আমার কষ্টের আলাপন লেপ্টে বিরাজিত থাকে শীত শীত ভ্রমর সন্ধ্যা
ফুলে ফুলে দোল খেয়ে কান্নায় লুটোপুটি খায় মাধবী লতার ঝাড়।
সূর্যের রশ্মিটা আড়াআড়ি থাকতেই ভালোবাসে, ভালোবেসে যায় শোকার্ত
সমুদ্র, বিশ্ব চরাচর, শীতের সাজ-সজ্জা, বসন্ত বাহার আর গানের পাখিদের
আমার কষ্ট ততক্ষণ স্বরাজে বিরাজে, তারা একত্রে নির্বংশ হয় না যতক্ষণ।
পাখিদের কষ্ট আছে, আছে মৌমাছির মধুর কান্না, বনের আগুনে বন পুড়লে
যতোটা লতিয়ে ওঠে ধোঁয়া, আমার কষ্টও ততটাই লতিয়ে ওঠে কান্নায়।
হিংস্র পশুদের ভালোবাসি, বিষধর সাপ আর যা আছে চরাচরে বিষাক্ত
মানুষকে ভালোবাসা যায় না শুধূ, জানে না তারা বিষে কত সন্তাপ।
প্রাণের পাখিটা মারা গেলে রুদ্ধ থাকে না আরদ্ধ খাঁচা অতিথি আসে বিষাক্ত
গোটা জগতটাই বিষে বিষাক্ত আদিম গুহাপর্ব থেকে আজতক।
দেয়াল পঞ্জিকার হলদেটে পাতা উল্টায় নিয়মিত অতীতে হারায় একসময়
কোন বেসুমার আনন্দ সংবাদ আনেনি কখনও কষ্টই বাড়ায় উত্তাপে।
বন্ধুরা মগ্ন থাকে আমিও থাকি মগ্নচিত্ত, বিত্তহীন সংসার গড়ি, ভাঙ্গি সংসার
নদী সিকস্তি দু’পাড়ের জনকুলের মতোই যাযাবর জীবন বেছে নিয়ে
বেঁচে রই তাবত বিষধর প্রাণীদের সাহচর্যে। আমাকে জল দাও তৃষ্ণার্ত খুব
আজারে মাজারে গিয়ে সিন্নি চড়াও, দোয়া দরুদ পড় আল্লা-নবীজীর নামে,
যেন চৌদ্দকুল বেঁচে-বর্তে যাই। যেন বেঁচে যায় তীব্র সবুজাভ প্রকৃতি।
প্রকৃতিকেই ভালোবাসি বেশি যত না ভালোবাসি নিজেকে। ফুলের গালিচা
লালসায় থাকে আমার চিরকাল- প্রস্তর যুগ ফেলে এসেছি বহুকাল আগে।
বাগানে জেল্লা ছড়ানো জুঁই চামেলী গোলাপ আর টগরের মায়াবী চাহনী
প্রেম-ভালোবাসার সুগম পথ দেখাতে পারে না ইশারায়, তাই বুনোফুল
সুনসান সুগম পথ দেখায় তুলতুলে মশৃণ আর হিম-কঠিন বনাঞ্চলে।
ধীরে ধীরে একরাশ ভিরুতা নিয়ে এগিয়ে যাই হে আমার প্রিয় প্রকৃতি-
প্রকৃতির কাছেই ফের ছুটে যাই অন্তরে লালিত বিষাক্ত নিশ্বাস ছেড়ে।