ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

চীনের নন-নিউক্লিয়ার অস্ত্র কতটা বিপজ্জনক?

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:১৭, ১৫ জুন ২০২৫

চীনের নন-নিউক্লিয়ার অস্ত্র কতটা বিপজ্জনক?

ছবি: সংগৃহীত

চীনের গবেষকরা সম্প্রতি সফলভাবে একটি নন-নিউক্লিয়ার হাইড্রোজেন বোমা এর নিয়ন্ত্রিত মাঠপর্যায়ের পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন। বিস্ফোরণটি নিউক্লিয়ার নয়, কিন্তু প্রচণ্ড তাপ ও দীর্ঘস্থায়ী আগুনের গোলা সৃষ্টি করে, যা সাধারণ টিএনটি বিস্ফোরণের তুলনায় ১৫ গুণ বেশি সময় ধরে স্থায়ী ছিল।

এই হাইড্রোজেনভিত্তিক ডিভাইসের ওজন ছিল মাত্র ২ কেজি (৪.৪ পাউন্ড)। বিস্ফোরণের ফলে তৈরি হওয়া আগুনের গোলার তাপমাত্রা ছাড়িয়ে যায় ১,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এবং এটি দুই সেকেন্ডেরও বেশি সময় ধরে স্থায়ী হয়। এই পরিসংখ্যান সাধারণ টিএনটি বিস্ফোরণের তুলনায় অনেক বেশি।

চীনা রাষ্ট্রীয় জাহাজ নির্মাণ কর্পোরেশন (China State Shipbuilding Corporation), যারা পানির নিচে যুদ্ধাস্ত্র উন্নয়নে অগ্রগামী, তারা এই বোমার উন্নয়ন করেছে। এতে ব্যবহৃত হয়েছে ম্যাগনেসিয়ামভিত্তিক সলিড-স্টেট হাইড্রোজেন স্টোরেজ উপাদান, যা প্রচলিত বিস্ফোরকের মাধ্যমে সক্রিয় হয়ে শক্তিশালী রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটায়।

বিস্ফোরণের বৈশিষ্ট্য ও সম্ভাব্য প্রভাব
চীনা সামরিক গবেষণা সাময়িকী ‘জার্নাল অব প্রজেক্টাইলস, রকেটস, মিসাইলস অ্যান্ড গাইডেন্স’-এ প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, বিস্ফোরণের পর হাইড্রোজেন গ্যাস দ্রুত নির্গত হয়ে জ্বলে উঠে এবং তৈরি করে তীব্র তাপময় সাদা আগুনের গোলা, যা অ্যালুমিনিয়াম অ্যালয় গলিয়ে দিতে সক্ষম।

এই আগুন খুব কম শক্তিতেই জ্বলে উঠতে পারে, বিস্ফোরণের পর দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং একসঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকায় ধ্বংস চালাতে সক্ষম। গবেষকরা বলেন, এর মাধ্যমে বিস্ফোরণের তীব্রতা অত্যন্ত নিখুঁতভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, যা এটিকে নির্দেশিত হামলা ও এলাকায় সমানভাবে ধ্বংস সাধনের জন্য কার্যকরী করে তোলে।

যদিও এতে কোনো নিউক্লিয়ার উপাদান ব্যবহার করা হয়নি, তবুও বিস্ফোরণের শক্তি ও তীব্রতা এতটাই বেশি যে, এটি ভবিষ্যৎ যুদ্ধাস্ত্র প্রযুক্তিতে একটি গেম চেঞ্জার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের অস্ত্র আগামী দিনে নিউক্লিয়ার অস্ত্র ছাড়াও ভয়াবহ বিধ্বংসী ক্ষমতা অর্জনের পথ তৈরি করে দিচ্ছে, যা বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।

মুমু ২

×