
মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়েছে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে। শুধু ইরান নয়, ইসরাইলের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এবার যোগ দিল ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরাও। শনিবার (১৪ জুন) রাতভর ইরান ও ইয়েমেন উভয় দিক থেকেই ইসরাইলের দিকে ব্যালিস্টিক ও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। এতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭ জন ইসরায়েলি নাগরিক এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। ধসে পড়া একটি ভবনের নিচে আটকা পড়ে আছেন অন্তত ৩৫ জন।
আল জাজিরা জানায়, ইরানের সামরিক বাহিনী ইসরাইলের তেল আবিবসহ আশপাশের এলাকায় কয়েকশ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ফিলিস্তিন-২ হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এড়িয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।
ইসরাইলি মিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বাত ইয়াম এলাকায় ৭৪ জন আহত হন। এদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রেহোভত এলাকায় আহত হন আরও ২৮ জন।
ইসরাইলের অন্যতম অস্ত্র গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স সরাসরি হামলায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, গবেষণাগারঘেঁষা একটি ভবনে বিস্ফোরণের পর আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ভবনের ভেতরে অনেক গবেষক আটকে পড়েছেন বলে জানা গেছে।
শনিবার রাতেই হুতি সশস্ত্র বাহিনী ইরানের সঙ্গে সমন্বয়ে ইসরাইলের কেন্দ্রীয় অংশ লক্ষ্য করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। হুতির মালিকানাধীন আল মাসিরাহ টিভিতে প্রচারিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ইরানের সঙ্গে যৌথভাবে হামলা চালাতে ফিলিস্তিন-২ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
আইডিএফ এক বিবৃতিতে জানায়, ইয়েমেন থেকে ইসরাইলের কেন্দ্রীয় অঞ্চল লক্ষ্য করে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় ছিল। তবে কিছু ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভেদে সফল হয়েছে।
এর আগে গত ১০ জুন ইসরাইলকে লক্ষ্য করে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে হুতিরা। এর জবাবে ইসরাইলি ড্রোন হানা দেয় ইয়েমেনের হোদেইদা বন্দরে। তবে শনিবারের হামলা ছিল আরও বড় পরিসরে।
শুক্রবার (১৩ জুন) ইসরাইল ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা এবং পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রে বিমান হামলা চালায়। এতে ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সেনা কমান্ডার ও পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে তেহরানভিত্তিক গণমাধ্যম। দুই দিনের হামলায় কমপক্ষে ৮০ জন নিহত এবং ৮০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অন্তত ২০ জন শিশু রয়েছে।
হুতির শীর্ষ নেতা আবদুল মালিক আল-হুতি বলেন, "ইসরাইলের আগ্রাসন রোধ করা শুধু একটি দেশের দায়িত্ব নয়, বরং পুরো অঞ্চলের স্বার্থেই তা অত্যন্ত জরুরি। আমরা ফিলিস্তিনিদের পাশে আছি, থাকব।"
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বাড়ছে নিরাপত্তা সতর্কতা। হাইফা, জেরুজালেম, তেল আবিব সব জায়গায় চালু হয়েছে জরুরি আশ্রয় ব্যবস্থা। ইসরাইলের হাসপাতালগুলোয় চলছে চরম ব্যস্ততা। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, তারা পাল্টা আঘাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
মিমিয়া