ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দ্বিতীয় টেস্টে মুখোমুখি বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা

মিরপুরে সিরিজ জয়ের লড়াই শুরু আজ

প্রকাশিত: ২১:৫৫, ২৩ মে ২০২২

মিরপুরে সিরিজ জয়ের লড়াই শুরু আজ

মোঃ মামুন রশীদ ॥ লক্ষ্য দুই দলেরই এক- সিরিজ জয়। সেজন্য জিততেই হবে দ্বিতীয় টেস্ট। কারণ প্রথম টেস্টে হারেনি কেউ। চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টেস্ট ড্র হয়েছে। তাই আজ জয়ের লক্ষ্যেই নামবে স্বাগতিক বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট বলেই বাংলাদেশ দলকে নিয়ে আছে কিছুটা সংশয়। কারণ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে সাধারণত ভাল কিছু করার রেকর্ড খুব কম বাংলাদেশের। প্রথম টেস্টে ড্র করে কিংবা দুয়েকটি জয় পেলেও সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে বাজেভাবে হারের অনেক তিক্ত ঘটনাই আছে। গত ৫ বছরেই এমনটা হয়েছে বাংলাদেশ দলের ৪টি সিরিজে। এই ৪ সিরিজের মধ্যে ২ সিরিজে প্রথম টেস্ট জিতলেও দ্বিতীয় টেস্টে শোচনীয় হার এবং ২ সিরিজে প্রথম টেস্ট ড্র করলেও দ্বিতীয় টেস্টে বাজে হার দেখেছে বাংলাদেশ। তাই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট ড্র করার পরেও শঙ্কা থাকছে দ্বিতীয় টেস্টে পা ফসকানোর। আজই শুরু হচ্ছে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সকাল ১০টায় মাঠে গড়াবে ম্যাচটি। প্রথম দিনের খেলা উপভোগ করবেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) সভাপতি গ্রেগ বার্কলে। এর আগে বাংলাদেশে এসে ৩টি সিরিজ খেলেছে শ্রীলঙ্কা। প্রতিবারই সিরিজ জিতে গেছে তারা। বিশেষ করে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে কোনবারই বিন্দুমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারেনি স্বাগতিক বাংলাদেশ। সর্বশেষ দুইবার ২০১৪ ও ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সফরে এসে তারা সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলে চট্টগ্রামে। কিন্তু বাংলাদেশ দলের দুর্দান্ত পারফর্মেন্সে দুইবারই চট্টগ্রাম টেস্ট ড্র হয়। তবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে মিরপুরে নেমেই স্বাগতিকদের বড় ব্যবধানে পরাজিত করে শেষ পর্যন্ত সিরিজ জয় করে লঙ্কানরা। এবার টানা তৃতীয়বারের মতো চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলেছে লঙ্কানরা এবং যথারীতি ড্র হয়েছে। এবার তাই মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে জয়ের লক্ষ্য নিয়েই নামবে তারা। অতীত ঘটনার পুনরাবৃত্তি করার লক্ষ্যেই নামবে লঙ্কানরা। গত বছর পাল্লেকেলেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট ড্র করে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে হেরে যায় সফরকারী বাংলাদেশ। এবার একই ঘটনার দিকে কি যাচ্ছে সিরিজটি? এবার অবশ্য স্বাগতিক বাংলাদেশ। কিন্তু অতীত ইতিহাস বললে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে একেবারেই সুবিধা করতে পারে না বাংলাদেশ দল। সেই অতীত পাল্টানোর লড়াই স্বাগতিকদের। সর্বশেষ ২ টেস্ট এই মাঠে হেরেছে স্বাগতিকরা। লঙ্কানরা আজ দারুণ আত্মবিশ্বাস নিয়েই মাঠে নামবে। কারণ দেশের টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে তারা বিদেশের মাটিতে এসে প্রথম টেস্টেই দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়েছে। অভিজ্ঞ এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস দুর্দান্ত এক ইনিংস উপহার দিয়েছেন। বাকি ব্যাটাররাও মোটামুটি রান পেয়েছেন। আর বোলিং বিভাগে স্পিনারদের নিয়ে কিছুটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে তাদের মিরপুরে। কারণ রমেশ মেন্ডিস আর লাসিথ এম্বুলদেনিয়া তেমন ভাল করতে পারেননি চট্টগ্রামে। অথচ বাংলাদেশের স্পিনাররা সেখানে দুর্দান্ত করেছেন। তাই এবার স্পিন বিভাগে পরিবর্তন আসতে পারে। গত বছর পাল্লেকেলেতে বাংলাদেশী ব্যাটারদের নাজেহাল করা প্রাভীন জয়াবিক্রমা যোগ হতে পারেন। সেক্ষেত্রে পেস বোলারদের মধ্যে একজন ছিটকে যেতে পারেন। কারণ মিরপুরের ধীরগতির স্পিনবান্ধব উইকেটে একটি বাড়তি স্পিনার নিয়েই খেলতে চাইবে যেকোন দল। সেক্ষেত্রে কাসুন রাজিথা কিংবা আসিথা ফার্নান্দোর মধ্যে থেকে একজন একাদশ থেকে ছিটকে যাবেন লঙ্কান স্কোয়াড থেকে। এক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যায় পড়বে স্বাগতিক বাংলাদেশ। কারণ মিরপুরে এর আগে সাকিব আল হাসান, তাইজুল ইসলাম ও মেহেদি হাসান মিরাজ, নাঈম হাসানকে নিয়ে একাদশ গড়েও খেলেছে বাংলাদেশ। কিন্তু এবার ইনজুরির কারণে মিরাজ আগে থেকেই নেই এবং নাঈম প্রথম টেস্টে খেলে ছিটকে গেছেন। তাই বিকল্প অফস্পিনার হিসেবে অফস্পিন অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের একাদশে ঠাঁই পাওয়া নিশ্চিত। তার অফস্পিনের ওপরই নির্ভর করতে হবে বাংলাদেশ দলকে। সেই সঙ্গে বাঁহাতি স্পিন করতে পারেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। তিনিও হয়তো কিছুটা বোলিং করবেন। মোসাদ্দেক দলে আসলেও বাড়তি আর কোন স্পিনার থাকছেন না বাংলাদেশের একাদশে। তাই দুই পেসার নিয়েই খেলতে হবে। সেক্ষেত্রে অবশ্য ইনজুরির কারণে শরিফুল ইসলাম ছিটকে যাওয়াতে এবার সুযোগ পাচ্ছেন এবাদত হোসেন। তার সঙ্গে থাকবেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ কিংবা নবাগত রেজাউর রহমান রাজা। দ্বিতীয় টেস্টে হারার যে তিক্ত ইতিহাস তা বদলানোর লক্ষ্যেই আজ নামবে স্বাগতিক বাংলাদেশ দল। মোসাদ্দেক দলে আসায় ব্যাটিং গভীরতা বাড়বে কিন্তু ব্যাটিংয়ে চরম বাজে সময়ের মধ্যে থাকা মুমিনুলের এখন রানে ফেরার চ্যালেঞ্জ এই ম্যাচে।
×