ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

চাই সমনি¦ত উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ৩০ জুলাই ২০১৫

চাই সমনি¦ত উদ্যোগ

বাল্যবিয়ে। এ শব্দটির সঙ্গে আমরা সকলেই পরিচিত। এ দেশে দীর্ঘদিনের এক সামাজিক অভিশাপ এটি। এই বাল্যবিয়ের অভিশাপে একজন নারীকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে বিকশিত হতে দিচ্ছে না। বাল্যবিয়ের শাস্তি ২ বছর বাড়িয়ে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৪’ অনুমোদন করেছে সরকার। বাল্যবিয়ে একটি সামাজিকব্যাধি। আমাদের যাপিত জীবনে আধুনিকতা ও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও বাল্যবিয়ের প্রবণতা কমেনি। বাল্যবিয়ে শুধু ব্যক্তির নয়, এটা পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রের জন্যও ক্ষতিকর। বাংলাদেশে প্রতি ৩ মেয়ের মধ্যে ২ জনকে বিয়ে দেয়া হয় ১৮ বছরের নিচে। সম্প্রতি ইউনিসেফের রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ এশিয়ার ৪৬ শতাংশ মেয়ের ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই বিয়ে হচ্ছে, যা বিশ্বে বাল্যবিয়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ হার। এ তালিকায় বাংলাদেশের পরেই রয়েছে ভারত, নেপাল ও আফগানিস্তান। জাতীয় কন্যাশিশু এ্যাডভোকেসি ফোরামের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে বাল্যবিয়ের হার ২০০৯ সালে ছিল ৬৪ শতাংশ, যা ২০১১ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ৬৬ শতাংশ। বিশেষ করে কন্যাশিশুরা অধিক হারে বাল্যবিয়ের শিকারে পরিণত হচ্ছে। সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের ৬৯ শতাংশ নারীর ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের বিয়ের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া কিছুতেই সমর্থনযোগ্য নয়। ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-১৯২৯’ অনুযায়ী বাংলাদেশের ২১ বছরের কম বয়সী কোন পুরুষ কিংবা ১৮ বছরের কম বয়সী কোন নারী বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হলে তা বাল্যবিয়ে হিসেবে গণ্য। বাল্যবিয়ে বন্ধে তৈরি ১৯২৯ সালের আইনে ১ মাসের জেল ১ হাজার জরিমানার বিধান ছিল। পরে তা সংশোধন করে ১ মাস জেল ও ১০ হাজার জরিমানার বিধান করা হয়। তারপরও বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটায় শাস্তির পরিমাণ বাড়িয়ে দুই বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রেখে নতুন করে আইনের প্রস্তাব করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে এ বিচার করা হবে। সমাজে চলতে হলে যেমন আইনের দরকার, আইনের পাশাপাশি আমাদের দায়বদ্ধতা থেকে সমনি¦ত উদ্যোগে আইনগুলোও বাস্তবায়ন করা দরকার। শুধু আইনের দিকে তাকিয়ে নয়, নিজেদের দায়বদ্ধতা থেকে উদ্যোগী হয়ে কাজ করা প্রয়োজন। ঢাকা থেকে
×