ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, দফতরে তালা

এবার কুমিল্লা ভার্সিটিতে রেজিস্ট্রার হটাও আন্দোলন

প্রকাশিত: ২৩:৩২, ২১ জানুয়ারি ২০২২

এবার কুমিল্লা ভার্সিটিতে রেজিস্ট্রার হটাও আন্দোলন

নিজস্ব সংবাদদাতা, কুমিল্লা ॥ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদসহ ও সাধারণ পদসমূহে ব্যাপক আকারে বিএনপি ও জামায়াতীকরণ, স্বজনপ্রীতি, বঙ্গবন্ধু কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদ-স্বাধীনতা পক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হেনস্থা, দুর্ব্যবহারসহ নানান অভিযোগে উঠেছে ৪ বছর ধরে কর্মরত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মোঃ আবু তাহেরের বিরুদ্ধে। তাকে রেজিস্ট্রারের পদ থেকে অপসারণের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদসহ চারটি সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিকট পৃথক স্মারকলিপি প্রদান করে। একই দাবিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং রেজিস্ট্রার আবু তাহেরকে তার অফিস কক্ষে প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। এছাড়া বৃহস্পতিবার ভোরে রেজিস্ট্রারের দফতরে তালা লাগিয়ে দেয় । ফলে রেজিস্ট্রার আবু তাহের বৃহস্পতিবার তার কার্যালয়ে আসেননি। প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনপি-জামায়াতের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে খ্যাত বিএনপি-জামায়াত পরিবারের সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আবু তাহেরের আপন ভাই বিএনপি ক্যাডার মোতাহের হোসেন স্বপনের বিরুদ্ধে রয়েছে দুটি নাশকতার মামলা। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু তাহেরের সুবাদে বিভিন্ন সময়ে তার গ্রামের বাড়ি বুড়িচং এলাকা, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন তার অনুসারী, তার পূর্বের কর্মস্থল ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের বিএনপি-জামায়াতপন্থী অন্তত অর্ধশত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী নিয়োগ পেয়েছেন । এদিকে রেজিস্ট্রার আবু তাহেরের বিএনপি-জমায়াতীকরণ, নিয়োগ বাণিজ্য, স্বজনপ্রীতি ও নানান দুর্নীতির অভিযোগে তাকে হটাও-অপসারণের দাবিতে গত বুধবার (১৯ জানুয়ারি) থেকে আবারও আন্দোলনে নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিসহ বিভিন্ন সংগঠন। এরই মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিকট পৃথকভাবে স্মারকলিপি দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রৈণীর কর্মচারী পরিষদের পক্ষে সভাপতি দীপক মজুমদার ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ মহসীন। কর্মচারী সমিতির পক্ষে সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স এ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে সভাপতি আবু তাহের ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল লতিফ। বঙ্গবন্ধু কর্মচারী পরিষদের পক্ষে সভাপতি জসীম উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেন। একই দাবিতে ওসব সংগঠনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অব্যাহত রাখে। এছাড়া বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বুধবার বিকেল থেকে রেজিস্ট্রার আবু তাহেরকে তার কক্ষে প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে রাত সাতটার দিকে তিনি তার অফিস থেকে বেরিয়ে যান। এদিকে বৃহস্পতিবার ভোরেই রেজিস্ট্রার আবু তাহেরের দফতরের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেয় আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ফলে তিনি বৃহস্পতিবার তার দফতরে প্রবেশ করতে পারেননি বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার আবু তাহের জানান, আমি ঢাকায় আছি। আমি অবশ্যই প্রগতিশীলদের পক্ষে। বিএনপি-জামায়াতকে আশ্রয়প্রশ্রয় দেইনি। তারা (আন্দোলনকারীরা) কর্মকর্তাদের থেকে রেজিস্ট্রার চায়। আপগ্রেডেশন এবং কিছু ব্যক্তিকে নিয়োগ ও কয়েকজনকে পছন্দের জায়গায় পোস্টিংয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করে, যা রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব নয়।
×