ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

মানবসেবা মানে স্রষ্টারই সেবা

প্রকাশিত: ২০:৩৭, ৫ আগস্ট ২০২১

মানবসেবা মানে স্রষ্টারই সেবা

মানুষ সংঘবদ্ধ জীব। মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি হলো সমাজে কিংবা লোকালয়ে বসবাস করা। গ্রীক দার্শনিক এ্যারিস্টটল বলেন, ‘যে সমাজে বাস করে না সে হয় দেবতা না হয় পশু।’ অর্থাৎ প্রয়োজনের খাতিরে মানুষ সমাজ গড়ে তুলে কেননা একাকী মানুষ বড় অসহায়। পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা, আদান-প্রদান, প্রেম-ভালোবাসা ছাড়া মানুষ সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারে না। স্রষ্টার প্রতিটি সৃষ্টিকে যত্ন এবং সেবা করতে পারলেই স্রষ্টাকে সেবা করা হয়। সৃষ্টির সমস্ত কিছুর মধ্যেই স্রষ্টার উপস্থিতি বিদ্যমান। তোমাকে ভালবাসা যায় না প্রভু যদি মানুষকে আগে ভালবাসতে না পারি। সাধক করি চন্ডিদাস যর্থার্থ বলেছেন, ‘শোন হে মানুষ ভাই সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই।’ ‘সেবা করা দুঃখীজনে, সেবা কর আর্তজনে’। স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন, ‘জীবে প্রেম করে যে জন সে জন সেবিছে ঈশ্বর।’ অসহায় আর্ত পীড়িতের সেবাই পরম ধর্ম। দরিদ্র, নিপীড়িত, অসহায়, বঞ্চিত, ক্ষুধার্ত দুঃখী মানুষের সেবাই এগিয়ে না এলে স্বয়ং ঈশ্বর ভগবান আল্লাহ যে নামেই ভক্ত করে তার আরাধনা তিনি ব্যথিত হন, কষ্ট পান। খ্রীষ্টানুসারীদের যীশু বলেন, আমি সেবা পেতে নয় বরং সেবা করতে-ই এসেছি। ক্ষুধার্ত মানুষের খাদ্য দরকার, তৃষ্ণার্ত মানুষের জল দরকার। রোগাক্রান্ত, অসুস্থ মানুষের দরকার চিকিৎসা সেবা। যারা ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী তারা সুনির্দিষ্ট কোন ধর্মের মানুষের জন্য সেবা করে থাকেন না। অসুস্থ মানুষটা কি খ্রীষ্টান, না মুসলমান সেটা বড় কথা নয়। সেখানে মানব সেবাটাই মুখ্য বা প্রধান বিষয়। আমাদের শরীরে যে পোশাক এটা কে তৈরি করেছে সেটা আমরা জানি না। আমরা যে সমস্ত খাবার খেয়ে বেঁচে আছি সেটা কারা উৎপাদন করে? আমাদের কাছে ভোগ্য পণ্যটিই মুখ্য, উৎপাদক নয়। বর্তমান পৃথিবীতে সেবাকারী মানুষের বড় দরকার। স্বার্থপরতার বেড়াজালে মানুষ নিজেকে নিয়ে বেশি ব্যস্ত। নীরবঘাতক করোনাভাইরাস মানুষের স্বাভাবিক জীবন, পৃথিবীর লাগামহীন উন্নতির উর্ধগতি টেনে ধরে বলছে সৃষ্টিকে ভুলে যেও না, তোমার ভাইকে ভুলে যেও না, মানুষকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করো না। প্রত্যেকজন মানুষের মর্যাদা আছে, সম্লান আছে, অধিকার আছে। মানুষকে ভালবাসতে শিখ, প্রকৃতির যত্ন নাও, প্রকৃতির সমস্ত কিছুর যত্ন কর। ভালবাসার হাত ও সেবার মনোভাব নিয়ে মানুষকে সাহায্য কর। নবাবগঞ্জ, ঢাকা থেকে
×