ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, বাজারে অস্থিরতা

প্রকাশিত: ২৩:২০, ২১ জানুয়ারি ২০২২

ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, বাজারে অস্থিরতা

হাসান নাসির, চট্টগ্রাম অফিস ॥ ভোজ্যতেলের বাজারে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আগামী অন্তত পনেরো দিন দাম বৃদ্ধি না করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু খুচরা ও পাইকারি বাজারে ওই সিদ্ধান্তের কোন প্রতিফলন নেই। সরকারী চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষা না করেই মিলাররা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতিলিটারে বেড়ে গেছে ৫ থেকে ১০ টাকা। রমজানকে সামনে রেখে আমদানি ও মজুদের প্রক্রিয়ার মধ্যেই এই তেজীভাব। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে। ফলে না বাড়িয়ে উপায় নেই। কিন্তু এতে ভোক্তার ওপর পড়েছে খরচের বাড়তি চাপ। যেভাবে বাড়ছে তাতে করে রোজার মাসে মূল্য কোথায় গিয়ে ঠেকে, তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে ভোক্তা পর্যায়ে। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিশ^বাজারে ভোজ্য তেলের মূল্য এখন বেশ চড়া। এতে করে আমদানির ব্যয় বেড়েছে। সম্পূর্ণ আমদানিনির্ভর এই ভোজ্যতেলের দাম বাড়া-কমার ওপর তাদের সেভাবে হাত নেই। উচ্চমূল্যে ক্রয় করা তেল আগের দরে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া দেশে এখন ভোজ্য তেলের পর্যাপ্ত মজুদ নেই। রমজানকে সামনে রেখে যখন আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তখন দাম আর আগের পর্যায়ে নেই। ফলে পাইকারিতেই তেলের দাম কিছু বাড়াতে হচ্ছে, যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক পরিচালক ও খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী আলমগীর পারভেজ এ প্রসঙ্গে বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মূল্য আপাতত না বাড়াবার সিদ্ধান্ত হলেও আগের দামে আমরা তেল কিনতে পারছি না। কারণ, মিল মালিকরাই লিটারপ্রতি প্রায় ৮ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। দু’সপ্তাহ আগেও যেখানে প্রতিমণ পাম অয়েল ৫ হাজার টাকায় পাওয়া গেছে, তা এখন বেড়ে ৫ হাজার ১৫০ টাকা। সয়াবিন তেল প্রতিমণ ৫ হাজার ৫শ’ টাকা থেকে বেড়ে এখন ৫ হাজার ৬৫০ টাকা। প্রতিলিটারে দাম বেড়েছে প্রায় ৪ টাকা। এ অবস্থায় খাতুনগঞ্জ থেকেও আগের রেটে তেল বিক্রি করা যাচ্ছে না। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারেও ভোজ্য তেলের দামে উল্লম্ফন ঘটেছে বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতিটন তেলের মূল্য প্রায় ৬০ ডলার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। বাড়তি মূল্যের তেলের সঙ্গে শুল্ককর যুক্ত হওয়ায় দাম আরও বেশি পড়ছে। রমজান এসে পড়ছে কয়েকমাসের মধ্যে। এ সময়ে অন্তত দ্বিগুণ তেলের ব্যবহার। বর্তমানে সেভাবে মজুদ নেই। এমন এক সময়ে দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা বাড়ছে, যখন আন্তর্জাতিক বাজারেও অস্থিরতা। বৃহস্পতিবার খুচরা বাজারে সয়াবিন তেলের মূল্য ছিল প্রতিলিটার ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা। কোন কোন দোকানে এর চেয়েও বেশি মূল্য নেয়া হচ্ছে। দোকানীদের এককথা, তারা বেশিমূল্যে পণ্য কিনছেন। তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বাড়তি দামে। মূল্যের অস্থিরতার কারণে অনেক দোকানদার একসঙ্গে বেশি তেল রাখছেন না। কারণ, প্রতিদিনই তেলের দরে অস্থিরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ অবস্থায় ছোট কারবারিরা তেল মজুদ রাখাকেও ঝুঁকি মনে করছেন।
×