঙ্গীদের সঙ্গে হিযবুত, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম একত্রিত হয়ে জঙ্গী হামলা চালাচ্ছে, যাদের একত্রিত ও সংগঠিত করেছে তারাই মাস্টারমাইন্ড হিসেবে কাজ করেছে। এর মধ্যে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজা করিমের বিষয়ে তথ্যপ্রমাণ হস্তগত করেছে গোয়েন্দারা। গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলাকারী পাঁচ জঙ্গী জিম্মিদের ফোন ব্যবহার করে। দেশের বাইরে জঙ্গীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সময় সপিরবারে অবস্থানকারী নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজা করিমের মোবাইল ফোনটি ব্যবহার করেছে জঙ্গীরা। হাসনাতের মোবাইল ফোনে জঙ্গীরা থ্রিমা এ্যাপস্ লোড করে ঘটনার বিভৎসতার তথ্যচিত্র পাঠায়। ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম ইউনিটের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হাসনাত রেজা করিমের মোবাইল ফোন দিয়ে এ থ্রিমা এ্যাপস্ লোড করে সকল তথ্য ও চিত্র পাঠিয়েছে জঙ্গীরা। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি থ্রিমা এ্যাপস্ ব্যবহার করতে কোন ই-মেল বা মোবাইল ফোন নম্বরের প্রয়োজন হয় না বলে কারা কাদের কাছে তথ্যচিত্র পাঠিয়েছে তা বের করা কঠিন। কিউআর (কুইক রেসপন্স কোড) কোড দিলে অন্য মোবাইল ফোনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব। এ এ্যাপস্ ব্যবহারকারী দুটি মোবাইল ফোনের মধ্যে তৃতীয় কোন ব্যক্তি কখনই প্রবেশ করতে পারবে না। হলি আর্টিজানে হামলার পর সেখানে নিহত ও উদ্ধার হওয়া জিম্মিকারীদের ৩০টি মোবাইল ফোন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্তের জন্য জব্দ করেছে। এসব মোবাইল ফোনের আইটি ফরেনসিক রিপোর্ট প্রস্তুত করছে সিআইডি। হলি আর্টিজান বেকারির ঘটনাস্থল থেকে জিম্মি হিসেবে উদ্ধার হওয়া নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজা করিমের মোবাইল ফোনটি হামলাকারীরা ব্যবহার করেছিল, কিউআর কোড ব্যবহার করে তারা ওই মোবাইল ফোন দিয়ে যোগাযোগ করেছে। হাসনাত রেজা করিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি জানান, সন্ত্রাসী হামলাকারীরা তার মোবাইল ফোনটি ব্যবহার করে, মোবাইল ফোন দিয়ে জঙ্গীরা থ্রিমা এ্যাপস লোড করে বিভৎসতার চিত্র তোলে এবং ভিডিও করে। এই হাসনাত রেজা করিমের বিরুদ্ধে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করার সময় হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগে ২০১২ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অব্যাহতি নেন। হাসনাত রেজা করিমের সঙ্গে গুলশানে হামলাকারী নিহত পাঁচ জঙ্গীর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে- এমন সন্দেহ থেকেই ডিবি পুলিশ তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। হাসনাত করিমের সঙ্গে নিহত জঙ্গীর বাসায় বৈঠক ॥ কল্যাণপুরে নিহত ৯ জঙ্গীর মধ্যে মার্কিন নাগরিক তাজ-উল-হক রাশিকের ধানম-ির বাসায় যাতায়াত ও বৈঠক করেছে হাসনাত রেজা করিম। জন্মসূত্রে আমেরিকার নাগরিক রাশিকের ধানম-ির ১১/এ নম্বর রোডের ৭২ নম্বর বাড়ির তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে গণমাধ্যমের কাছে এ ধরনের তথ্য দিয়েছে নিহত রাশিকের বাবা রবিউল ইসলাম। গত ৫ এপ্রিল রাশিক বাসা থেকে নিখোঁজ হয়। অভিমানে ছেলে চলে গেছে- এমন ভাবনা থেকে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোন জিডি করা হয়নি। রাশিক নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ইলেক্ট্রনিক্স এ্যান্ড ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (ত্রিপল ই) বিভাগ থেকে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর মাস্টার্স শেষ করে। গত বছর দু’বার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজা করিম ধানম-ির ওই বাসায় রাশিকের সঙ্গে দেখা করার জন্য গিয়েছিলেন বলে পরিবারের সূত্র নিশ্চিত করেছে। রাশিকের বাবা রবিউল ইসলাম বলেন, হাসনাত রেজা করিম গত বছর দু’বার তার বাসায় এসে ছেলের সঙ্গে দেখা করেন। ড্রইংরুমে বসে হাসনাত রেজা করিম তার ছেলের সঙ্গে অনেক সময় ধরে গল্প করেন। তবে কী আলাপ হয়েছে সে সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। রাশিক ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির হিযবুত তাহরীরের সদস্য। এ অভিযোগে গত বছরের ১৫ আগস্ট ধানম-ি থানা পুলিশ রাশিককে বাসা থেকে আটক করেছিল। পরে মুচলেকা নিয়ে রাশিককে ছেড়ে দেয়া হয়। গতকাল রাশিকের বাবা, মা ও ছোট ভাই সবুজ ধানম-ি থানায় উপস্থিত হয়ে পুলিশের কাছে মুচলেকা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। কল্যাণপুরে নিহত জঙ্গী রাশিকের সঙ্গে গোপন বৈঠক, গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জিম্মি অবস্থায় জঙ্গীরা তার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থ্রিমা এ্যাপস্ ব্যবহার করে তথ্যচিত্র পাঠানোর ঘটনায় জড়িয়ে পড়া শিক্ষক হাসনাত রেজা করিম এক রহস্যময় পুরুষ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু হাসনাত রেজা করিমের পরিবার বলছে, তিনি (হাসনাত) বাসায় ফেরেননি, গোয়েন্দা হেফাজতে আছেন বলে তাদের বিশ্বাস। তবে হাসনাত রেজা করিম এখন কোথায় তা রহস্যাবৃত। প্রো-ভিসির বসুন্ধরার বাসায় ভাড়া ছিল গুলশানে হামলাকারীরা ॥ গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় হামলালাকারী জঙ্গীদের সহযোগিতার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, তার ভাগ্নে আলম চৌধুরী এবং জঙ্গীদের ভাড়া করা বাড়ির ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান তুহিন ও রাজধানীর মিরপুরের শেওড়াপাড়ার জঙ্গীদের ভাড়া দেয়া বাড়ির মালিক মোঃ নুরুল ইসলামকে জঙ্গীদের বাড়ি ভাড়া দেয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট। ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু এবং প্রসিকিউশন পুলিশের সহকারী কমিশনার মিরাস উদ্দিন রিমান্ড আবেদনে বলেন, হামলাকারী জঙ্গীরা ড. গিয়াসউদ্দিনের বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ৬ নম্বর সড়ক, ব্লক-ই, টেনামেন্ট-৩-এর ফ্ল্যাট এ/৬ এবং মিরপুরের শেওড়াপাড়ার নুরুল ইসলামের বাসা ভাড়া নেয়। একই সঙ্গে ঢাকার পশ্চিম শেওড়াপাড়ায় আরেক বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় শিক্ষক নূরুল ইসলামকে। গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার আগে পাঁচ জঙ্গী বসুন্ধরা ও শেওড়াপাড়ার ওই দুই বাসায় আশ্রয় পেয়েছিলেন বলে পুলিশের ভাষ্য। হামলার দিন পর্যন্ত তারা ওই বাসায় অবস্থান করেছিলেন। যেহেতু হামলাকারীরা হামলার দিন পর্যন্ত উক্ত বাড়িগুলোয় অবস্থান করছিলেন তাই ওই বাড়িগুলোতে অবস্থান করে তারা হামলার পরিকল্পনা করতে পারেন। এছাড়া হামলাকারীদের বাসা ভাড়া দিয়ে আসামিরা গোপন করায় তারাও এ মামলার সঙ্গে থাকতে পারেন মর্মে ধারণা করা হচ্ছে। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপ-উপাচার্যসহ তিনজনকে আটক করার পর জঙ্গীদের মদদদাতা সন্দেহে নুরুল ইসলামকে রাজধানীর ৪৪১/৮ পশ্চিম শেওড়াপাড়ার বাসা থেকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তার বাড়ি থেকে একটি হাতে তৈরি গ্রেনেড ও জঙ্গীদের ব্যবহৃত কালো পোশাক উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান বলেছেন, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ৬ নম্বর সড়কের ব্লক-ই-এর ৩ নম্বর হোল্ডিংয়ের এ/৬ নম্বর ফ্ল্যাটে বালুভর্তি কার্টন এবং জঙ্গীদের কাপড়সহ বিভিন্ন মালামাল পাওয়া গেছে। সেখানে গুলশানে হামলাকারীরা মিলিত হয়েছিলেন। আর বালুভর্তি এসব কার্টনে হামলায় ব্যবহৃত গ্রেনেড রাখা হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর রাজধানীর মিরপুরের ৪৪১/৮ পশ্চিম শেওড়াপাড়ার বাসাতেও ‘জঙ্গীদের ব্যবহৃত হাতে তৈরি গ্রেনেড, কালো রঙের পোশাক’ পাওয়া গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ না করা এবং তথ্য গোপন করার অভিযোগে বাড়ির মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। গুলশান হামলার ঘটনায় ৪ জুলাই রাতে গুলশান থানার এসআই রিপন কুমার দাস বাদী হয়ে সন্ত্রাস দমন আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন। পরে মামলার তদন্তভার দেয়া হয় কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটকে। গত ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলা চালায় জঙ্গীরা। হামলায় ১৭ বিদেশী নাগরিক ও ৩ বাংলাদেশীসহ ২০ জন নিহত হন। এছাড়া হামলায় নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তাও। আহত হন ৩০ পুলিশ সদস্য। বসুন্ধরায় ও মিরপুরের শেওড়াপাড়া থেকে গ্রেফতারকৃত চারজনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে জঙ্গী সম্পৃক্ততায় গ্রেফতার হওয়ার পর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তামিম চৌধুরীসহ মাস্টারমাইন্ডদের যাতায়াত ছিল কল্যাণপুরের জঙ্গী আস্তানায় ॥ গুলশান ও শোলাকিয়ায় সন্ত্রাসী হামলার মাস্টারমাইন্ড সিলেটের তামিম আহমেদ চৌধুরীর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নয়াদিল্লী সফরকালে ও ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককালেও। রাজধানীর কল্যাণপুর, গুলশান ও শোলাকিয়ায় সন্ত্রাসী হামলার পর জঙ্গীরা ভারতে ঢুকতে পারে আশঙ্কায় বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তের সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে কল্যাণপুর জঙ্গী আস্তানা, গুলশান ও শোলাকিয়ায় সন্ত্রাসী হামলার মাস্টারমাইন্ড সিলেটের তামিম আহমেদ চৌধুরীও ভারতে ঢুকতে পারে বলে আলোচনায় স্থান পায়। গুলশান হামলার জন্য তামিম চৌধুরী জেএমবির মাস্টারমাইন্ড বলে গোয়েন্দাদের দাবি। তবে আইএসের বিভিন্ন প্রকাশনার ওপর ভিত্তি করে তাকে সংগঠনটির বাংলাদেশ শাখার প্রধান বলে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশ করেছে তাতেও তার নাম এসেছে। কানাডার উইন্ডসরের বাসিন্দা ৩০ বছর বয়সী তামিম ২০১৩ সাল থেকে নিখোঁজ। সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের বড়গ্রামের প্রয়াত আব্দুল মজিদ চৌধুরীর ছেলে শফি আহমদ চৌধুরীর পুত্র তামিম। মজিদ চৌধুরী ছিলেন একাত্তরে শাস্তি কমিটির সদস্য। জেএমবির যে আংশটি আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) অনুসারী হয়ে কর্মকা- চালাচ্ছে, এ অংশের শীর্ষ নেতা তামিম চৌধুরী। তিনি কল্যাণপুরের জঙ্গী আস্তানায় নিয়মিত যেতেন বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট সূত্র জানান, বছর দুয়েক আগে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক তামিম চৌধুরী দেশে ফিরে আত্মগোপন করেন। তারপর থেকেই জঙ্গী কর্মকা-ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তামিম চৌধুরীর কল্যাণপুরের জঙ্গী আস্তানায় যাতায়াত ছিল। এই বিষয়ে কল্যানপুর জঙ্গী আস্তানা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময়ে আহত অবস্থায় আটক রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। বর্তমানে জেএমবির একাংশের নেতৃত্বদানকারীদের একজন তামিম চৌধুরী।
×