ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সহিদ রাহমানের তিন কাহিনী চিত্রের প্রিমিয়ার

প্রকাশিত: ০৯:১৮, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সহিদ রাহমানের তিন কাহিনী চিত্রের প্রিমিয়ার

সাজু আহমেদ ॥ বাঙালী জাতির অহংকার, বিশ্ব নেতা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মহান এই নেতার নৃশংস ও ইতিহাসের বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারীদের নিয়ে মেধাবী লেখক সহিদ রাহমান রচনা করেছেন বিখ্যাত গল্প ‘মহামানবের দেশে’। এই গল্প অবলম্ব অবলম্বনে নির্মিত বেশকিছু কাহিনী চিত্র আলোচনায় এসেছে। এরই ধারাবাহিকতা অতি সম্প্রতি আরও ৩টি কাহিনীচিত্র তৈরি হয়েছে। কাহিনী চিত্রগুলো হলো ‘পঁচাত্তরের ডায়েরি’, ‘সেদিন শ্রাবণের মেঘ ছিল’ ও ‘পঁচাত্তরে লালু’। এই তিনকাহিনী চিত্রের প্রিমিয়ার শো উপলক্ষ আজ শনিবার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে বিকেল ৫টায় বিশেষ এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে । এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক এমপি। সভাপতিত্ব করবেন ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। ‘পঁচাত্তরে লালু’ কাহিনী চিত্রে দেখা যাবে-১৯৭১ সালে ইছাপুর গ্রামের ১০ বছরের বালক লালু বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ শুনে মুক্তিযুদ্ধের প্রতি খুবই অনুপ্রাণিত হয়ে ওঠে। একই গ্রামের সুরুজ বাঙালী কমান্ডারের কাছে মুক্তিযুদ্ধের নেপথ্যের অনেক কথা জানার মাধ্যমে ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে উদ্ধুদ্ধ হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে সে স্কুলে পড়ার সুযোগ পায়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্কুলে গিয়ে জানতে পারে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। ইছাপুর প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক হারিছ মাস্টারকে সঙ্গে নিয়ে কমান্ডার এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করে এবং ওই প্রতিবাদে লালুও সামিল হয়। মিছিলের মধ্যেই পুলিশের হাতে আটক হয়ে অমানষিক ও অমানবিক শারীরিক নির্যাতনের স্বীকার হয় লালু, সুরুজ কমান্ডার ও হারিছ মাস্টার এবং লালুর জীবনে করুন পরিণতি নেমে আসে। মর্মস্পর্শী হৃদয় বিদারক এই গল্পের কাহিনী চিত্রটি চিত্রনাট্য করেছেন সাইয়েদ আহমাদ। পরিচালনা করেছেন সাজ্জাদ সুমন। অভিনয় করেছেন- আহমেদ রুবেল, জিয়াউল হাসান কিসলু, মোমেনা চৌধুরী ও শিশুশিল্পী যায়ানসহ প্রমুখ। ‘পঁচাত্তরের ডায়েরি’ কাহিনী চিত্রে বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭৫ সালে ১৪ জুন হত্যাকা-ের পরিকল্পার কথা উঠে এসেছে। বঙ্গবন্ধু বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র, রাঙ্গামাটি পরিদর্শনে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে তাঁকে হত্যা করা হবে বলে পরিকল্পনা করা হয়। সেই খবর জানতে পেরে জনপ্রতিনিধি বেলায়েত বঙ্গবন্ধুকে সতর্ক করে। পরে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হওয়ায় ষড়যন্ত্রকারীরা আবারও পরিকল্পনা করে একই বছরের ১৫ আগস্ট এবং বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। এই কু-পরিকল্পনা সফল হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা মৌন মিছিল বের করে। তারাও পুলিশের হাতে আটক হয় এবং নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়। রাকেশ বসুর চিত্রনাট্যে এই কাহিনী চিত্রটি পরিচালনা করেছেন সুমন ধর। অভিনয় করেছেন-শহীদুজ্জামান সেলিম, শাহাদাত হোসেন, মনোজ প্রামাণিক, তানিয়া বৃষ্টি, জাহাঙ্গীর আলম ও মাস্টার শাকিলসহ প্রমুখ। আর ‘সেদিন শ্রাবণের মেঘ ছিল’ কাহিনী চিত্রটি নোয়াখালীর মধুপুর গ্রামের এক মাধ্যমিক পাস শিক্ষিত সমাজ সচেতন যুবকের গল্প। সে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টেই বিয়ে করে। বাসর রাতে তাকে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের খবর দেয় বন্ধু। সে যুবক এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল, যুবকটি পুলিশের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে কারাগারে জীবন কাটিয়েছে। সহিদ রাহমানের রচনা ও চিত্রনাট্যে পরিচালনা করেছেন রাজিবুল ইসলাম রাজিব। অভিনয় করেছেন-আজাদ আবুল কালাম, রওনক হাসান ও হিমিসহ প্রমুখ। ‘পঁচাত্তরের ডায়েরি’ ও ‘পঁচাত্তরে লালু’ প্রযোজনা করেছে পিয়া ভিশন। ‘সেদিন শ্রাবণের মেঘ ছিল’ প্রযোজনা করেছে তিয়াসা মাল্টিমিডিয়া। ৩টি কাহিনী চিত্রই এ বছর বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন বা প্রয়াণ দিবসে ৩টি ভিন্ন বেসরকারী টিভি চ্যানেলে প্রচার হবে বলে জানা গেছে।
×