
ছবি: সংগৃহীত
মধ্যরাতে এক বিধ্বংসী হামলায় ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকায় ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের বৃষ্টি নামিয়েছে ইরানের রেভলিউশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি)। ‘ইয়া আলী ইবনে আব তালিব’ নামে এই অপারেশনের আওতায় শত শত মিসাইল ও ড্রোন ছোড়ে ইরান।
ইসরায়েলি মিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, সোমবার গভীর রাতে এই হামলার পর উত্তর, কেন্দ্র এবং দক্ষিণ ইসরায়েলে একযোগে সাইরেন বেজে ওঠে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো দেশে।
এই হামলার আগে ইসরায়েল একটি বিমান হামলা চালায় ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থা আইআরআইবির এক ভবনে। তার জবাবেই শুরু হয় ইরানের 'অপারেশন ট্রু প্রমিস থ্রি'।
ইরানি প্রেস টিভি জানিয়েছে, এই পর্যায়ের প্রতিশোধ আগের আটটি ধাপের চেয়ে আরও দীর্ঘ ও ভয়ঙ্কর হবে। ইসরায়েলের আকস্মিক আগ্রাসনে নিহত হয় ইরানের বহু সেনা কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং সাধারণ নারী-শিশু।
ইরানের প্রতিশোধের ভয়াবহতা ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে ইসরায়েল। দেশটি সরাসরি সম্প্রচার নিষিদ্ধ করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছবি ও ভিডিও শেয়ারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
তবুও ফাঁস হওয়া কিছু ভিডিওতে দেখা গেছে, আতঙ্কিত ইসরায়েলিরা গুহা ও আশ্রয়কেন্দ্রে লুকিয়ে আছে।
আরও একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে তেলআবিবে। সেখানে ইসরায়েলের একটি ইন্টারসেপ্টর মিসাইল মাঝ আকাশেই ভেঙে পড়ে। বিস্ময়করভাবে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র আসার আগেই এই দুর্ঘটনা ঘটে।
আইআরজিসির মুখপাত্র জানিয়েছেন, গত ৭২ ঘণ্টায় ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের ৫৪৫টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। এই হামলা চলেছে একটানা, ভোর পর্যন্ত কোনো বিরতি ছাড়াই।
তিনি আরও জানান, এটি ছিল একটি ‘হাইব্রিড’ আক্রমণ, যেখানে একসঙ্গে ড্রোন ও ব্যালাস্টিক মিসাইল ব্যবহার করা হয়েছে।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনী এক বিবৃতিতে ইসরাইল অধিকৃত এলাকায় বসবাসকারী সাধারণ মানুষদের সতর্ক করে জানায়— এই অঞ্চল ছেড়ে না গেলে জীবন রক্ষা করা কঠিন হবে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেই এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, “এই রক্তের ঋণ আমরা শোধ করবো। আমাদের আকাশে আঘাত এসেছে— এর জবাব ধ্বংস হয়ে ফিরবে।”
মধ্যপ্রাচ্য এখন যেন জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি। গোটা বিশ্বের নজর তেহরান ও তেলআবিবের দিকে। কোথায় গিয়ে থামবে এই প্রতিশোধের আগুন, তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে পুরো বিশ্ব।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/yh3o9V_xgiA?si=-Gvo8v5CCXM89ihD
এম.কে.