ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পের হুমকি

ডব্লিউটিও থেকে বেরিয়ে যাব

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 ডব্লিউটিও থেকে বেরিয়ে যাব

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার হুমকি দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়ে নিজেদের নীতি পরিবর্তন না করলে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন বা ডব্লিউটিও) থেকে বেরিয়ে যাবেন। তিনি অভিযোগ করেন, সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্যায্য আচরণ করছে। ব্লুমবার্গ নিউজকে ওভাল অফিসে বসে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন। । খবর বিবিসির। ট্রাম্প বলেন, তারা যদি কাজের ধরন পরিবর্তন না করে তাহলে আমি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রত্যাহার করব। বিশ্ব বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নিয়ম নির্ধারণ এবং সেসব নিয়মের বিষয়ে বিভিন্ন দেশের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বের সমাধান করার উদ্দেশে গঠন করা হয়েছিল বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা। তবে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সংরক্ষণ নীতির সমর্থক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার। ট্রাম্পের বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রত্যাহারের হুমকির পর মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাণিজ্য নীতি ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মুক্তবাজার নীতির মধ্যকার আদর্শিক দ্বন্দ্ব আরও স্পষ্ট হলো। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করছে, এমন অভিযোগও তুলেছেন মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইথিযার। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকেই বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নীতির সমালোচনা করে আসছেন ট্রাম্প। গতবছর ফক্স নিউজে এক সাক্ষাতকারে ট্রাম্প বলেন, আমাদের বাদে আর সবাইকে সুবিধা দেয়ার জন্য গঠন করা হয়েছিল বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা...সংস্থার প্রায় সব আইনী সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেই দেখা যায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হই। গত কয়েক মাসে অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য বিষয়ক নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে বেশ কঠোর অবস্থান নিতে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রকে। সবচেয়ে বেশি আলোড়ন তুলেছে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’। যেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুটি অর্থনৈতিক শক্তির বিশ্ববাজারে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একে অপরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি হওয়া অনেক পণ্যের ওপর শুল্ক ধার্য করেছেন ট্রাম্প। মার্কিন সিদ্ধান্তের জবাবে চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ধার্য করা শুল্কের সমান অর্থমূল্যের শুল্ক চীনও আরোপ করেছে তাদের দেশে আমদানি করা মার্কিন পণ্যের ওপর। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অভিযোগও করেছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায়। চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম ভঙ্গ করছে, এমন আশঙ্কা করছেন তারা। বিরোধ নিষ্পত্তি করার জন্য বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার যে বিভাগটি নিয়োজিত আছে, ওই বিভাগের নতুন বিচারক নির্বাচন স্থগিত করে রেখেছে ওয়াশিংটন। এই অবস্থায় সংস্থার সদস্যদের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে কার্যত কোন ভূমিকা পালন করতে পারবে না সংস্থাটি। প্রথম দফায় চীনা পণ্যের ওপর ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের পর জুলাইয়ে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কাছে প্রাথমিক অভিযোগ করে চীন। ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মাধ্যমেই আন্তর্জাতিক দেশীয় বাণিজ্যের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নিয়মগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সেসব নিয়মের ব্যতিক্রম হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা এবং বাণিজ্য নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে আন্তঃদেশীয় দ্বন্দ্বের মীমাংসা করা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অন্যতম প্রধান দায়িত্ব।
×